আল আমিন মুন্সী :>>>>
বরিশাল ছাত্রলীগের আলোচিত নেত্রী হেনা আক্তারের (২৭) রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। সোমবার রাতে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হলে মঙ্গলবার সকালে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। পরে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।
এই নারী নেত্রীর প্রাণবিয়োগের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তার স্বামী ছাত্রলীগ নেতা নিয়াজ মোর্শেদ সোহাগ ওরফে পাসপোর্ট সোহাগকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে তাকে শেবাচিম হাসপাতাল থেকে কোতয়ালি পুলিশের একটি টিম নিয়ে আসে।পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে- সোমবার রাতে এক সন্তানের জননী হেনাকে অসুস্থ অবস্থায় শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে যান স্বামী নিয়াজ মোর্শেদ সোহাগ। হেনা নিজঘরে গলায় ফাঁস দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে দাবি করেন তিনি। পরে রাতে বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক এই নারী নেত্রী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। খবর পেয়ে সকালে ছাত্রলীগ নেত্রীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়- লাশটি উদ্ধারকালে শরীরের একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন লক্ষ্য করা গেছে। এতে এই মৃত্যুর বিষয়টি রহস্যময় বলে প্রাথমিকভাবে মনে হওয়ায় দুপুরে হেনার স্বামীকে আটক করা হয়েছে। পটুয়খালীর রাঙাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ গ্রামের বাসিন্দা মৃত আনোয়ার হোসেনের মেয়ে হেনা বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ অধ্যায়নের সুবাদে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তৎকালীন বরিশাল সিটি মেয়র প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা শওকত হোসেন হিরন অনুগত এই ছাত্রলীগ নেত্রী সাথে প্রেম সম্পর্কে জড়িয়ে মহানগরের নেতা সোহাগকে বিয়ে করেন।স্থানীয় একটি সূত্র জানায়- বিয়ের পরে কিছুদিন ছাত্রলীগ দম্পতির সংসার সুখের হলেও তাদের ভেতরে কলহ দেখা দেয়, যে বিষয়টি রাজনৈতিক ও মিডিয়াপাড়ায় কমবেশি জানাজানি ছিল।
এনিয়ে উভয় পরিবারের মধ্যে একাধিকবার সালিশ মীমাংসা হলেও তা মেটেনি বলে জানা গেছে। বরং তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডা লেগেই ছিল।সোহাগের পরিবারের দাবি- সোমবার রাতে সোহাগের সাথে হেনার বাকবিতন্ডা ঘটে। এতে হেনা ক্ষুব্ধ হয়ে ঘরের একটি কক্ষের দরজা বন্ধ করে ভেতরে ফ্যানের সাথে গলায় ফাঁস দেয়। পরে দরজা ভেঙে পরিবারের সদস্যরা তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে এবং শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে যায়।
কোতয়ালি মডেল থানার ওসি নুরুল ইসলাম জানান, প্রথমে এই বিয়োগান্তের বিষয়টি অপমৃত্যু হিসেবে নেওয়া হলেও পরে রহস্যময় মনে হয়েছে। কারণ মরদেহেরে শরীরের একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন লক্ষ্যণীয় হয়েছে, যেগুলো খুনের আলামত দিচ্ছে।
এ কারণে স্বামী সোহাগকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।অন্যদিকে ছাত্রলীগ নেত্রীর মরদেহের ময়নাতদন্তে শেষে সন্ধ্যায় লাশটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা করে পুলিশ।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment