আল আমিন মুন্সী:>>>
রাজধানী
ঢাকাতে শীর্ষ তালিকাভুক্ত ১৩৮৪ জন মাদক ব্যবসায়ী রয়েছেন। ৫০টি থানা
এলাকায় নিজস্ব জোন ভাগ করে তারা দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছেন।
এসব মাদক ব্যবসায়ীর কাছে টেকনাফ, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার থেকে মাদকের বড় বড়
চালান চলে আসছে।
সড়ক পথের পাশাপাশি নৌপথ দিয়েও রাজধানীর বিভিন্ন মাদক
ব্যবসায়ীদের কাছে মাদক পৌঁছায়। তবে রাজধানীতে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ
থেকে নিয়মিত উৎকোচ নিচ্ছেন কিছু রাজনীতিক নেতা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং
মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এক শ্রেণির কর্মকর্তা।
এ কারণে এসব
ব্যবসায়ী ছিল ধরাছোঁয়ার বাইরে। এসব ব্যবসায়ীর কারণে রাজধানীর অলিগলি,
পাড়া-মহল্লায় অবাধে পাওয়া যাচ্ছে ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক।
আরো জানা যায়।
পল্টন থানার এস আই আশরাফুলের সাথে রাজধানীর শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের
সক্ষ্যতা বেশ হয়েছে, সে ভাল ছেলেদের ধরে এনে গাজা ও ইয়াবা পকেটে দিয়ে মাদক
ব্যবসায়ী বানানোর চেষ্টা করে থাকেন এমনকি সে সম্প্রত্তি এক সাংবাদিকের
ছেলের পকেটে গুলিস্তান এলাকায় ১০ গ্রাম গাজার পুরিয়া দিয়ে ১২ ঘন্টা থানায়
আটকিয়ে রাখেন এবং শারিরীক নির্যাতন করেন, কিন্তু এই থানার ওসি মাহমুদুল হক
এর কারনে সে বারের মত সাংবাদিকের ছেলে বেচে যায়।
এবার আইন- শৃঙ্খলা বাহিনী
১৩৮৪ জনের তালিকা ধরে মাদক নির্মূলে সাঁড়াশি অভিযানে নেমেছে। পুলিশ,
গোয়েন্দা ও মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সমন্বয়ে রাজধানীর মাদক
ব্যবসায়ীদের সর্বশেষ এই তালিকাটি প্রস্তুত করা হয়।
রাজধানীতে অভিযানের আগাম
তথ্য অনেক পুলিশ সদস্য আগে থেকে মাদক ব্যবসায়ীদের জানিয়ে দিয়েছে, শুধু
রাজধানীতে নয়, ঢাকার বাইরেও এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। সম্প্রতি কাওরান বাজারে
অভিযান চলাকালে এক পুলিশ সদস্য ফোন করে মাদক ব্যবসায়ীকে জানিয়ে দেয়।
অভিযানের আগাম তথ্য পাচার হওয়ায় অধিকাংশ মাদক ব্যবসায়ী নিরাপদে পালিয়ে যায়।
রাজনীতিক,
প্রভাবশালী ব্যক্তি ও প্রশাসনের ছত্রছায়ায় থাকায় রাজধানীর মাদক ব্যবসায়ীরা
খুবই ক্ষমতাধর। তাদের সরাসরি নিয়ন্ত্রণে নগরীর ৬ শতাধিক স্পটে মাদক
কেনাবেচা হচ্ছে। এসব স্পটে প্রতিদিন কয়েক কোটি টাকার বাণিজ্য হয়।
জানা
গেছে, রাজধানীর মোহাম্মদপুর, পল্লবী, কালশী, জেনেভা ক্যাম্প, কমলাপুর
রেলস্টেশন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, চাঁনখারপুল, গ্লোরিয়া, টিটিপাড়া, খিলগাঁও,
পুরানা পল্টন, বাড্ডা, ভাটারা, বনানী, গুলশান, মতিঝিল, আরামবাগ,
যাত্রাবাড়ী, দক্ষিণ বনশ্রী, ধানমন্ডি, মিরপুর, তেজগাঁও রেলবস্তি, উত্তরা,
গাবতলী, কাওরানবাজার রেলবস্তি, রূপনগর, শাহআলী, বংশাল, চকবাজারসহ বিভিন্ন
এলাকায় প্রায় ছয় শতাধিক স্পটে প্রকাশ্যে চলে মাদক কেনাবেচা। আর এসব স্পট
নিয়ন্ত্রণ করছেন ১৩৮৪ শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। তাদের অনেকের বিরুদ্ধে
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
রাজধানীর
সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, মেডিক্যাল কলেজসহ অনেক স্কুলে
প্রকাশ্যে চলছে মাদক সেবন। সব পেশার মানুষ এখন মাদকে আসক্ত। বিশেষ করে
মেধাবি ও তরুণরাই মাদকে বেশি আসক্ত হচ্ছে। যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য
বিপর্যয় ডেকে আনবে। তবে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর তথ্য হচ্ছে, জঙ্গিরা এখন মাদক
ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছে। ১৩৮৪ মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যেও জঙ্গি রয়েছে। জঙ্গিদের
অর্থের অন্যতম উৎসব এখন মাদক। ইতিমধ্যে রাজধানীতে মাদকসহ জঙ্গি ধরাও
পড়েছে।
এমন প্রেক্ষিতে সরকারের হাইকমান্ডের নির্দেশে মাদক নির্মূল অভিযানে
নেমেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। রাজধানীর কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী অন্যদিগন্ত'র
সঙ্গে আলাপকালে বলেন, মাদকের টাকা থানার কর্মকর্তা, স্থানীয় রাজনীতক ও মাদক
দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা নিয়মিত পাচ্ছেন।
আইন-শৃঙ্খলা
বাহিনীকে ভাগ না দিয়ে মাদক ব্যবসা করা অসম্ভব। তারা আরো বলেন, রাজধানীর
অনেক পুলিশ সদস্যের বাসা ভাড়ার টাকা মাদক ব্যবসায়ী বহন করেন। শুধু তাই নয়,
পুলিশের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ব্যয়ভার মাদক ব্যবসায়ীরা বহন করেন। তাহলে দোষ
শুধু আমাদের কেন?
ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার
আছাদুজ্জামান মিয়া জানান, রাজধানীতে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে এবং
তালিকা ধরে মাদক নির্মূল অভিযানে নেমেছে পুলিশ। মাদক নির্মূলের ক্ষেত্রে
সর্বস্তরের জনগণের সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর একার
পক্ষে সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সামাজিক আন্দোলন গড়ে
তুলতে হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন
কামাল বলেন, মাদক নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে। তিনি বলেন, ‘আমরা
মাদকের বিষয়ে অলআউট প্রচেষ্টা হাতে নিয়েছি। এই প্রচেষ্টা বাস্তবায়নে
প্রধানমন্ত্রী সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা যেটা মনে করি
এটা করলে ভালো হবে, আমরা সেখানেই যাব।
No comments:
Post a Comment