করোনার প্রাদুর্ভাব আর ভয়াবহতা স্থবির পুরো দেশ। ক্ষুদ্র একমালিকানা ব্যবসায়ীদের টানাপুরনের ভোগান্তির যেন শেষ নেই। আগের মত নেই বেচাকেনা, কোন রকম সংসার চালাতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে কিন্তু মহামারি করোনা পরিস্থিতির মধ্যে রংপুরে রহস্যময় ভাবে আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল ১টি একমালিকানা দোকান।
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার কোলকোন্দ ইউনিয়নের দক্ষিণ কোলকোন্দ টুপি পাড়া গ্রামের মোঃ জয়নবীর ছেলে নাহিদ মিয়ার বেচে থাকার শেষ সম্বল "স্বপ্নের মুদি'র" দোকানটি। হঠাৎ রহস্যময় ভাবে আগুনে পুড়ে নিমিশেই ছাই হয়ে গেছে দোকান ঘড়টি।
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলা থেকে কোলকোন্দ ইউনিয়ন বাজারে যাওয়ার প্রধান সড়ক সংলগ্ন হওয়ার কারণে, দোকানে হঠাৎ আগুন লেগে পুড়ে যাওয়া, কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না নাহিদ মিয়া।
অন্যদিকে, হঠাৎ এমন রহস্যময় ঘটনায় -আগুনে দোকান পুড়ে নিমেষে ছাই হয়ে যাওয়া দেখে! তাজ্জব এলাকাবাসীও।
দোকানের মালিক নাহিদের ছোট ভাই প্রত্যক্ষদর্শী, নাইম ইসলাম জানায়,গত২৪/০৪/২০২০ তারিখ যথারীতি ঘটনার রাতে সে দোকানে ঘুমান আর আনুমানিক রাত ৩.২০ মিনিটে রমজানের প্রথম রোজা হওয়ার কারণে সেহরি খাওয়ার জন্য তার পিতা জয়নবী তাকে ডাকতে আসলে নাইম ঘুম থেকে উঠে সেহরী খাওয়ার জন্য বাবার সাথে বাড়িতে যায়। সেহরী খেয়ে ৪.১০ মিনিটে দোকানে ফিরে এসে দেখেন -তাদের দোকান পুড়ে ভস্মীভূত।
মাত্র ৫০ মিনিটের ব্যবধানে এতো অল্প সময়ের ভিতর, কিভাবে দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেল? এটাই তাদের কাছে এখন প্রশ্নোবিদ্ধ আর রহস্যময় ঘটনা।
আবার সেই রাতে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ায় রাস্তায় তেমন লোকজন না থাকায় কেউ আগুনের উৎপত্তি স্হল বুঝে উঠতে পারে নি। যার কারণে আশেপাশের কেউ আগুন নিভাতে আসেনি। আগুনে দোকানের খাদ্য পণ্য ও নিত্য প্রয়োজনীয় মালামালের সাথে পুড়ে ছাই হয়ে যায় ১টি এল ই ডি টেলিভিশন, মোবাইল ফোন, পানির পাম্প মেশিনসহ নগদ অর্থ ।প্রায় ২লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে একমালিকানা দোকানের মালিক নাহিদ মিয়া।
এলাকাবাসি সুজন, স্বপন সহ অনেকেই বলছেন, আগুন এতো দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে যে কেউ বুঝে উঠতেও পারেনি আর নিভানোর সুযোগ তো দ্রুরের কথা,তক্মা লাগা ঘটনায় নির্বাক সবাই । অথচ কর্তব্যরত গ্রামপুলিশের সদস্যরা কেউ ঘটনাস্থলের আসেপাশেও দেখা পাওয়া যায়নি এমনকি, নাম প্রকাশে অনিইচ্ছুক কিছু এলাকাবাসী জানান-গ্রামপুলিশ,চৌকিদার,দফাদা র যাই বলেন না কেন!এরাশুধু নামের কাজের না কারন,এদের বলার ও কেউ নেই দেখারও কেউ নেই।
এলাকাবাসি আরও বলেন,স্থানীয় চেয়ারম্যান এানের রিলিফ সিলিপে ব্যস্ত কিন্তুু খোঁজ নিয়ে দেখেন এলাকার কি করুণ অবস্থা। দোকান পুরে যাওয়া নাহিদের সাথে একটাবার দেখা করে সহানুভূতি দেখা তো দূরের কথা,দেখতেও আসেনি ইউপি চেয়ারম্যান।
এদিকে রাতে তাৎক্ষণিক আগুন লাগার ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত গংগাচড়া ফায়ার সার্ভিস ডিফেন্সের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌচালে দোকান একেবারে ভস্মীভূত অবস্থায় ছাই হওয়া দেখতে পায় ।
পুড়ে যাওয়া দোকানের সত্বাধিকারী নাহিদ মিয়া, কান্নায় ভেঙ্গে পরে বলেন আমার সব শেষ হয়ে গেল। এই ছোট্ট দোকানের আয় দিয়ে আমাদের গোটা পরিবারের সদস্যদের জীবন চলতো, এখন আমরা কি করে খাব? পরিবারের উপার্জনের একমাত্র সম্বল এখন ছাই । এই দোকানের আয় দিয়ে বিভিন্ন এনজিও থেকে নেয়া ঋণ পরিশোধ করা হতো এখন ঋণ কিভাবে শোধ করবো।হতাশায় নিমজ্জিত নাহিদ মিয়া এখন দিশেহারা ।
গত২৫শে এপ্রিল২০, সকালে গংগাচড়া মডেল থানার এস আই মোঃ শাহজাহান মিয়া ঘটনা স্হল পরিদর্শন করে তিনি বলেন, বিষয়টি আন্তরিকতার সাথে দেখা হচ্ছে যেহেতু দোকান একেবারে পুড়ে ছাই তাই বলা যাচ্ছে না কিভাবে আগুনের উৎপত্তি। আগুন লাগার রহস্যময় ঘটনার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment