একুশে মিডিয়া, বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:
বাঁশখালীর পুঁইছড়ি ইউনিয়নের জঙ্গল নাপোড়ার ‘হরিখাল’ ৫০ বছর ধরে ওই খাল সংস্কারবিহীন থাকায় জঙ্গল নাপোড়া অংশে বিলুপ্ত হয়ে ভরাট হয়ে ফসলি জমিতে পরিণত হয়েছে। এই সুযোগে স্থানীয় প্রভাবশালীরা মাছের প্রজেক্ট ও স্থাপনা নির্মাণ করে দখলে নিয়েছে।
সম্পতি পানি উন্নয়ন বোর্ড পুঁইছড়ি ৬৪/২এ পার্ট পুনর্বাসন ও নিষ্কাশন প্রকল্পের আওতায় হরিখাল খনন প্রকল্প হাতে নেয়। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্মকর্তা, ঠিকাদার ও অবৈধ দখলদাররা একাট্টা হয়ে হরিখালের মূল অংশ খনন না করে খালের গতি পরিবর্তন করে অবৈধ দখলদারদের বাঁচাতে নিরীহ গ্রামবাসীর পৈতৃক ও খরিদা নাল জমিতে খাল খনন করছে। এ নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা চলছে। এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্থরা ভূমী মন্ত্রী, জেলা প্রসাশক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ও পানি উন্নয়ন বোর্ড বরাবরে অভিযোগ দায়ের করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, হরিখাল খনন প্রকল্পের কাজ পেয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স রিয়াজ উদ্দিন। সাব ঠিকাদারি করছেন ইদ্রিছ সুমন। ৩ হাজার ২৮০ ফুটের দৈঘ্যের ৩৩ চেইন দীর্ঘ, খালের উপর অংশে ৬০ ফুট এবং নিচের অংশে ৪০ ফুট প্রস্থ খাল খনন করা হবে। পুঁইছড়ির অন্যান্য স্থানের খাল খননসহ সব কটি মিলে ১১ কোটি টাকার খাল খনন প্রকল্পের এটি এক অংশ। গ্রামের ভুক্তভোগী হাসনে হেনা, মোস্তফা আলী, শওকত আলী, কমর আলীসহ অনেকে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তা ও ঠিকাদাররা খনন করা ৩৩ চেইন খালের মধ্যে ৭ চেইন খালে গতি পরিবর্তন করে আমাদের ও পৈতৃক ৬০০ শতক জমি দখল করে জোরপূর্বক খাল খনন করে নিচ্ছে। অথচ হরিখালের মূল জায়গা অবৈধ দখলদারদের মাছের প্রজেক্ট ও স্থাপনা রয়েছে। আমাদের জমিতে খাল খননে বাধা দিলে নানামুখী মামলা ও হামলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
এলাকা পরিদর্শনে আসেন বাঁশখালীর দায়িত্বপ্রাপ্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী প্রকাশন চাকমা। ওই এলাকার হাসনে হেনা বলেন, ‘আমাদের পৈতৃক ও খরিদা ৯৬ শতক জায়গায় পাউবো খাল খনন করছে।’
খাল খননে নিযুক্ত সাব ঠিকাদার ইদ্রিছ সুমন বলেন, ‘এখানে আমার কোনো লাভ লোকসান নেই। পাউবো কর্মকর্তাদের চিহ্নিত জায়গার ওপর আমি খাল খনন করছি। কাউকে হুমকি-ধমকি দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।’
পাউবোর বাঁশখালীর দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী প্রকাশন চাকমা বলেন, ‘আমি এখানে যোগদানের আগে থেকে খালটি খনন হচ্ছে। খালের মূল অংশ কিংবা ব্যক্তি মালিকাধীন জায়গা চিহ্নিত করার পর বিষয়টি সুরাহা করা হবে।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী শীবেন্দু খাস্তগীর বলেন, ‘ভূমির খাস জায়গা এবং বৈধ-অবৈধ দখলদার চিহ্নিত করা জেলা প্রশাসকের কাজ। খাল খনন করা হচ্ছে এলাকাবাসীর উন্নয়নে। ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গায় বিরোধ দেখা দিলে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোমেনা আক্তার বলেন, ক্ষতিগ্রস্থরা আমার কাছে এসে অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগটি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পাউবো এর কাছে প্রেরণ করেছি। তিনি আরও বলেন, ক্ষতি পূরুন ছাড়া পৈত্রিক জমিতে খাল খনন হতে পারে না।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment