লেখিকা-ফাতেমা আক্তার নওমি:
সেদিনের পর থেকে নিলয় বেলকুনিতে গিয়ে আর কখনও ভেংচি দেওয়া লোকটাকে দেখতে পায় নি। লোকটার উপর হিসু করে দেওয়াতে চরম শিক্ষা হয়েছে।
সীমান্ত সেই বিশেষ কাজটা শেষ করে সেদিন বিকেলেই বাসায় চলে আসে। মা অবশ্য সব গুলো কান্ডের জন্য ই জেরা করেছিল। মামা তো ফোনে মাকে সব বলে দিয়েছে।
এভাবে অনেক দিন কেটে যায়। দুষ্টামির কোনো শেষ ছিল না। ভার্সিটি ছুটি পেলে যখনই বাসায় আসতো মা-বাবাকে রীতিমতো পাগল বানিয়ে ছাড়তো৷
এই তো কিছুদিন আগে মায়ের সাথে বড় খালামনিদের বাসায় গেল, ছোটবেলায় গিয়েছে কিন্তু বড় হয়ে সেটাই ছিল প্রথম যাওয়া সীমান্তর। বড় খালামনির একটা মেয়ে ছিল তখন ক্লাস নাইনে পড়াশোনা করে।
গ্রামেই ছিল তাদের বসবাস। নদীর পাশ দিয়েই ছোট্ট সেই গ্রামটি। সীমান্ত ছোট থেকে বড় হওয়া অবধি কখনও গ্রামে যায় নি। ছোট বেলায় যখন বড় খালামনিদের বাসায় গিয়েছিল, তখন তারা শহরে বাস করতো। প্রায় ৭/৮ বছর ধরে গ্রামে আসা। এটা মূলত খালুর চাকুরী চলে যাওয়ার পর থেকেই।
গ্রাম বেশ সহজ সরল৷ শহরে হাজার লোকের সাথে দেখা হয়ে যাওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু, গ্রামের এঁকেবেঁকে পথ দিয়ে কেবলমাত্র দু একজনের সাথেই দেখা হয়। আর সে দেখাটা স্মৃতিতে গেঁথে থাকে।
মাঃ দেখেছিস? কি সুন্দর তোদের বড় খালাদের এলাকা?
সীমান্তঃ হ্যা, মা। তবে এখানে ভিক্ষা করা বেশ কষ্ট সাধ্য। মানুষই তো নেই। কে দিবে আমাকে ভিক্ষা। তাই, গ্রামকে না বলি।
মাঃ(ছেলের মুখে এমন কথা শুনে মায়ের হাসিমুখটা কালো হয়ে যায়) আমার কসম লাগে। তুই তোর খালামনিদের বাসায় গিয়ে এই কথাটা বলবি না।
---উফফফ। তুমিও না মা। সত্যি কথা বলতে গেলেই যতো সমস্যা।
গ্রামের মেঠো পথ দিয়ে হেঁটে চলছে মা ছেলে।
কিছুদূর যাওয়ার পর একটা মেয়ের সাথে দেখা স্কুল ড্রেস পড়া কাঁধে একটা ব্যাগ। কাজল পড়া কালো চোখ দুটো। যেন এক স্নিগ্ধ মায়া।
পাশ কাটিয়ে মেয়েটা চলে যাওয়ার সময় সীমান্ত বললো,
--নাম কি তোমার?
মেয়েঃ নাম দিয়া কাম কি? হি হি হি।
সীমান্ত একটু হতভম্ব হয়ে গেল। মনে মনে ভাবছে,
- গ্রামের মেয়েরা তো সহজ-সরল হয়। আর এ তো দেখছি রীতিমতো গুন্ডি।
---দেখেছো মা? গ্রামের মেয়েরা কেমন শয়তান?
মাঃ আরে ছাড় না বাবা! ছেলেমানুষ। তোকে চিনে না জানে না নাম বলতে যাবে কেন?
বেলা ১২ টার দিকে সীমান্ত ও মা খালামনিদের বাসায় পৌঁছে গেল।
খালাদের বাড়িটা বেশ সুন্দর।
সবুজ গাছপালায় ঢাকা মায়াবী এক গ্রাম।
খালামনির কতশত আয়োজন। খালুজান আর খালামনি বাসায় একা।
মা প্রশ্ন করে,
--আপু তোমার মেয়ে ইতি কোথায়? ওকে তো দেখছি না কোথাও ? কত ছোট্ট দেখেছি এখন না জানি কতো বড় হয়ে গেছে?
খালামনিঃ হ্যা, আর বলিস না। ওর যা জেদ। এখন স্কুলে আছে। বাসায় ফিরতে ফিরতে ৪টা বাজবে। মেয়েটাকে নিয়ে অনেক চিন্তা হয় রে। এতো জেদি আর একঘেয়ে মেয়ে!
--ও চিন্তা করো না আপু। বয়স টা আর কতটুকু ঠিক হয়ে যাবে৷
---(মুখে একটু হতাশার ছাপ) তাই যেন হয়।
সীমান্ত ঘরে বসে থাকার ছেলে নয়। গ্রামে এসেছে ঘুরে না দেখলে কি হয়?
দুপুরে খাওয়ার টাইম হয়ে গেল ওর দেখা নাই।
সীমান্তর মা তার দুলাভাইকে বলছে।
-দুলাভাই, আশপাশ টা একবার ঘুরে দেখবেন? ছেলেটা কোথায় গেল? আসলে ও তো চিনে না।
--হ্যা, আমি দেখে আসছি।
খালুজান বেরিয়ে গেল ছাতাটা মাথায় দিয়ে সীমান্তকে খোঁজার জন্য। নাহ, কোথাও দেখা যাচ্ছে না।
পখর রোদে গাঁ বেয়ে ঘাম ঝরছে খালুজানের।
খালুজানঃ আরে, আক্কাস যে। আচ্ছা শুনো একটা ২২/২৩ বছরের ছেলেকে দেখেছো?
আক্কাসঃ না তো। কোন হান থেইকা যেন একটা পাগল আইছে। মহসিন মিয়ার গাছ থেইকা আম পারছে।তাই, আম গাছের লগেই ওরে বাঁইধা রাখছে।
--হায়! হায়! বলো কি!
খালুজান দ্রুত পায়ে হেঁটে আম বাগানের সামনে গিয়ে দেখে। এ পাগল তো আর কেউ নয়। সীমান্তকেই যে বেঁধে রেখেছে।
--একি তোমার এ অবস্থা কেন?
সীমান্তঃ (মাথা নিচু করে রেখেছে) খালুজান, আমি আম চুরি করি নাই।
--আচ্ছা, দেখছি কি করা যায়।
আম বাগানের মালিকের বাসায় ছুটে গেল খালুজান। মহসিন তার কাজের ছেলেটাকে নিয়ে বাগানে আসে খালুজানের সাথে।
ছেলেটা দঁড়ি খুলে দিয়ে সীমান্তকে মুক্ত করে দেয়।
মহসিন বলে,
-- ভাই, আমি সত্যিই জানতাম না যে এটা আপনার আত্মীয়। জানলে কখনও এভাবে বেঁধে রাখতাম না।
সীমান্তকে ছাড়িয়ে নিয়ে বাসায় আসে খালু।
খাবার টেবিলে বসে খেতে খেতে মা সীমান্তকে জিজ্ঞেস করে।
--তোকে উনারা বেঁধে রাখলো কোনো কারণ ছাড়া? এটা কেন করলো?
সীমান্তঃ একদমই কারণ ছাড়া নয়। আমি একটা লোকের কাছে কুঠার দেখলাম।
কুঠারটি চাওয়ার সাথে সাথে আমাকে দিয়ে দিল। আমার মাথায় এলো, আম গাছের শিকরে এমন কি আছে? যার উপর ভিক্তি করে এতো এতো আম ধরে গাছে?
তাই, গাছের নিচে কেটে দেখছিলাম কি এমন আছে?
সবাই হা হা করে হাসতে লাগলো সীমান্তর কথা শুনে।
খালামনি বলে উঠলো,
--তুই এতো বোকা এটা তো জানা ছিল না বাবা!
এরমধ্যেই বাইরে থেকে কে যেন খুব চিৎকার করে ডেকে বলছে।
--মা? কই তুমি? বাইরে আসো!
খালামনি তাড়াতাড়ি বাইরে চলে গেল।
বাইরের পরিস্থিতি কিছুই বুঝলাম না। তবে কিছুক্ষণ পর খালা রুমে এসে খাবারগুলো তুলে রাখে।
লাঞ্চ শেষে রুমে যেতে নিলাম। পাশ থেকে শুনতে পেলাম। কেউ একজন খুব জোরে জোরে কথা বলছে।
খোঁজার পর দেখলাম পাশে একটা রুম থেকেই আওয়াজটা আসছে৷
--আরে এ তো দেখছি স্কুল ড্রেস পড়া সেই মেয়েটি। আসার সময় যার সাথে দেখা হয়েছিল।
সীমান্ত ধীরে ধীরে রুমে গিয়ে মেয়েটির পাশে এসে দাঁড়ালো। সামনে গিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে। কিন্তু, এতে বিপরীত হয়ে গেল। মেয়েটি তো ভয় পেলোই না। বরং স্কুলের ভারি ব্যাগটা দিয়ে ইচ্ছেমতো সীমান্তকে পিটালো। বারবার সীমান্তর মুখের উপর ব্যাগটা ছুরে মারছিল।
এ প্রথম সীমান্ত হার স্বীকার করলো। জীবনে প্রথম কারো কাছে মাইর খেতে হলো, তাও আবার একটা মেয়ে। নিজের রুমে এসে ব্যাথায় ছটফট করতে থাকে সীমান্ত। মা তো ভীষণ ব্যস্ত। এতোদিন পর বড় বোনের সাথে দেখা বলে কথা।
রুম থেকে বের হয়ে বিকেলের দিকে সীমান্ত কোনোরকমে ব্যাথা নিরাময়ের ঔষধ লাগিয়ে নিল। চেহারায় ও গলার দিকে অনেকটা কেটে গেছে।
খালাদের বাসার ছাদের দিকে তাকিয়ে দেখলাম মহারানী দাঁড়িয়ে আছে। গোলাপি রংঙের একটা থ্রি-পিছ পড়া মেয়েটি। বাহ! বেশ সুন্দর তো দেখতে।
যাক গে, ওদিকে তাকানোর দরকার নেই। এই মেয়ের যা ঝাল? উফফফ! এখনো ব্যাথায় টনটন করছে৷ আহ!
যাই হোক, এই মেয়ের খবর আমি নিবই। ও যদি বুনো ওল হয় আমি বাঘা তেঁতুল।
আবার রুমে চলে আসলো সীমান্ত। ড্রয়িং রুমে খালা মেয়েটাকে খুব জোর করছে খাওয়ানোর জন্য।
খালা বলছে,
--আর কতোদিন এমন করবি মা? খেয়ে নে সারা! অনেক বেলা হয়ে গেছে।
এরমধ্যেই মা চলে আসছে,
মা বললো, " আপু, তোমার মেয়ে বুঝি?
--হ্যাঁ, রে। ও ই আমার মেয়ে সারা।
--ওর সাথে তো রাস্তায় আসার সময়ই দেখা হয়েছে।
বেশ সুন্দরী কিন্তু তোমার মেয়েটা।
খালাঃ সুন্দরী! মেজাজ দেখলে বলবে বাঘিনী।
সীমান্ত আড়াল থেকে সব দেখে।
-- তাহলে এই হলো সারা! সারার ১২ টা তো বাজাতেই হবে।
কিছুক্ষণ পর সারার রুমে ঢুকলো সীমান্ত। কেউ নেই এই সুযোগে ড্রেসিংটেবিলের কসমেটিকস গুলোর ১২ টা বাজিয়ে দিল। লিপস্টিক দিয়ে বড় বড় করে দেয়ালে লিখে দিল," সারা পেত্নী "!
কয়েক মিনিট পর সারা রুমে এসে দেখলো কসমেটিকস গুলো ছড়ানো ছিটানো। দেয়ালে লেখাটা দেখে মেজাজ আরও খারাপ হয়ে গেল। তখন হেয়ার ড্রয়ার টা দিয়ে ড্রেসিং টেবিলের কাঁচের মধ্যে জোরে বাড়ি দিল।
কাঁচ ভেঙে টুকরো হয়ে গেল। রুম থেকে দ্রুত বের হয়ে ছাঁদে গিয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর আবার রুমে গেল।
সীমান্ত ভাবলো,
-- এ কেমন মেয়ে রে বাবা! কোনো আফসোস নেই?
ছাঁদের ঠিক বাঁ দিকটায় রাস্তা বরাবর দাঁড়িয়ে ছিল সীমান্ত। কিছুক্ষণের মধ্যে ভাঙা কাঁচের টুকরো গুলো সীমান্তর সামনে ঝিরঝির করে পড়ে।
--হায়! আর একটু হলে এগুলো ও মাথায় পড়তো আমার।
উঁকি মেরে ছাদের দিকে তাকিয়ে দেখলো, সারা বেশ খলখলিয়ে দাঁত বের করে হাসছে।
--হাসলে মেয়েদের এতো সুন্দর লাগে? আগে জানতাম না তো। অবশ্য আমি নিজেও তো কখনও হাসি নি। কিভাবে বুঝবো?
সীমান্ত আবার রুমে এসে আয়নায় সামনে দাঁড়িয়ে নিজে নিজে হাসার চেষ্টা করলো।
-- বাহ! আমাকে তো বেশ প্রানোচ্ছল লাগে হাসলে। আচ্ছা, সারার মতো দাঁত বের করে হি হি করে হাসবো?
সীমান্ত একা একাই আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে জোরে জোরে' হা হা হা ' করে হাসতে লাগলো।
পেছনে দরজার দিকে দাঁড়িয়ে সারা সীমান্তর কান্ড দেখছে।
সীমান্ত সারাকে হঠাৎ দেখতে পেয়ে কিছুটা লজ্জা বোধ করে।
সারা বলে, পাগল।
এই বলে সারা চলে গেল।
সীমান্ত ভাবছে, " বাহ! কি বুদ্ধিমতি মেয়ে। সবাই আমাকে পাগল বলে! তাহলে, সারা কি করে জানলো? ওর কি সাবকন্সাইন্স মাইন্ড বেশি কাজ করে?
যাক, হাসতে পারা তো শিখতে পারলাম!
রাতে খালামনি ডিনার করার পর রুমে এসে বললো,
--সীমান্ত, তুমি একটু সারার ম্যাথগুলো করে দিবে? মেয়েটা বুঝতে পারছে না। ওর তো জেদ বেশি তাই খাতার পেইজগুলো ছিঁড়ে ছিঁড়ে ফেলছে।
সীমান্ত খালামনির কথায় সারার রুমে গেল খালার সাথেই।
--সীমান্ত কে দেখে সারা এমনভাবে তাকিয়ে আছে। যেন এখনি সীমান্তকে গিলে খাবে। দুনিয়াতে এমন কোনো পেত্নী ও মনে হয় নেই। যে এমন ভাবে তাকাতে পারে।
--কি করে পারলো খালামনি এমন বজ্জাত মেয়ে জন্ম দিতে?
(এগুলো ভাবতে ভাবতে সীমান্ত খালার কথামতো সারার টেবিলের পাশে রাখা চেয়ারে গিয়ে বসলো)
খালামনি যেন উদ্ধার করে দিয়ে গেল। আমার তো রীতিমতো হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা।
অনেকটা সাহস সঞ্চয় করে। নিচের দিকে তাকিয়ে সারাকে বললাম,
--কই দেখি তোমার ম্যাথগুলো?
--(কোনো কথা না বলে খাতাটা সীমান্তর মুখের উপর ছুঁড়ে মারে সারা)
--উফফফ।(না থাক কিছু বলা যাবে না! এই মেয়ের কিসের এতো ঝাল? কোনো যন্ত্র হলে এতোক্ষনে খুলে খুলে দেখতাম।)
ম্যাথ গুলো তো বেশ ইজি। এ মেয়ের মাথায় তো তাহলে কিছুই নেই দেখছি। এগুলো পারে না?
সীমান্ত বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেও বৃথা। এ মেয়ে তো ভেংচি দিয়েই আছে। হুহ। মাকে বুঝিয়ে কালই চলে যেতে হবে। আর সহ্য হচ্ছে না।
না আমি তাকাবোই না সারার দিকে।
ভেংচির পর্ব শেষ করে এখন একটা ডাইরি বের করে দিল। সবুজ রংঙের।
-এবার তাকাতেই হলো।
---কি করবো এটা দিয়ে?(সীমান্ত)
--যা মন চায় লেখেন।
--(আমি লিখবো? উল্টো পাল্টা কিছু লিখলে তো শাস্তি মাফ নেই? কি লেখা যায় ভাবতে ভাবতে সীমান্ত ডাইরির পেইজ খুলে বড় বড় করে লিখেই দিল।
কি মনে করে লিখলো এটা সে নিজেও বুঝতে পারছে না।
সারা তো স্তব্ধ লেখাটা দেখে।
সারার স্তব্ধতা দেখে সীমান্ত বললো,
"I Love You" তো লিখলাম এটার মিনিং বুঝো?
সারা কিছু না বলে সীমান্তর হাত থেকে এক টানে ডাইরিটা নিয়ে রেখে দিল।
ভালোবাসার অর্থ আসলে দুজনের এক জন ও জানে না। কিন্তু, এই তিনটি ওয়ার্ড দুজনকে আজ বাকরুদ্ধ করে দিয়েছে। পরদিন সকাল সকালই সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে মা ছেলে রওনা দিল ঢাকার উদ্দেশ্যে।
সীমান্ত আসার সময় সারাকে শুধু এটাই বলে এসেছে, আমরা গেলাম। জানিনা আর কখনও দেখা হবে কিনা৷ হয়তো মা আসলেও আমি আর আসবো না।
পথে যেতে যেতে মা অনেকবার জিজ্ঞেস করেছিল,
--কেমন লাগলো গ্রাম? আমার তো বেশ ভালোই লেগেছে।
--ভালো না মা। মানুষ গুলো কেমন যেন।
সীমান্তর মা আজ এতো বছর পর নিজের ছেলেকে কিছুটা চেঞ্জ লক্ষ্য করে। আল্লাহ রহমত করেছে। ছেলেটা যেন একটু বুঝে। মানুষের জীবনটা আসলে কি? ফেলে দেওয়ার মতো কিছু না।
সীমান্ত সত্যিই পরিবর্তন হয়ে গেছে। এখন আর আগের মতো দুষ্টামি করে না। আবল- তাবল কথা বলে না।
কয়েকদিন পর নিজের যাবতীয় জিনিস পত্র নিয়ে একেবারে বাসায় চলে আসলো৷
হলে থেকে নাকি আর পড়বে না।
তবে আগের মতো তো বাসায় ঠিকমতো থাকে ও না। অনেক রাত করে বাড়ি ফেরা অভ্যাস এ পরিনত হয়েছে।
ইদানীং, সীমান্তর মা- বাবার ওকে নিয়ে চিন্তা করাটা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। ছেলেটা পাগল ছিল। খারাপ তো ছিল না। এখন কি তাহলে খারাপ পথে যাচ্ছে? সারারাত জেগে থাকে, সারাদিন ঘুমায়।
না এভাবে আর চলছে না। এখন কিছু বাজে বাজে বন্ধুও জুটেছে।
সেদিন সকালে বুয়া ঘর ঝাড়ু দিতে গিয়ে একটা গাঁজার পোটলা পেল। চিৎকার করে বলে,
-- খালা গো। সীমান্ত ভাইয়ের ঘরে এই পোটলাটা পাইলাম। উনি কি তাইলে নেশা করে?
.সীমান্তর মায়ের মাঝে অনেক হতাশা কাজ করছে। ছেলেটা এতো নিচে নেমে গেল কি করে? এ নিয়ে অনেক বুঝিয়েছে। ট্রিটমেন্ট নেওয়ার কথাও বলেছে।
.......... এই গল্প চলবে............
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment