একুশে মিডিয়া, রিপোর্ট:>>>
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে নতুন করে চলছে নানা তৎপরতা। এ ব্যাপারে তার পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে বিভিন্ন পদক্ষেপ। পাশাপাশি পর্দার আড়ালে সরকারের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা চলছে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর টেলিফোন করেছিলেন। খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাদের আবেদনটা জানাতে বলেছেন, মৌখিকভাবে। সেটা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছি। এটুকু বলতে পারি, এছাড়া কোনো লেনদেন বা কথাবার্তা হয়নি। কাল টকশোতে শুনলাম, তলে তলে আলোচনা অনেক দূর এগিয়ে গেছে, আমার মনে হয় বাস্তবে বিষয়টা তেমন কিছু নয়।<:একুশেমিডিয়া:>
অন্যদিকে রাজনীতি না করে সরকারকে মানবিক কারণেই খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়া জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়া খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে আগামী সপ্তাহে হাইকোর্টে পুনরায় আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন।<:একুশেমিডিয়া:>
শুক্রবার সকালে ধানমণ্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে উল্লিখিত তথ্য জানান ওবায়দুল কাদের। খালেদা জিয়াকে প্যারোলে মুক্তি অথবা সরকারের সঙ্গে এ ব্যাপারে কোনো আলোচনা চলছে কিনা জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলেছি।<:একুশেমিডিয়া:>
এ ব্যাপারে তারা লিখিত কোনো আবেদন পাননি। তবে বিচ্ছিন্নভাবে পরিবারের লোকজন কথা বলেছেন। খালেদা জিয়ার মুক্তি বা প্যারোল সরকারের নয়, আদালতের বিষয়।<:একুশেমিডিয়া:>
সেতুমন্ত্রী বলেন, আমি আগে থেকেই বলে আসছি, খালেদা জিয়ার এ মামলাটি রাজনৈতিক মামলা নয়। সরকারের বিবেচনার বিষয়টা তখনই আসে, যখন বিষয়টি রাজনৈতিক বিবেচনার হয়। কিন্তু খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় সাজা ভোগ করছেন। রাজনৈতিক মামলা হলে সরকারের পক্ষে বিবেচনার বিষয় ছিল।<:একুশেমিডিয়া:>
তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা যাবে। তবে প্যারোল কি কি কারণে দেয়া যায় এবং দোষী বন্দিকে প্যারোলে মুক্তি দেয়া যায় কিনা, আর তারা কি কি কারণে প্যারোলে মুক্তি চান, এসব বিষয় উল্লেখ করে লিখিতভাবে কোনো আবেদন তারা এখনও করেননি।<:একুশেমিডিয়া:>
খালেদা জিয়ার দল কিংবা পরিবার যদি আবেদন করে তবে কি ব্যবস্থা নেয়া হবে- জানতে চাইলে কাদের বলেন, যদিটা পরে দেখা যাবে। আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, প্যারোলের আবেদনের সঙ্গে বিষয়টির মিল আছে কিনা, এটা খতিয়ে দেখা। তাদের আবেদন খালেদা জিয়াকে প্যারোলে মুক্তি দেয়ার জন্য যৌক্তিক কিনা, এ বিষয়টি অবশ্যই দেখা হবে। যেহেতু খালেদা জিয়াকে আদালত দোষী ঘোষণা করেছেন, কাজেই মেডিকেল বোর্ডের রিপোর্টটা আদালতের কাছেই যেতে হবে।<:একুশেমিডিয়া:>
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে সাংবাদিকদের করা অপর এক প্রশ্নের উত্তরে সেতুমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে অমানবিক কোনো কিছু সরকার করতে পারে না। তাকে যথাযথ চিকিৎসা দেয়ার বিষয়টি সরকারের মাথায় আছে। তবে একটা বিষয় হচ্ছে, তার শারীরিক অবস্থার বিষয়টা তার দলের লোকেরা যেভাবে বলেন, চিকিৎসকরা কিন্তু সেভাবে বলছেন না। যেহেতু খালেদা জিয়াকে আদালত দোষী করেছেন, কাজেই মেডিকেল বোর্ডের রিপোর্টটা আদালতের কাছেই যেতে হবে।<:একুশেমিডিয়া:>
বিএনপির ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদককে ফোন করা ও সরকারকে আন্দোলনের হুমকির বিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এটা বিএনপির দ্বিচারিতা।<:একুশেমিডিয়া:>
ভালোবাসা দিবসে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন- আসুন, নেতিবাচক রাজনীতি পরিহার করি। সংশয়, সন্দেহ, বিদ্বেষের দেয়াল ভেঙে সমঝোতার সেতু তৈরি করি। তিনি বলেন, আমরা চাই দেশের রাজনীতিতে সুন্দর কর্ম-সম্পর্ক পরিবেশ গড়ে উঠুক। বিদ্বেষ, আক্রোশের রাজনীতির দেয়াল ভেঙে আমরা যেন কর্ম-সমঝোতার একটা সুন্দর সেতু নির্মাণ করতে পারি, দেশের রাজনীতিতে ইতিবাচক সুবাতাস বইয়ে দিতে পারি, সেটাই আজকে প্রত্যাশা।<:একুশেমিডিয়া:>
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, অ্যাভোকেট আফজাল হোসেন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুর, অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান, উপদফতর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।<:একুশেমিডিয়া:>
এদিকে শুক্রবার বিকালে গুলশান কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার মামলা নিয়ে সিনিয়র আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে টেলিফোন আলাপে কি কথা হয়েছে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, উনি (ওবায়দুল কাদের) কি বলেছেন এটা উনাকে জিজ্ঞাসা করলে, উনাকে বললে ‘বেটার’ হবে। এখন প্রশ্ন একটাই যে, দেশনেত্রীকে এ মুহূর্তে তার শরীরের যে অবস্থা, গুরুতর অবনতি হয়েছে তার ‘ট্রিটমেন্ট’র জন্য তাকে বিদেশে পাঠানোর জন্য তার পরিবার থেকেই আবেদন জানানো হয়েছে। সরকারের এখন আর এগুলো নিয়ে বা অন্য কারও এগুলো নিয়ে রাজনীতি না করে সম্পূর্ণ মানবিক কারণে তাকে মুক্তি দেয়াটা অত্যন্ত জরুরি বলে আমি মনে করি।<:একুশেমিডিয়া:>
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের কথা পরিষ্কার, ম্যাডামের মুক্তির দাবিটা নিয়ে আমরা আজকে নয়, গত ২ বছর ধরেই কোর্টে যাচ্ছি। কথা বলছি, রাস্তায় নামছি, চিৎকার করছি।<:একুশেমিডিয়া:>
দেশবাসী এ মুহূর্তে ম্যাডামের মুক্তির দাবি করছে। একই সঙ্গে আজকে তার (খালেদা জিয়া) পরিবারও করছে। কয়েকদিন আগেই তারা (পরিবার) লিখিতভাবে বিএসএমএমইউর ভিসিকে তার ‘অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্ট’র জন্য তারা চিঠি দিয়েছেন। আর বাকি প্রশ্ন সব অবান্তর থাকে, এগুলো আর প্রশ্ন থাকে না। তিনি জানান, চেয়ারপারসনের আইনজীবীদের সঙ্গে তার মামলার বিষয় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।<:একুশেমিডিয়া:>
খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আগামী সাপ্তাহে খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে আবার আবেদন করা হবে। আশা করি, অন্তত দেশবাসীকে আমাদের হাইকোর্ট বিভাগ এমন একটি ইঙ্গিত দেবেন যে, না দেশে বিচার ব্যবস্থা আছে, বিচার ব্যবস্থা না থাকলে খালেদা জিয়াকে আমরা জামিন দিতাম না। আমরা বিশ্বাস করি, হাইকোর্ট দেশের জনগণের শেষ আশ্রয়স্থল। সেখানে আমরা এবার জামিন আবেদন যদি করি অবশ্যই আমরা জামিন লাভ করব।<:একুশেমিডিয়া:>
বৈঠকে মির্জা ফখরুল ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। এছাড়া খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের মধ্যে ছিলেন- অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। বৈঠকে লন্ডন থেকে স্কাইপেতে যুক্ত ছিলেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।<:একুশেমিডিয়া:>
এদিকে বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, কারাবন্দি খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন তার পরিবার। যে কোনো মূল্যে কারামুক্ত করে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করাতে চান তারা। শুধু তাই নয়, দলের বড় একটি অংশ চায় যে কোনো মূল্যে খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং তার পছন্দের চিকিৎসক বা হাসপাতালে চিকিৎসা করানো।<:একুশেমিডিয়া:>
এক্ষেত্রে প্যারোলে মুক্তি নিয়েও তাদের আপত্তি নেই। তার চিকিৎসার ব্যাপারে লন্ডনে অবস্থানরত দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও ইতিবাচক। মায়ের চিকিৎসাকেই তিনি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন। তার পরামর্শেই পরিবারের সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন।<:একুশেমিডিয়া:>
তবে বিএনপি নেতাদের মতে, খালেদা জিয়ার মুক্তি সরকারের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও সরকারের সিগন্যাল ছাড়া কিছুই করবে না। এমন পরিস্থিতিতে আইনি প্রক্রিয়ার ভেতর থেকে কিভাবে তার জামিন পাওয়া যায় সেই চেষ্টাই চলছে। পর্দার আড়ালে সরকারের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধির সঙ্গে বিএনপির শীর্ষ কয়েক নেতা ও পরিবারের সদস্যদের আলোচনা চলছে। আন্তর্জাতিকভাবে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টিরও চেষ্টা করছে দলটি। খালেদা জিয়ার মুক্তির অংশ হিসেবে পরিবারের পক্ষ থেকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবি জানিয়ে একটি আবেদন করা হয়েছে।<:একুশেমিডিয়া:>
মঙ্গলবার খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বরাবর এ আবেদন করেন। এতে বলা হয়েছে, খালেদা জিয়ার দ্রুত অবনতিশীল স্বাস্থ্যের পরিপ্রেক্ষিতে যে কোনো অপূরণীয় ক্ষতি এড়াতে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত বিদেশি হাসপাতালে চিকিৎসা প্রয়োজন। খালেদা জিয়ার পরিবার ব্যয় বহন করবে এবং তাদের দায়িত্বে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা নেয়া হবে। এক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা চেয়ে এ আবেদন করা হয়েছে। মেডিকেল বোর্ড যেন খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার ব্যাপারে সরকারকে সুপারিশ করে। মঙ্গলবার এ আবেদন করার পর তার পরিবারের সদস্যরা খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎও করেন।<:একুশেমিডিয়া:>
জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে বন্দি আছেন খালেদা জিয়া। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দণ্ডিত হওয়ার পর তাকে নেয়া হয়েছিল পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে। কয়েক দফায় সেখান থেকে এনে তাকে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসা দেয়া হয়। সর্বশেষ গত বছর ১ এপ্রিল খালেদা জিয়াকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকে সেখানেই চিকিৎসাধীন আছেন তিনি।<:একুশেমিডিয়া:>
একুশে মিডিয়া/এমএসএ<:একুশেমিডিয়া:>
No comments:
Post a Comment