একুশে মিডিয়া, রাবি প্রতিনিধি:>>>
সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) নিহত শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকা-ের ঘটনায় আবাসিক হলে ‘টর্চার সেলে’র বিষয়টি উঠে আসে গণমাধ্যমে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৯ অক্টোবর (বুধবার) এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আবাসিক হলগুলোতে তল্লাশির নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মোতাবেক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হলগুলোতে চালানো হবে তল্লাশি। হলে থাকা অনাবাসিক শিক্ষার্থী ও বহিরাগতদের বের করে দেয়া হবে। অস্ত্রসহ নাশকতা সৃষ্টির সরঞ্জামাদি থাকলে তা উদ্ধার করা হবে। এছাড়া ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হলগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে সিসি ক্যামেরা লাগানো হবে। গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের সভাপতিত্বে হল প্রাধ্যক্ষদের সঙ্গে আলোচনা শেষে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
জানতে চাইলে হল প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক আবু শামস মো. রেজাউল হাসান করিম বকসী বলেন, বুয়েটে আবরার হত্যাকান্ডের ঘটনার পর আমাদের হলগুলোতে যেন এমন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, এজন্য নিরাপত্তা বিষয়ে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নেতৃত্বে হল প্রাধ্যক্ষরা এসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে। হলগুলোতে তল্লাশি অভিযানের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশনা দিয়েছেন তা কার্যকর করা হবে। হলগুলোতে সন্দেহজনক কোন কার্যক্রমের তথ্য পেলে পুলিশ যে কোন হলে তল্লাশি অভিযান চালাবে। এক্ষেত্রে হল প্রশাসন পুলিশকে সার্বিক সহযোগিতা করবে। বৈধ শিক্ষার্থীদের অবস্থান ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে যা যা করা দরকার তাই করা হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আবাসিক হলগুলো পুরোপুরি ছাত্রলীগের দখলে। হলে সিট পাওয়ার একমাত্র অবলম্বন এখন তারাই। প্রতিটি হলে প্রাধ্যক্ষ থাকলেও, তারাও এক ধরণের জিম্মি হয়ে পড়েছে ছাত্রলীগের কাছে। ফলে হলগুলোতে দেখা দিয়েছে বিশৃঙ্খলা। নিরাপত্তা সংকটে রয়েছে হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। হলে অনাবাসিক শিক্ষার্থী, বহিরাগতরা অবস্থান করছে।
সৈয়দ আমীর আলী হলের প্রাধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম বলেন, হলগুলোতে তল্লাশির বিষয়ে যেহেতু প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন সেহেতু আমরা এ বিষয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করব। হলে কখন, কিভাবে তল্লাশি হবে এটা অত্যান্ত গোপনীয় বিষয়। তবে কোন ধরনের নাশকতার আভাস পেলে আমরা তাৎক্ষণিক প্রক্টরকে অবহিত করে অভিযান পরিচালনা করব।
শাহ মখদুম হলের প্রাধ্যক্ষ আরিফুর রহমান বলেন, আমাদের প্রাধ্যক্ষ পরিষদের যে সভা অনুষ্ঠিত সেখানে আমরা হলের প্রাধ্যক্ষরা উপস্থিত ছিলাম। সেখানের সিদ্বান্ত মতো প্রয়োজনে যে কোন সময় চালানো হবে তল্লাশি।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘হলগুলোতে প্রায় সময় অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা অবৈধভাবে সিট দখল করে থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন সময় হলে নাশকতা সৃষ্টিকারী সাংগঠনিক বই, অস্ত্র, ককটেলসহ দেশি অস্ত্র গুদাম করে রাখা হয়। পরবর্তীতে এসব দিয়ে তারা খুব সহজেই নাশকতা সৃষ্টি করে। হল থেকে যদি এ ধরনের সমস্যাগুলো দুর করতে পারি তাহলে হলগুলোতে শিক্ষার্থীরা নির্ভয়ে থাকতে পারবে। হলে অভিযান চালানোর বিষয়ে তিনি বলেন, শীঘ্রই হলের প্রাধ্যক্ষের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে সেই হলে অভিযান চালানো হবে।
No comments:
Post a Comment