একুশে মিডিয়া, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:>>>
১৯৭১সালে মরণপন যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে এরকম অনেক দেশপ্রেমিকের মধ্যে ছিফাত আলীও একজন। ছিফাত আলী মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেলেও নানা টাল বাহানায় ভাতা পাচ্ছেন না বলে জানা যায়। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়া রণাঙ্গনের বীরযোদ্ধা সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট
ইউনিয়নের ভূলাখালী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিফাত আলী এখন জীবন যুদ্ধে পরাজিত হতে বসেছেন। দীর্ঘদিন ধরে উন্নতমানের চিকিৎসার অভাবে ধুঁকে ধুঁকে দিন কাটছে এ বীর মুক্তিযোদ্ধার। তার দিন কাটে বাসায় শুয়ে বসে। তার দুই চোখ বেঁয়ে অঝরে ঝরছে পানি, তাকিয়ে আছেন শেষ নিয়তির দিকে। যে হাতে অস্ত্র তুলে নিয়ে দেশকে স্বাধীন করতে মাইলের পর মাইল হেঁটে জীবন বাজি রেখে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন শত্রুর ওপর। আজ সেই মুক্তিযোদ্ধা ছিফাত আলী চিকিৎসার অভাবে ধুঁকে ধুঁকে মরতে বসেছেন।
কখন যে নিভে যায় দীপশিখা। দীর্ঘ কর্ম জীবনে মানুষটি কাজ করেছেন বিভিন্ন জায়গায়। চাননি তেমন কিছুই। সবার কাছ থেকে পেয়েছেন সম্মান-শ্রদ্ধা। তাতেই তুষ্ট ছিলেন তিনি। কখনো অসহায় বোধ না করা এই মানুষটি জীবনের শেষ প্রান্তে এসে আজ বড়ই অসহায়। নানা রোগভোগে তাঁর জীবন সংশয়ে, মৃত্যুশয্যায়। অর্থের অভাবে উন্নতমানের চিকিৎসা করাতে পারছেননা তিনি। স্বাধীনতার পর এম এ জি ওসমানীর সাটিফিকেট দিয়ে সম্মানী ভাতাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পেয়েছিলেন। দীর্ঘ ১০/১৫ বছর ধরে ভাতা সহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বন্ধ। এখন কাগজপত্র ঠিক করতে হিমশিম খাচ্ছেন। পরবর্তীতে ভাতা প্রাপ্তির সম্পুর্ণ প্রক্রিয়া শেষ হলে পরিশেষে তিনি দারে দারে ঘুরেন সম্মানি ভাতার জন্য। ২০০২ সালের গেজেটের অনুসরণ করে মৃত্যুর আগে স্বীকৃতির সাথে সাথে সম্মানি ভাতা পেয়ে মরতে চান মুক্তিযোদ্ধা ছিফাত আলী।
মুক্তিযোদ্ধার ছেলে এমরান বলেন, আমর বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়েও সরকারি সব সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমাদের আকুতি আমার বাবাকে মরার আগে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিবেন। যাতে করে আমার বাবা দেখে যেতে পারেন লাল সবুজের বুকে আমার বাবার স্থান হয়েছে। যে দেশের মানচিত্রের জন্য আমার বাবা যুদ্ধ করেছেন সেই দেশের মানচিত্রে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় আমার বাবার দাফন সম্পন্ন করতে চাই।
ছিফাত আলী বলেন, আমি ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করেছি। আমি বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণকে অনুসরণ করে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলাম। বাবা মায়ের ভালোবাসা থেকে দীর্ঘ ৯ মাস বঞ্চিত ছিলাম। আমি সব সময় মনে করেছি এই দেশ আমার মা দেশই আমার বাবা। এই দেশের জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে দিয়েছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার কাছে আমার আকুল আবেদন আমাকে মুক্তিযোদ্ধার পরিপূর্ণ সম্মান দেওয়া হোক।
বর্তমান সমাজের কিছু দুষ্কৃতিকারী আমাকে নিয়ে হাসি ঠাট্টা করে বলে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেতে হলে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসতে হবে।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment