একুশে মিডিয়া, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :>>>
বয়স
যখন পাঁচ তখন বাবা মাকে হারিয়েছেন। এর পর ভাই-বোন আত্বীয় স্বজনদের কাছে বড়
হয়েছে। কিন্তু তাদের অবস্থাও স্বচ্ছল না হওয়ায় খুব অল্প বয়সেই একমাত্র
বোনকে নিয়ে ধরতে হয়েছে সংসারের হাল।
ঝিনাইদহের
কোটচাঁদপুর উপজেলার ধোপাবিলা গ্রামের মৃত মসলেম মিয়ার ছেলে, রেজাউল ইসলাম
(৩৪)। পেশায় দিন মজুর। একমাত্র ছোট বোনকে বিয়ে দিয়ে নিজে বিয়ে করে সংসার
শুরু করেন। বর্তমানে তার স্ত্রীর ও এক ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে সুখেই চলছিলো
সংসার। কিন্তু হঠাৎ করে জুলাই মাসে বুকে তীব্র ব্যাথা অনুভব করেন তিনি। এর
পর গ্রামের কবিরাজ দিয়ে ঝাড়ফুক করিয়েও কোনো কাজ না হলে, ঝিনাইদহ ক্রিসেন্ট
ডায়াগনস্টিক সেন্টারে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারকে দেখালে বেশিকিছু টেষ্ট
দেয়। এর পর সেখান থেকে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে সেখানেও অনেক
গুলো টেষ্ট করিয়েও ডাক্তার কোনো রোগ ধরতে পারেন নি।
পরবর্তীতে
রেজাউল ইসলাম ঢাকা সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে দেখালে ডাক্তার রিপোর্ট দেখে
শণাক্ত করেন হার্টে দুইটি ব্লক আছে তার। দ্রুত অপারেশন করে রিং পরাতে হবে।
আর এ অপারেশন করতে প্রয়োজন দুই লক্ষ টাকা। যা দিনমজুর রেজাউল ইসলামের পক্ষে
যোগাড় করা কষ্টসাধ্য।
প্রতিবেশী
মসলেম মিয়া জানান, সারাজীবন মানুষের ক্ষেতে কাজ করেছেন রেজাউল। জীবনের মাঝ
পর্যায়ে এসে এমন অসঙ্গতি সত্যিই মর্মান্তিক। তাছাড়া রেজাউলের ছেলে মেয়ে
সবাই এখনো শিশু।
রেজাউল ইসলামের খালাতো বোন রেহেনা
পারভিন বলেন, তিন বছর বয়সে রেজাউল মাকে হারায় । তার দুই বছরের মাথায় বাবাও
মারা যায়। এরপর আত্বীয় স্বজনদের কাছে বড় হয়েছে। তিনি জীবনভর অনেক সংগ্রাম
করেছেন। তার ভেতরের কষ্টের কাহিনী কেউ জানে না। আর এসব বলাও যায় না। তার
চিকিৎসার জন্য সমাজের হৃদয়বান মানুষগুলোর সহযোগিতা চাচ্ছি। যন্ত্রণা দেখে
নিজেও কেঁদেছি। আর পারছি না তার যন্ত্রণা দেখতে।
রেজাউল
ইসলাম কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমাকে বাঁচান ভাই আমার কেই নেই ভাই। ডাক্তার
বলেছে আমার হার্টে দুইটা ব্লক আছে দ্রুত অপারেশন করতে হবে। একদিন কাজ না
করলে পরিবারের খাবার জোটে না। সেখানে দুই লাখ টাক চিকিৎসার জন্য ব্যয় করা
আমার পক্ষে অসম্ভব। তিনি নিজের চিকিৎসার জন্য সবার কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন।
তিনি বলেন, কত মানুষ আছেন যাদের কাছে দুই লাখ টাকা কিছুই না। কিন্তু
আমাদের কাছে তো কোটি টাকার সমান। সবাই যদি একটু এগিয়ে আসে তা হলে আমি
সুস্থ হয়ে সন্তানদের নিয়ে বাঁচতে পারব।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment