একুশে মিডিয়া, গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি:>>>
ছাত্রছাত্রী ও অবকাঠামো থাক আর না থাক শিক্ষক আছে তো তাহলেই জাতীয়করণ। গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ীতে আন্দুয়া ১ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদ নিয়ে প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক ও বর্তমান প্রধান শিক্ষক দুই জনের মধ্যে এ নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার তদন্ত গতকাল ২৯ ডিসেম্বর রোববার সকাল ১০ টায় আন্দুয়া ১ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আরো জানা যায় এ পদ নিয়ে প্রতিষ্ঠাকালিন প্রধান শিক্ষক জিয়াউল হক উচ্চ আদালতে এটি রিট দায়ের করেছেন।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, সরকার সারাদেশে একযোগে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলো জাতীয় করনের ঘোষনা দিলে ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত দেখিয়ে আন্দুয়া ১ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ২ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপিত হয়। অর্থনৈতিক ভায়দা নিয়ে অবকাঠামোগত উন্নয়ন না হলে ও একটি টিন সেডের ঘড় এবং প্রধান শিক্ষকসহ ৪ জন শিক্ষক নিয়োগ করে জাতীয় করনের অনুমতির জন্য শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের প্রস্তাবনা প্রেরন করে উপজেলা শিক্ষা কমিটি। জাতীয় করন প্রস্তাবনায় আন্দুয়া ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জিয়াউল হকসহ ৪ জন সহকারী শিক্ষকের নাম এই প্রস্তাবনায় উল্লেখ করা হয়। দীর্ঘদিন বিদ্যালয়টি জাতীয় করন না হওয়ায় প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকরা মানবেতর জীবন যাপন করতে শুরু করে।এক পর্যায়ে তারা হতাশ হয়ে পরে! তারপরও বিদ্যালয়টিতে প্রধান শিক্ষক জিয়াউল হকের নেতৃত্বে পাঠদান অব্যাহত থাকে বলে জানা যায়।
এদিকে বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য বিদোৎসাহী সদস্য ও শিক্ষক প্রতিনিধিরা একই পরিবারের সদস্য হওয়ায় তারা গোপনে প্রধান শিক্ষক জিয়াউল হককে বাদ দেওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে পায়তারা শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় ম্যানেজিং কমিটি প্রধান শিক্ষক জিয়াউল হককে স্বেচ্ছায় চাকুরি হতে অব্যাহতি দেখিয়ে একই পদে মেহেদী হাসান রুবেল নামে তাদের পরিবারের একজনকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে পুনরায় নিয়োগ পত্র প্রদান
করেছেন। এরপর হতে নিজের পদ ফিরে পেতে ও বিদ্যালয়ের দায়িত্ব পেতে বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ করেন ও সর্বশেষ আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করেন প্রতিষ্ঠাকালিন প্রধান শিক্ষক জিয়াউল হক।
অন্যদিকে মেহেদী হাসান রুবেল গত ২০১১ সাল হতে ২০১৮ সাল পর্যন্ত গোড়াই মির্জাপুর টাঙ্গাইল এলাকায় অবস্থিত নাহিদ কটন মিলে চাকুরীরত ছিলেন বলে অনুসন্ধানে জানাযায়। অথচ তিনি উক্ত বিদ্যালয়ের ১১ সাল হতে আজ অবধি হাজিরাখাতায় স্বাক্ষর দেখাচ্ছেন। তিনি বিদ্যালয়ে উপস্থিত দেখিয়ে ভুয়া হাজিরা তৈরী করে নিজেকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে কাগজে কলমে দাবী করেন।
সম্প্রতি বিদ্যালয়টি জাতীয় করনের গেজেট প্রকাশিত হয়। প্রজ্ঞাপনের খসরা তালিকা প্রকাশিত হলে বিধি সম্মত ভাবে প্রধান শিক্ষক হিসেবে জিয়াউল হকের নাম প্রকাশিত হয়। ম্যানেজিং কমিটির সদস্য,সহকারী শিক্ষকবৃন্দ,একই পারিবারের হওয়ায় তারা প্রধান শিক্ষক জিয়াউল হককে স্কুলে না আসার জন্য বিভিন্ন হুমকি ধামকি অব্যাহত রাখেন। পরবর্তীতে তারা প্রধান শিক্ষক জিয়াউল হকের নাম পরিবর্তন করে তারস্থলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে মেহেদী হাসান রুবেলের নাম অন্তভুক্ত করার জন্য মন্ত্রনালয়সহ বিভিন্ন স্থানে দৌড় ঝাপ শুরু করে। উভয়ে পদ নিয়ে টানাটানির মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর হতে এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এরইধারাবাহিকতায় শিক্ষা মন্ত্রনালয় কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার শহিদুল ইসলামকে বিষয়টি তদন্তে দায়িত্ব প্রদান করলে ২৯ ডিসেম্বর রোববার তিনি সরেজমিনে তদন্ত সম্পন্ন করে।
প্রতিষ্ঠাকালিন সময়ে প্রধান শিক্ষক জিয়াউল হক জানান, বিদ্যালয় শুরু করেও বিদ্যালয়ে দায়িত্ব হতে জোড় পূর্বক পরিকল্পিত ভাবে আমাকে সরিয়ে দেয়। অবশেষে আমি আদালত ও সংশ্লিষ্টদের স্মরণাপর্ণ হই।
মেহেদী হাসান রুবেল জানান ,বিদ্যালয়ের দায়িত্ব হতে সেচ্ছায় পদত্যাগ করার পরে আমাকে নিয়োগ দেন ম্যানেজিং কমিটি তার পর হতে আমি দায়িত্ব পালন করছি। দেখেন আমাদের বিদ্যালয়ের হাজিরা বহি তার প্রমান।
তদন্তকারি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাস তদন্তকালে তিনি সাংবাদিকদের জানান, জিয়াউল হকের অব্যহতিতে যে কাগজ দেখানো হচ্ছে তা গ্রহনযোগ্য নয় তদন্তে সত্য ও সঠিক বিষয়টি তুলে ধরা হবে বিধি সম্মত ভাবে। যার কাগজ পত্র সঠিক সেই অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসাবে বৈধতা পাবে ।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment