এম এ হাসান, কুমিল্লা:>>>
একটি ফুটফুটে পুত্র সন্তানকে নশ্বর এই পৃথিবী দেখতে দিয়ে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলেন ডিগ্রি ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী মা ফাহমিদা আক্তার শিখা(২২)মৃত্যুর কোন বয়স নাই। সবাইকে মৃত্যু বরণ করতে হবে এটা ধ্রুব সত্য। কিন্তু কিছু মৃত্যু খুবই বেদনার যা হৃদয়কে ক্ষতবিক্ষত করে। এমনি একটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে।
হতভাগা সেই মা উপজেলার ঢালুয়া ইউনিয়নের চান্দাইস গ্রামের আমীর হোসেনের ছেলে এবং একই এলাকার মিয়াবাজারের স’মিল ব্যবসায়ী মামুনুর রশিদের স্ত্রী ফাহমিদা আক্তার শিখা (২২)।
শিখা একই গ্রামের বেলায়েত হোসেনের মেয়ে।২০১৮ সালের অক্টোবর মাসের ১৮ তারিখে পারিবারিক ভাবে শিখা-মামুনের বিবাহ হয়। সুখি সংসার মামুন দম্পতির। এর মাঝে সন্তান সম্ভবা হন শিখা। অনাগত সন্তান নিয়ে মা-বাবার ছিলো নানান স্বপ্ন। সন্তানকে মানুষের মত মানুষ করার শপথও নিয়েছিলেন ওই দম্পতি। কিন্তু বিধিরবাম বুধবার ভোররাতে বিবাহিত জীবনের ১২ মাস ১২দিন পর শিখা ফুটফুটে একটি পুত্র সন্তান জন্ম দিয়ে চলে যান না ফেরার দেশে।
শিখা ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনে নাঙ্গলকোট কামিল মাদ্রাসা থেকে ডিগ্রি তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষার্থী। তার আর একটি মাত্র বিষয়ে পরীক্ষার বাকী ছিল, নভেম্বরের ১৪ তারিখে ওই বিষয়টির পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করার কথা ছিলো তার।মৃত শিখার স্বামী মামুনুর রশিদ জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টায় নরমাল ডেলিভারিতে আমাদের পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহণ করে।
কিন্তু ডেলিভারীর দুই ঘন্টা পর আমার স্ত্রী অস্বস্তি বোধ করায় আমরা প্রথমে পাশ্ববর্তী লাকসাম পৌর সদরের মমতাময়ী হাসপাতালে নিয়ে যাই তারা সন্তান সম্ভবা মনে করে হাসপাতালে উঠালেও সন্তান ডেলিভারী হয়ে গেছে জেনে আর ভর্তি নিতে রাজী হয়নি। পরে আমরা ওই হাসপাতালের পাশে আমেনা হাসপাতালে নিয়ে যাই সেখানে একজন নার্স বাহিরে এসে দেখে গিয়ে দরজাও খুলতে রাজী হয়নি। সব শেষে বাইপাস এলাকার ডায়াগনস্টিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিখাকে মৃত ঘোষনা করে।
মামুন আক্ষেপ করে বলেন প্রথম নিয়ে যাওয়া দু’টি হাসপাতাল তাড়িয়ে না দিয়ে যদি আমার স্ত্রীর চিকিৎসা করতো তাহলে আমার সন্তানটি মাতৃহারা হতো না। আমি চাই প্রত্যেকটি হাসপাতালে রাতের বেলায় প্রসূতিদের চিকৎসার জন্য একজন করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থাকা সরকারের পক্ষ থেকে বাধ্যতামূলক করা হোক।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment