নিরাপদ সড়ক গড়তে ভ্যান চালক আকিমুলের সচেতনতামূলক সাইনবোর্ড রাস্তায় রাস্তায় - Ekushey Media bangla newspaper

Breaking News

Home Top Ad

এইখানেই আপনার বা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ: 01915-392400

নিউজের উপরে বিজ্ঞাপন

Wednesday 28 August 2019

নিরাপদ সড়ক গড়তে ভ্যান চালক আকিমুলের সচেতনতামূলক সাইনবোর্ড রাস্তায় রাস্তায়


রবিউল ইসলাম, ঝিনাইদহ:>>>
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার কুশনা ইউনিয়নের কুশনা, জালালপুর, তালসার সহ একাধিক রাস্তায় চলার সময় প্রায়ই চোখে পড়ে সচেতনতামূলক সাইনবোর্ডগুলো। “কোথাও লেখা আছে সামনে স্কুল, গতি কমান”  “আবার কোথাও লেখা আছে সামনে বাজার, আস্তে চলুন”। “কোথাও লেখা আছে আপনার শিশুকে স্কুলে পাঠান, বাল্যবিবাহ বন্ধ করুন। “নিরাপদ সড়ক গড়তে সকলেই সচেতন হই”।

আর এই সাইনবোর্ডগুলে দিয়ে যিনি এলাকার মানুষকে সচেতন করে চলেছেন তিনি পেশায় একজন ভ্যানচালক। আকিমুল ইসলাম ওরফে সাজু (৩০) নামের এই ভ্যান চালক দরিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে শুধু বেঁচে আছেন তাই নয়, নিরবে সমাজের কাজ করে চলেছেন। অন্যরা গাছের সঙ্গে পেরেক ঠুকে নিজেদের প্রচারে যখন ব্যস্ত, সাজু তখন গাছের কথা চিন্তা করে বাঁশের খুটি ব্যবহর করছেন।
সমাজ সচেতন এই যুবক আকিমুল ইসলাম ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার তালসার গ্রামের আব্দুল ওয়াদুদ ভুইয়ার পুত্র। আকিমুল জানান, দরিদ্রতার কারনে ছোট বেলায় তার পড়ালেখা হয়নি। অষ্টম শ্রেণীতে পড়াকালে পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে অন্যের দোকানের কর্মচারির কাজে দেওয়া হয়। কালীগঞ্জ শহরের কৌশিক এন্টার প্রাইজে কাজ করতেন। এরপর এক সময় ওই দোকান ছেড়ে বাড়ি ফিরে যান। শুরু করেন ভ্যান চালানো। ১২ বছর তিনি এই ভ্যান চালাচ্ছেন। বর্তমানে তার দিন আয় গড় ৩ শত টাকা। বাবা-মা আর স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে তার সংসার। এই আয়ের পাশাপাশি বাবা ওয়াদুদ ভুইয়ার একটি চায়ের দোকান আছে। এখনও কষ্ট করেই চলে তাদের সংসার। 
আকিমুল ইসলাম জানান, ২০১৩ সালে কোটচাঁদপুর-তালসার সড়কে একটি দূর্ঘটনা ঘটে। তানভির আলম নামের এক ব্যক্তির এক সন্তান মারা যান। শিশুটি তখন স্কুলে যাবার জন্য রাস্তা পার হচ্ছিল। একটি দ্রুতগামি মাইক্রোবাস তাকে চাপা দেয়। এই দেখে তার মনের মধ্যে প্রচন্ড কষ্ট হয়। এটা বুঝতে পারেন যে সচেতনতা না থাকায় এই দূর্ঘটনা ঘটেছে। তখন তিনি ভাবতে থাকেন কিভাবে মানুষকে পথচরায় সচেতন করা যায়। সেই ভাবনা থেকে রাস্তার ধারে সচেতনতামূলক সাইনবোর্ড লেখা শুরু করেন। তিনি জানান, এগুলো প্রেস থেকে ছাপিয়ে এনে নিজেই রাস্তার ধারে গেড়ে দেন। নিজে ভ্যান চালিয়ে যা আয় করেন তার মধ্যে থেকে কিচু পয়সা বাচিয়ে এটা করেন। সংসার খরচ করে যে পয়সা বাঁচাতে পারেন তাই দিয়ে এই সাইনবোর্ড তৈরী করেন। এভাবে পর্যায় ক্রমে এখন পর্যন্ত নিজ ইউনিয়নের তালসার, জালালপুর, কুশনা সড়কে অর্ধশত সাইনবোর্ড দিয়েছেন। আশা আছে তার গোটা উপজেলায় এই সাইনবোর্ড দেওয়ার। এগুলোতে তিনি বাজার, স্কুল, হাসপাতাল থাকলে সড়ক সতর্ক সাইনবোর্ড আর মাঝে মধ্যে সমাজের মানুষকে সচেতন করতে নানা শ্লোগান লিখে রেখেছেন। এ কাজে তার পরিবারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা পেয়েছেন বলে জানান।
আকিমুল ইসলামের বাবা আব্দুল ওয়াদুদ ভুইয়া জানান, তারা দরিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে চলেন। ছেলে ভ্যান চালিয়ে অর্থ উপার্যন করে। তারপরও সে সমাজকে ভালো রাখতে সমাজের মানুষকে সচেতন করতে নানা কাজ করে। এটা তার কাছে ভালোই লাগে। তবে অনেক সময় সংসারের কষ্টের কথা মনে হলে খারাপ লাগে।
এ বিষয়ে কুশনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান জানান, ছেলেটি পেশায় একজন ভ্যান চালক। কিন্তু তার মনটা অনেক বড়। সে নিরবে সমাজের কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আকিমুলের মতো সমাজের অন্যরাও সেবামূলক কাজে এগিয়ে এলে একদিন আমাদের এই সমাজ উন্নত সমাজে পরিনত হবে। 




একুশে মিডিয়া/এমএসএ

No comments:

Post a Comment

নিউজের নীচে। বিজ্ঞাপনের জন্য খালী আছে

Pages