ভুতের ভয়: এম ডি হাফিজুর রহমান - একুশে মিডিয়া একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ গণমাধ্যম হিসেবে সংবাদ পরিবেশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা

Breaking News

Home Top Ad

এইখানেই আপনার বা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ: 01915-392400

নিউজের উপরে বিজ্ঞাপন

Sunday, 22 September 2019

ভুতের ভয়: এম ডি হাফিজুর রহমান


একুশে মিডিয়া, মুক্তমত রিপোর্ট:>>>>
লেখক:- সাংবাদিক এম ডি হাফিজুর রহমান:
 ২০১৬ সালের জুলাই মাস। তারিখ টা ঠিক মনে নেই। তবে হ্যাঁ দিনটা ছিল বুধবার। আমরা চার বন্ধু মিলে সন্ধার পরে আড্ডা বসাতাম কোনো এক নিরিবিলি জায়গায়। ঠিক বন্ধু বলা চলেনা। কারন তারা ছিল আমার অনেক সিনিয়র তবে বন্ধুর মতোই মিশতাম। তারা হল: লিটন, কিরণ ও বিপুল কুমার এবং আমি হাফিজুর। তো কোনো এক সন্ধায় আমরা আড্ডা দিচ্ছিলাম। এমন সময় আমার ফোনটা কেঁপে উঠল পকেট থেকে ফোনটা বের করে রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে বলে উঠলো, দোস্ত কোথায় তুই..?? শুক্রবার বিকেলে কিন্তু খেলা আছে।
আমি বললাম, কিসের খেলা দোস্ত..??
তখন ফোনের ওইপাশ থেকে বলল ফুটবল খেলা।
খেলাটা ছিল বিবাহিত ও অবিবাহিত দুই দলের মধ্যে। আর হ্যাঁ, ফোনটা ছিল নাইম হাসানের। দুদিন পরেই খেলা তো আমরা রীতিমতো খেলার প্রস্তুতি নেই। আমরা ছিলাম অবিবাহিত দলের।
খেলার দিন অর্থাৎ শুক্রবার বিকাল ৩টার দিকে লিটল, কিরণ ও বিপুল সহ বেশ কয়েক ছোট ভাই ভাতিজাদের ডেকে নিয়ে খেলার মাঠে চলে যাই। মাঠে গিয়ে দেখি সবাই উপস্থিত। বিকেল ৪ঘটিকার সময় খেলা শুরু হল। কোন দলই কম না। বাঘে সিংহে লড়াই এর মতো। প্রথম অর্ধের খেলায় আমরা দুই-এক গলে পরাজিত হলেও দ্বিতীয় অর্ধের খেলায় আমরা দুই-চার গোলে বিজয়ী হই।
খেলা শেষ হতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। 
খেলা শেষে সবাই যখন বাড়ি চলে গেছে। সেখানে কেবল আমরা চার বন্ধুই বাড়ি না গিয়ে পুকুর পাড়ে বসে আড্ডায় মেতেছি। আর আমাদের আড্ডায় স্থান পায় স্কুল কলেজের বিভিন্ন মজার ঘটনা। যাহোক আড্ডার এক পর্যায় এশার আযান অতিবাহিত হয়ে যায়। যেহেতু আমরা আমাদের গ্রাম থেকে অনেকটা দূরে আড্ডা পেতেছিলাম। সেহেতু আমরা আড্ডা শেষ করে বাড়ির পথে রওনা হই।
আমাদের বাড়ি ফেরার পথমধ্য একটা ইউক্যালিপটাস গাছের বাগান পরে। আমরা যখন বাগান পার হচ্ছি ঠিক তখন বাগানের বেশ কয়েকটা গাছ ঝাপটা ঝাপটি করছিলো। কিন্তু আমরা তাতে কোন কর্ণপাত না করে বাগান পার হয়ে যাই। আমরা যখনি বাগান পার হয়েছি।
ঠিক তখনি লিটন বলে ওঠে...
লিটন: আরে দারা কেউ আমাকে ঢিল মারছে। একটু রাগ হয়ে বলল, ঢিল মাড়লো কে রে..??
আমি একটু মজা করেই বললাম ভূত ঢিল মাড়ছে তোকে।
লিটন: আরে সত্যি, কে যেন ঢিল মাড়ছে।
আমি পিছনে তাকাতেই অস্পষ্ট আলোতে দেখতে পাই কোনো কিছু বাচ্চা ছেলের মতো হামাঘুরী দিয়ে আমাদের দিক এগিয়ে আসছে।
আমি একটু ভয় পেয়ে বলি, ঐ দেখ পিছনে কি..?? ভুত! ভুত!!
কিরণ : হাফিজ পিছনে দেখিস না। সামনের দিকে তাকিয়ে চল। পিছনে যা হচ্ছে হোক। পিছনে তাকালে সমস্যা হতে পারে।  
আমি বললাম, দৌড় দিবো নাকি??
কিরণ : আরে না। দৌড় দেয়া যাবে না। স্বাভাবিক ভাবেই চল।
এমন সময় পিছন থেকে অট্ট হাসি ও ঢিল ছুটে আসতে থাকে আমাদের দিকে। আমি এবার সত্যি খুব ভয় পেয়ে সবার আগেই বাড়ির দিকে দৌড় দেই। আমার দৌড়ানো দেখে বাকী তিন জনও আমার পিছে দৌড়ানো শুরু করে। বিপুল একটু স্বাস্থ্যবান হওয়ায় বেশি দৌড়াতে পারে না। তাই বিপুল সবার পিছনে পরে যায়। আমি সবার আগে দৌড়াচ্ছি।
হঠাৎ বিপুলের চিৎকার...
বিপুল: আমাকে ছেড়ে দিন, আমাকে ছেড়ে দিন। ভাই আমাকে নিয়ে যা, ভাই আমাকে নিয়ে যা।
বন্ধু বলে কথা বিপদে ফেলে তো আর পালাতে পারিনা। আমরা সবাই সাহস করে বিপুল কে আনতে গিয়ে দেখি বিপুলের লুঙ্গী একটা খুঁটির সাথে আটকে গেছে। আর তাতেই বিপুল ভয়ে এমন চিৎকার করছে।
যাহোক আমাদের মাঝে ভয় না কাটায় আমরা তাড়াহুড়া করে বিপুলকে ছাড়িয়ে নিয়ে দৌড়িয়ে যে যার বাড়ি চলে আসি।
আমরা বাড়িতে এই বিষয়ে কোনো কথা বলি না। কারন এমনিতেই আমাদের আড্ডা দেয়া পছন্দ ছিলনা কারও। যদিও এই ভয়ের কথা বলি তো বাড়ি থেকে আরও অনেক কথা শুনাবে। অতএব চুপচাপ থাকাই ভালো। পর দিন সকালে দেখি বিপুলের হাল্কা জ্বর হয়েছে। কারন ওর লুঙ্গি খুঁটিতে আটকে যাওয়ায় সে একটু বেশিই ভয় পেয়েছিল।
তাছাড়া আমরা পল্লী এলাকার মানুষ বিভিন্ন জনের মুখে ভৌতিক গল্প শুনে শুনে ভুত সম্পর্কে আমাদের একটা বিশ্বাস তৈরি হয়েছে।
কিন্তু দু'দিন পরে যা শুনলাম, তার পরে তো লজ্জায় মুখ দেখাতেই পারছিলাম না। জানতে পারলাম যে, আমাদের সাথে যে সকল ছোট ভাই, ভাতিজা খেলার জন্য গিয়েছিল। কিন্তু মানুষ বেশি হওয়ায় তারা আর খেলতে পারে নাই। তাতে তারা আমাদের উপর রাগ করে। কারন তাদের ডেকে নিয়ে গিয়ে খেলাতে পারি নাই। আর তার প্রতিশোধ হিসেবে আমাদের ভয় দেখানোর পরিকল্পনা করে। ওরা জানতো যে, আমরা আড্ডা শেষ করে ওই বাগানের পথ ধরেই বাড়ি ফিরবো। তাই তারা যে যার মতো বাগানের গাছে ও গাছে আড়ালে লুকিয়ে ছিল আমাদের ভয় দেখানোর জন্য। শেষ পর্যন্ত ভয় দেখায়। এবং আমরা তাতে ভয়ও পাই প্রচুর। আজও মাঝে মাঝে ঘটনা টা মনে করে হাসি। কি ভয় টাই না দেখাইছিল। ছোটরা যে এমন কাজ করতে পারে তা আমাদের কল্পনার বাইরে ছিল।

লেখকঃ- 
সাংবাদিক 
এম ডি হাফিজুর রহমান।
মোবাইলঃ ০১৭৯৩৯৬৩৩০২।
উল্লাপাড়া, সিরাজগঞ্জ। 
বি: দ্র: এটা কোনো কাল্পনিক ঘটনা না। লেখকের বাস্তব জীবনে ঘটে যাওয়া একটা ঘটনা। গল্পের সমস্ত চরিত্র, কাহিনী বাস্তব জীবন থেকে নেয়া।
 
 
 
 
 
একুশে মিডিয়া/এমএসএ

No comments:

Post a Comment

নিউজের নীচে। বিজ্ঞাপনের জন্য খালী আছে

Pages