ছাতকে রেলের আতষ্ক কোটিপতি আব্দুল নুর! - Ekushey Media bangla newspaper

Breaking News

Home Top Ad

এইখানেই আপনার বা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ: 01915-392400

নিউজের উপরে বিজ্ঞাপন

Thursday, 2 April 2020

ছাতকে রেলের আতষ্ক কোটিপতি আব্দুল নুর!

ছাতকে রেলের আতষ্ক কোটিপতি আব্দুল নুর ভোলাগঞ্জ-ছাতক রোপওয়ের কোটি টাকার বোল্ডার-পাথর লোট \ কালো বিড়ালকে সাদা করার অপচেষ্টা \ ফেসবুকে ডেস্ক নিউজ \ জনমনে বিভ্রান্তি \ উর্দ্ধতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী/কার্য (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আব্দুল নুর পিতা-পুত্র-কন্যা এখন কোটিপতি অভিযোগ
একুশে মিডিয়া, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:

ভোলাগঞ্জ-ছাতক রোপওয়ের ট্রেসেল সুরক্ষা বোল্ডার-পাথর উত্তোলন করে লাখ-লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সংঘবদ্ধ পাথরখেকোচক্র। প্রতিদিন ৫শত টাকা মজুরিতে অর্ধশতাধিক শ্রমিক ট্রেসেল’র গোড়া থেকে এসব পাথর উত্তোলন করে  উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের সৈদাবাদ গ্রামের পূর্বে ছৈলতার ঢালা গাং এর তীরে মজুদ করা হয়। ট্রেসেলের গোড়া থেকে উত্তোলনকৃত পাথর ও ট্রেসেলের লোহার এঙ্গেল বিক্রি করে লাখ-লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি পাথরখোকো চক্র। 
অভিযোগ উঠেছে উর্দ্ধতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী/কার্য ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে ছাতক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আব্দুল নুরকে ম্যানেজ করে সাবেক ইউপি সদস্য বাবুল মিয়ায় ভাই ইসলামপুর গ্রামের লিলু মিয়া, সৈদাবাদ গ্রামের বাতির আলী ও মখলিছ মিয়া যৌথভাবে সরকারী সম্পদ বিক্রি করে লাখ-লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। 
এ বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ শুরু করার পর থেকে আব্দুল নুরের ইন্ধনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জনৈক মো. আব্দুল আব্দুল আলিম নামে ও একাধিক নামে-বেনামে আইডি থেকে একটি দুষ্ট চক্র এ প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট, মনগড়া আপত্তিকর লেখা ও ছবি পোষ্ট করে আব্দুল নুরের পক্ষে সাফাই দিতে থাকে। ফেসবুকে আপত্তিকর স্টেটাস এ প্রতিবেদকের জন্য মানহানীকর। 
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, দীর্ঘ দিন ধরে ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে ও কংক্রিট স্লিপার কারখানা বন্ধ রয়েছে। ছাতক-ভোলাগঞ্জ রজ্জুপথ, পাথর কোয়ারী, কংক্রিট স্লিপার কারখানা, রেষ্ট হা্উজ, গোদাম, বাসা-বাড়িসহ কয়েক শত একর ভূমিতে মূল্যবান স্থাপনাকে পুঁজি করে এক শ্রেনীর অসাধু কর্মকতার্-কর্মচারী মিলে হরিলুট চলছে। 
বিগত সময়ে রেলপথের বৈদ্যুতিক লাইন থেকে অবৈধ ভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে রেল বিভাগের প্রতিমাসে ৫০ হাজার টাকা আত্মসাতসহ বিভিন্ন টেন্ডারে দূনর্ীতির মাধ্যমে সরকারী অর্থ আত্মসাত ও লক্ষ-লক্ষ টাকার মালামাল, রেলওয়ে ষ্টেশন, রোপওয়ে ব্যাংকার, সিএসপিতে রাখা রেলওয়ের বিশাল অংক মূল্যের স্ক্যাপমাল চুরি হয়েছে মর্মে থানায় জিডি এন্ট্রি করে ভাগ-বাটোয়ারা করে নেওয়া হয়। কতৃপক্ষের নিকট এসব অভিযোগ তদন্তের অন্তরালে থলিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। 
উর্দ্ধতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী/কার্য ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে ছাতক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আব্দুল নুর ও  তার ছেলে মাহবুবুল আলম এবং মেয়ে সুর্বনা আক্তার কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন। রেলওয়ে সরকারী চাকুরীতে যোগদান করেই মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে পিতা-পুত্র-কন্যা এখন কোটিপতি অভিযোগ উঠেছে। 

ইাম প্রকাশ না করার শর্তে ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে ছাতকের এক কর্মকতার্ জানান, আব্দুর নুরকে প্রায় ৮বছর পূর্বে নানা অনিয়ম-দুনর্ীতির অভিযোগে ছাতক থেকে ঢাকা অঞ্চলে বদলী করা হয়। পরবর্তীতে ওয়ার্ক সুপারভাইজার হিসাবে সিলেট। ২০১৪ সালে ফের ছাতকে বদলি আসেন তিনি। রোপ লাইনের (টিএলআর) অস্থায়ী কর্মচারীদের বেতন আত্মসাত ও ভোলাগঞ্জের পাথর চুরির অভিযোগে ২০১৫ সালে সহকারি নিবার্হী প্রকৌশলীর অধীনে ময়মনসিংহ জেলার জামালপুর আবারো বদলি করা হয়। ২০১৮ সালে স্থানীয় এক প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধির আর্শিবাদে ভারপ্রাপ্ত এসএই/কাযর্য/বিআর ভোলাগঞ্জ হিসাবে ছাতক বাজারে যোগাদান করেন।
জানা যায়, গত বছর উর্দ্ধতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী/কার্য ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে ছাতক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ভার গ্রহন করেই দ্রুত ঘুরতে থাকে ভাগ্যের চাকা। ভোলাগঞ্জের পাথর চুরি করে বিক্রি, নদীর পার, বাসা-বাড়ী বহিরাগতদের কাছে ভাড়া দিয়ে সরকারের লাখ লাখ টাকা আত্মসাত করা অভিযোগ উঠে।
আব্দুল নুরের পুত্র মাহবুবুল আলম ২০১৫ইং খালাসী পদে সিএসএই/কার্য্য/সিলেট অফিসে যোগদান করেন। মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগে কোম্পানিগঞ্জ থানা পুলিশের হাতে আটক হন তিনি। এর পর ২০১৬ইং ছাতক বাজার এসএসএই/কাযর্য/বিআর অফিসে বদলী হয়ে আসেন। ছাতকে স্থায়ী নির্বাহী প্রকৌশলী কর্মরত না থাকলেও অবৈধ সুযোগ সুবিধা নিতে মাহবুবুলকে (ভারপ্রাপ্ত) মটর ড্রাইভার করা হয়েছে। গতবছর জুলাই মাসে কন্যা সুর্বনা আক্তার খালাসী পদে কাগজে-কলমে যোগদান করেন। 
আরো জানা যায়, আব্দুর নুরের পূত্র মাহবুবুর আলম এক সময় ফেরী করে চা বিক্রি করতো। পরবর্তীতে বেশ কিছুদিন ট্রাকের হেলপার হিসেবে কাজ করে। রেলওয়ে সরকারী চাকুরীতে যোগদান করে পিতা-পুত্র-কন্যা আলাউদ্দিনের চেরাগ পেয়ে যায়। মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে কোটিপতি হয়েছেন অভিযোগ উঠেছে। 
তাদের রয়েছে ২ টি ব্যবসা প্রতিষ্টান, ২টি ট্রাক, ২টি পিকাপ ভ্যান ও ১টি মোটরসাইকেল। এছাড়াও গ্রামের বাড়ীতে চলছে কয়েক লাখ টাকা ব্যয়ে বাসা তৈরীর কাজ। রেলওয়ের সরকারী বাসা বহিরাগতদের কাছে ভাড়া দিয়ে তিনি থাকছেন শীতাতপ নিয়নন্ত্রিত বিলাস বহুল ভাড়া বাসায়। 
ছাতক বাজার রেলওয়ের বিভিন্ন অনিয়ম ও দূনর্ীতি বিষয়ে গত ৬ ফেব্রুয়ারী “ছাতকে রেল এখন তলাবিহীন ঝুড়ি” শিরোনামে জাতীয় দৈনিক “ঢাকা প্রতিদিন” এ সংবাদ প্রকাশিত হয়। ৯ ফেব্রুয়ারী ছাতক কংক্রিট স্লিপার কারখানা তাৎকক্ষনিক পরিদর্শন করেন রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। পরিদর্শনকালে তিনি বলেছিলেন, ছাতকসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রেলওয়ের সমস্ত পরিত্যক্ত-বেদখল হওয়া ভূমি ধীরে ধীরে উদ্ধার করা হবে। শিঘ্রই ছাতক কংক্রিট স্লিপার কারখানায় ব্রডগেজ স্লিপার উৎপাদন উপযোগী করে চালু করা হবে। এতে স্থানীয়দের মনে আশার সঞ্চার হলেও অনিয়ম-দৃনর্ীতি এবং লুটপাটের ঘটনায় কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি অভিযোগ স্থানীয়দের। 
সরেজমিনে গত ১৫ মার্চ রোববার উপজেলার আবদালী হাওর এলাকার ছৈলতার ঢালা গাং এর তীর ঘুরে দেখা যায়, বোল্ডার-পাথর মজুদ রাখা রয়েছে। পাথর মজুদ করে তার উপরে লতা-পাতা দিয়ে ঢেকে রাখা। তবে এই পাথরখেকোচক্রের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে নারাজ স্থানীয়রা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কৃষক জানান, ইসলামপুর গ্রামের প্রভাবশালী লিলু মিয়ার নেতৃত্বে প্রতিদিন ২০-২৫ জন শ্রমিক বোল্ডার-পাথর উত্তোলন করেন। ট্রেসেলের লোহার এঙ্গেলগুলো খুলেও বিক্রি করা হচ্ছে। এসব উত্তোলনকৃত বোল্ডার-পাথর ও লোহার  এঙ্গেল ট্রাকে পরিবহন করা হয়। 
এ বিষয়ে ইসলামপুর গ্রামের লিলু মিয়ার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে বোল্ডার-পাথর উত্তোলন করে মজুদ ও বিক্রির কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, এ পাথর উত্তোলনে আমার মোটা অংকের টাকা খরছ হয়েছে। পরে কথা বলবো জানিয়ে তিনি মুঠোফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। ৩-৪ ঘন্টা পর এ প্রতিবেদকের মুঠোফোনে কল করে তিনি উত্তোলকৃত বোল্ডার-পাথর তার নয় বলে অস্বীকার করেন। একপ্রশ্নের জবাব এড়িয়ে গিয়ে তিনি এ প্রতিবেদকের সঙ্গে অশালীন ভাষায় কথা বলেন। এমনকি হুমকি প্রদান করেন।

উর্দ্ধতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী/কার্য ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে ছাতক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আব্দুল নুর বলেন, আমার একটি ট্রাক রয়েছে। সেটাও ব্যাংক লোনে ক্রয় করেছি। ব্যাংকের কিস্তি দিতে পারছিনা। ছেলে তার কাজ করছে। এইতো সেইদিন রেলমন্ত্রী কোম্পানিগঞ্জ-ছাতক পরিদর্শন করেছেন। আমার ছেলে এক সপ্তাহ আগে থেকে সিলেটে দায়িত্বে পালন করেছে। তবে দুটি ব্যবসা প্রতিষ্টান সম্র্পকে জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান। তিনি আরো বলেন, আমি কোম্পানিগঞ্জ-ছাতক দুটির দায়িত্বে রয়েছি। আমাকে এদিক-সেদিক ছুটা-ছুটি করতে হয়। আমি যখন থাকিনা তখন আমার মেয়ে অফিস দেখাশুনা করে।  নদীপাড়ে ১ লাখ ৩৩ হাজার ৬শত সিফটি পাথর রয়েছে। ৩ জন প্রহরীর প্রয়োজন রয়েছে একজন মাত্র। মুঠোফোনে বা ক্যামেরার সামনে বক্তব্য দিতে নারাজি কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন, একজন সাংবাদিক মুঠোফোনে কল করেছিলেন। তিনি যা খুশি তা লেখার জন্য বলেছি। এ সময় তিনি শ্রমিক লীগের সভাপতি ছিলেন পরিচয় দিয়ে বলেন রেলমন্ত্রী এসেছিলেন সব কিছুই আমাকে করতে হয়েছে। তবে মো. আব্দুল আলিম নামে ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় রয়েছে কি না এ প্রতিবেদকের নিকট বার বার জানতে চান।
উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হেকিম বলেন, গত বছর ছাতক রেল কতৃপক্ষ ট্রেসেল’র গোড়ায় পাথর উত্তোলন করে বিক্রি করার ঘটনায় সৈদাবাদ গ্রামের কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার পর অদৃশ্য কারনে তারা তাদের অবস্থান থেকে সরে যায়। যে কারনের স্থানীয় ভাবে আমাকে বিব্ররতকর অবস্থায় পড়তে হয়। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হিসাবে আমার অবস্থান থেকে ব্যবস্তা গ্রহন করা হবে। পাশা-পাশি সরকারী সম্পদ রক্ষায় সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কতৃক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
বাংলাদেশ রেলওয়ে সিআরবি চট্রগাম অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আহসান জাবিরের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, চীফ কমান্ডেন্টের সাথে যোগাযোগ করার জন্য। চীফ কমান্ডেন্ট জহিরুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে তিনি রিসিব না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বাংলাদেশ রেলওয়ে ছাতক বাজার নিবার্হী প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. মুজিবুর রহমান বলেন, গত মাসের ১৫ তারিখ ওয়ার্ডার হয়। চট্রগ্রাম থেকে এসে আমি ১৯ তারিখ ছাতকে অফিস করি। তার পরই অফিস বন্ধ হয়ে যায়। এ বিষয়টি যতটুকু জেনেছি উর্দ্ধতন কতৃপক্ষকে লিখিত অবগত করা হবে। তিনি আরো বলেন, আমার সীমিত ক্ষমতার ভিতরে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্তা নেওয়া হবে। 
ছাতক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ খবর নিয়ে দেখবো।
প্রয়োজনীয় জনবল ও রক্ষণাবেক্ষনের ব্যবস্থা এবং তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত লুটেরা-অপরাধীদের চিহ্নিত করে সরকারী সম্পদ রক্ষা ও উদ্ধার এবং কংক্রিট স্লিপার কারখানা দু্রত চালুর দাবী জানান স্থানীয়রা।




একুশে মিডিয়া/এমএসএ

No comments:

Post a Comment

নিউজের নীচে। বিজ্ঞাপনের জন্য খালী আছে

Pages