শীর্ষ ৮০ ঋণখেলাপির কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে সরকারি খাতের চারটি বাণিজ্যিক ব্যাংক - Ekushey Media bangla newspaper

Breaking News

Home Top Ad

এইখানেই আপনার বা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ: 01915-392400

নিউজের উপরে বিজ্ঞাপন

Thursday 14 November 2019

শীর্ষ ৮০ ঋণখেলাপির কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে সরকারি খাতের চারটি বাণিজ্যিক ব্যাংক


একুশে মিডিয়া, রিপোর্ট:>>>
শীর্ষ ৮০ ঋণখেলাপির কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে সরকারি খাতের চারটি বাণিজ্যিক ব্যাংক। তাদের কাছ থেকে ঋণের টাকা আদায় করতে পারছে না ব্যাংকগুলো। বড় খেলাপিরা টাকা ফেরত না দেয়ায় খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে।=
এতে সরকারি ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থা আরও নাজুক হয়ে পড়ছে। ব্যাংকগুলো হচ্ছে- সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক।=
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সরকারি চার ব্যাংকের একটি পর্যালোচনা বৈঠকে এমন তথ্য উঠে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সভাপত্বিতে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকের এমডি, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকারি ব্যাংকগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।=
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংকিং খাতের রাঘববোয়ালদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে সরকারি ব্যাংকগুলো। ইতিমধ্যেই খাতটিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে এ চক্র। চক্রটির ব্যাপারে এখনই সতর্ক না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।=
বৈঠকে পৃথকভাবে সরকারি চারটি ব্যাংকের শীর্ষ ২০ খেলাপির কাছ থেকে ঋণ আদায় নিয়ে বিশেষ আলোচনা হয়েছে। অর্থাৎ মোট ৮০ শীর্ষ খেলাপির কাছ থেকে ঋণ আদায়ের বিষয়টি বৈঠকে প্রাধান্য পায়।=
বৈঠকে উপস্থাপিত তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, চারটি ব্যাংকই তাদের শীর্ষ ২০ ঋণখেলাপির কাছ থেকে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়েছে।=
চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোনো ব্যাংকই ঋণের টাকা আদায়ে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি। সব ব্যাংকই নামমাত্র টাকা আদায় করেছে।=
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শীর্ষ ২০ ঋণখেলাপি থেকে ৬০০ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল সোনালী ব্যাংকের। নির্ধারিত সময় শেষে তারা মাত্র ২৯ কোটি টাকা আদায় করেতে পেরেছে।=
এর মধ্যে জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত মাত্র ১১ কোটি টাকা এবং জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৮ কোটি টাকা আদায় করেছে। একই সময়ে জনতা ব্যাংকের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা।=
আদায় করেছে মাত্র ৬৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাসে ১১ কোটি টাকা এবং জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে ৫৬ কোটি টাকা আদায় করেছে।=
একই সময়ে মাত্র ৮ কোটি ৩০ লাখ টাকা আদায় করেছে অগ্রণী ব্যাংক। এর মধ্যে জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে ৪ কোটি এবং জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা আদায় হয়েছে।=
আলোচ্য নয় মাসে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪০০ কোটি টাকা। এছাড়া একই সময়ে রূপালী ব্যাংকের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০০ কোটি টাকা। সেখানে আদায় হয়েছে ৮৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।=
এর মধ্যে জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে মাত্র ৮৬ লাখ টাকা এবং জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে ৮৯ কোটি টাকা আদায় হয়েছে।=
বৈঠকে শীর্ষ খেলাপিদের কাছ থেকে ঋণ আদায়ে ব্যর্থতার জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কর্মকর্তাদের কাছে কারণ জানতে চাওয়া হয়। জবাবে তারা বলেছেন, সহজ শর্তে খেলাপি ঋণ নবায়ন করা ও মামলার কারণে ঋণ আদায় হচ্ছে না।=
এছাড়া কিছু বড় গ্রাহক ঋণ পরিশোধ করছেন না। তবে অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর সময়ে খেলাপি ঋণ আদায় বাড়বে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকগুলোর নির্বাহীরা।=
বৈঠকে শীর্ষ ২০ খেলাপির কাছ থেকে ঋণ আদায় বাড়ানোর জন্য ব্যাংকগুলোর প্রতি নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ঋণ আদায়ে ব্যর্থ হলে জবাবদিহি করতে হবে বলে হুশিয়ার করে দেয়া হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে।=
খেলাপি ঋণ বাড়ার কারণে ব্যাংকগুলোর আয় কমে গেছে। এতে শত চেষ্টার পরও একমাত্র সোনালী ব্যাংক ছাড়া অন্য কোনো ব্যাংক লোকসানি শাখা কমাতে পারেনি।=
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সাল শেষে সোনালী ব্যাংকের লোকসানি শাখার ছিল ৯৩টি। এ বছরের জুন শেষে এর সংখ্যা কমে ৬১টি হয়েছে। বাকি তিনটি ব্যাংকের মধ্যে কোনো ব্যাংকই লোকসানি শাখা কমাতে পারেনি। বরং বেড়েছে।=
এর মধ্যে জনতা ব্যাংকের লোকসানি শাখা ৫৬ থেকে বেড়ে ৫৯টি, অগ্রণী ব্যাংকের ২১ থেকে বেড়ে ৪৬টি এবং রূপালী ব্যাংকের লোকসানি শাখার সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ৮টি থেকে ১৬টি হয়েছে।=
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের শুরুতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংকের বিভিন্ন আর্থিক সূচক নিয়ে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়। চুক্তি অনুযায়ী ব্যাংকগুলোর জন্য চলতি বছরে বেশ কয়েকটি খাতে লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেয়া হয়।=
এর মধ্যে রয়েছে শীর্ষ ২০ খেলাপির কাছ থেকে নগদ আদায় বাড়ানো, অবলোপন করা ঋণ থেকে নগদ টাকা আদায়, কৃষি ও এসএমই ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, পরিচালন মুনাফা বাড়ানো, লোকসানি শাখার সংখ্যা কমানো, রিট মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি, অর্থঋণ ও অন্যান্য আদালতে ঝুলে থাকা মামলার নিষ্পত্তি, শাখাগুলোকে অনলাইনের আওতায় আনাসহ বিভিন্ন আর্থিক সূচকের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়া হয়।=
সূত্র জানায়, এর মধ্যে ঋণ আদায়ে ব্যাংকগুলো চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। একই সঙ্গে কৃষি খাতে ঋণ বিতরণও লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বাড়াতে পারেনি।=



একুশে মিডিয়া/এমএসএ=

No comments:

Post a Comment

নিউজের নীচে। বিজ্ঞাপনের জন্য খালী আছে

Pages