ঝিনাইদহে এলজিইডি অফিসের গাড়িচালক জগলু হত্যার রহস্য উন্মোচন, স্ত্রীর পরকীয় প্রেমের বলি - Ekushey Media bangla newspaper

Breaking News

Home Top Ad

এইখানেই আপনার বা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ: 01915-392400

নিউজের উপরে বিজ্ঞাপন

Monday, 2 September 2019

ঝিনাইদহে এলজিইডি অফিসের গাড়িচালক জগলু হত্যার রহস্য উন্মোচন, স্ত্রীর পরকীয় প্রেমের বলি


একুশে মিডিয়া, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:>>>
ঝিনাইদহের এলজিইডি অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলীর গাড়িচালক এটিএম হাসানুজ্জামান ওরফে জগলু হত্যার রহস্য উন্মোচন হতে চলেছে বলে জানায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
নিহতের স্ত্রী তাহমিনা পারভীন তমা (৩৭) দুই প্রেমিকের সহযোগিতায় স্বামীকে হত্যা করেছে বলে দাবি পিবিআই’র।
শনিবার স্বামী হত্যায় দায়ে স্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে (জগলুর স্ত্রী) দুই পরকীয়া প্রেমিকের সহায়তায় স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারক গৌতম মল্লিকের কাছে ১৬৪ ধারায় আসামি জবান বন্দি দেয়।
নিহত জগলু কুষ্টিয়া সদর উপজেলার জুগিয়া স্কুলপাড়া এলাকার মৃত জহুরুল আলমের ছেলে। গত ২৮ আগস্ট যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কের চুড়ামনকাঠি বারীনগরের মাঝামাঝি এলাকার মাঠে লাশ পাওয়া যায়।
রোববার সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, শনিবার জগলু হত্যা মামলার আসামি তার স্ত্রী তাহমিনা পারভীন তমাকে গ্রেফতার করে । জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যার পরিকল্পনা ও মিশন বাস্তবায়নের কথা স্বীকার করে। দাম্পত্য কলহ ও পরকীয়ার জেরে ধরেই এই হত্যাকান্ড ঘটেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৯ সালে এটিএম হাসানুজ্জামান ওরফে জগলুর সাথে আসামি তাহমিনা পারভীনের বিয়ে হয়। সংসার জীবনে তাদের দুই ছেলে মেয়ে। স্বামী ২০০৮ সালে সাসপেন্ড হলে সংসারে আর্থিক সংকটের জের ধরে  পারিবারিক কলহের সৃষ্টি হয়। তখন থেকে তাদের দাম্পত্য জীবনে বিপর্যয় ঘটে। তাহমিনা ঢাকায় বসবাসকালে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে।  
ইতিমধ্যে গত ২৬ আগস্ট মিরপুর ১৩ নম্বর সেকশনে তাহমিনা পারভীন তার ছেলের বাসায় যায়। ঐ দিন তাহমিনার সাথে তার স্বামীর মোবাইল ফোনে ঝগড়া হয়। হাসানুজ্জামান তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। সন্ধ্যার পর ছেলের বাসার সামনে রাস্তায় নেমে এসে বন্ধু আলামিন ও মুরসালিনকে মোবাইল ফোন করে আসতে বলে। তারা আসার পর ৩ জনে মিলে হাসানুজ্জামান কে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মোতাবেক আলামিন ও মুরসালিন মিরপুরের একটা ওষুধের দোকান থেকে পাতলা কাঁচের বোতলে চেতনানাশক ওষুধ এবং ফাঁস দেয়ার জন্য দড়ি সংগ্রহ করে। এরপর একটা উবারের গাড়িতে ওঠে। গাড়িচালকের বাড়ি খুলনার ডুমুরিয়া এলাকায়। সে তাহমিনা পারভীন ও তার বন্ধুদের পূর্ব পরিচিত। বিভিন্ন সময় তাদের প্রয়োজনে তাকেই ডেকে নেন। এরপর তাহমিনা পারভীন মুরসালিনের মোটর সাইকেলে ও আলামিন উবারের গাড়িতে কেরানীগঞ্জের বাসায় চলে যায় । 
২৭ আগস্ট ভোর আনুমানিক ৫টার দিকে পাটুরিয়া ঘাট পার হয়ে ঝিনাইদহ হয়ে যশোরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাহমিনা সহ তার বন্ধুরা যশোরে পৌঁছান। ১২টার দিকে গাড়ি নিয়ে যশোর ‘জাবির ইন্টারন্যাশনাল’ হোটেলে যান। তাহমিনা পারভীন আলামিন ও মুরসালিনের পরিচিত যশোরের একজন কেও হোটেলে দেখতে পায় । তারা সবাই লিফ্টে দোতলার রেস্টুরেন্টে যায় । সেখানে তাহমিনা পারভীন ওয়াশরুমে ফ্রেশ হয় । রেস্টুরেন্টে খাওয়া-দাওয়া শেষে স্থানীয় এক ব্যক্তির বাসায় গিয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম করে। এরপর তারা গাড়ি নিয়ে উবারের গাড়ির ড্রাইভারের বাড়িতে যায়। এসময় স্বামী জগলু তাহমিনা পারভীনকে ফোন দিলে সে তাকে বলে থ্রি-পিচ ও কসমেটিকস মালামাল কেনার জন্য যশোর এসেছি। তখন স্বামী জগলু স্ত্রীর কাছে ৫০ হাজার টাকা চায়, তাহমিনা ২০ হাজার টাকা দেয়ার কথা বলে। এসময় স্ত্রীর প্রশ্নের জবাবে জগলু ঝিনাইদহ শামীমা ক্লিনিকের সামনে টাকা নেয়ার কথা জানায় । তাহমিনা ও তার বন্ধুরা যশোরে ঘোরাফেরা করে সময় কাটায় ।
সন্ধ্যার পর ঝিনাইদহের উদ্দেশ্যে গাড়ি নিয়ে রওনা হয়। রাত ১০টার দিকে শামীমা ক্লিনিকের সামনে পৌঁছে তাহমিনা তার স্বামীকে গাড়িতে উঠিয়ে নয়। জগলু পিছনের ছিটের মাঝখানে, তাহমিনা স্বামীর বামে এবং আলামিন ডানে বসে। মুরসালিন গাড়ির সামনের ছিটে বসে। ঝিনাইদহ শহর পার হয়ে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তাহমিনা পারভীন ও আলামিন দুইদিক থেকে ভিকটিমের দুই হাত ধরে। আলামিন তুলা ভিজিয়ে চেতনানাশক ওষুধ জগলুর নাকে চেপে ধরলে সে অচেতন হয়ে যায় । তখন আলামিন, মুরসালিন ও তাহমিনা পারভীন রশি দিয়ে জগলুর গলা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে গাড়ির মধ্যেই হত্যা করে। এই সময়ে ড্রাইভার গাড়ি যশোরের দিকে চালাতে থাকে।
প্রায় ৪০ মিনিট পথ যাওয়ার পর একটা ফাঁকা জায়গায় রাস্তার ডানদিকে গাড়ি থামিয়ে আলামিন ও মুরসালিন জগলুর মৃতদেহ গাড়ি থেকে টেনে নামিয়ে রাস্তার ডানপাশে ঢালে ফেলে দেন। তখন মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য আলামিন ও মুরসালিন ভিকটিমের গলায় ছুরি দিয়ে জবাই করে। তাহমিনা পারভীন গাড়িতে বসেছিল। এরপর আলামিন ও মুরসালিন তাড়াহুড়া করে গাড়িতে উঠে এবং ঢাকার দিকে রওনা দেয় ।
ঢাকা যাওয়ার পথে মুন্সিগঞ্জে মুরসালিনের খালার বাসায় উঠে। সেখানে ড্রাইভার, আলামিন ও মুরসালিন গাড়ি ধুয়ে ফেলে। তাহমিনা পারভীনের পরনে থাকা পোশাক ওই বাসায় খুলে অন্য কাপড় পরে সকলে ঢাকা চলে যায় ।
 
 
                                                                                                                                                                                                                        একুশে মিডিয়া/এমএসএ                                                       

No comments:

Post a Comment

নিউজের নীচে। বিজ্ঞাপনের জন্য খালী আছে

Pages