একুশে মিডিয়া, রাবি প্রতিনিধি:>>>
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ছিনতাইয়ের সময় ব্যর্থ হয়ে এক শিক্ষার্থীর মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। হামলার ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করেছে শিক্ষার্থীরা।
Add caption |
শনিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে মানববন্ধন করে শিক্ষার্থীরা। পরে মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা।
প্রায় দুই ঘণ্টা অবরোধ শেষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিরাপত্তার আশ্বাসে ¯œাতক ভর্তির পরীক্ষার জন্য আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করে শিক্ষার্থীরা। তবে অগ্রগতি না হলে বৃহস্পতিবার থেকে আবার আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা।
হামলার শিকার শিক্ষার্থীর নাম ফিরোজ আনাম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। গত শুক্রবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হল সংলগ্ন মাঠে হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর রাত ১১টায় ভুক্তভোগী নিজে বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে নগরীর মতিহার থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর করা হত্যাচেষ্টা মামলায় তিন জনকে গ্রেফতার করেছে মতিহার থানা পুলিশ। গ্রেফাতারকৃতরা হলেন, নগরীর তালাইমারী এলাকার জাহিদ আলীর ছেলে রুবেল হোসেন, শিরোইল এলাকার বাকির হোসেনের ছেলে রিফাত হোসেন রাকেশ এবং মির্জাপুর এলাকার খোরশেদ আলীর ছেলে পারভেজ। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মতিহার থানার কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান।
এদিকে, গতকাল শনিবার বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে মানববন্ধন করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এরপর বেলা সাড়ে ১২টায় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনের সামনে মানববন্ধন করে ভুক্তভোগীর নিজ এলাকার শিক্ষার্থীদের সংগঠন বদরগঞ্জ উপজেলা ছাত্র সমিতি।
এর আগে, ঘটনায় জড়িতদের আটকের দাবিতে গত শুক্রবার রাত পৌনে ১০টা থেকে পৌনে চারটা পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ চালিয়ে যায়। এসময় আন্দোলকারীদের একজনকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়ে যায় বলে দাবি করা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নিশ্চিত করেন, তুলে নিয়ে যাওয়া শিক্ষার্থী ফিরে এসেছে। একইসঙ্গে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সব ধরণের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
এসময় বিক্ষোভকারীরা চার দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাদী হয়ে মামলা করবে, ১২ ঘন্টার মধ্যে আসামি ধরতে হবে, ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে।
এ বিষয়ে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান জানান, ঘটনার পরে ভুক্তভোগী নিজে বাদী হয়ে হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। এরপর অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো আমরা দেখছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাশনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
হামলার শিকার ফিরোজ তার বান্ধবিকে হলে এগিয়ে দিতে যাচ্ছিল। এমন সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের হবিবুর রহমান হলের সামনের রাস্তায় মোটরসাইকেলে করে কয়েকজন যুবক এসে তাদের মাঠে নিয়ে যায়। তাদের কাছ থেকে মোবাইল বা টাকা পয়সা দাবি করে।
ফিরোজ মোবাইল দিতে অস্বীকৃতি জানালে ছিনতাইকারীরা তাকে হাতুড়ি জাতীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। চিৎকার করলে মোবাইল ফেলে রেখে হামলাকারীরা চলে যায়। ফিরোজকে গুরুতর আহত অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা। এখন তিনি আশঙ্কামুক্ত বলে জানা গেছে।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment