দোয়ারাবাজারে আপন চাচা কর্তৃক অত্যচার-নির্যাতনের শিকার হয়েছে নিঃস্ব এক পরিবারের অসহায় সন্তানরা। তাদের বসত ভিটা ও পৈতৃক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতেই চাচা এভাবে অত্যচার করে আসছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে।
পিতা মাতার অবর্তমানে অসহায় এই পরিবারের সন্তানরা ঘরছাড়া হয়ে বর্তমানে মানবেতর জীবন যাপন করার খবর পাওয়গেছে।
সম্প্রতি উপজেলার লক্ষীপুর ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গ্রাম পঞ্চায়েতবাসী সূত্রে জানা যায়, চাঁনপুর গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা মকুল হোসেনের পুত্র মোশারফ হোসেন আপন ভাইয়ের সন্তানদের ভিটেমাটি ছাড়া করতে দীর্ঘদিন ধরেই তাদের ওপর অত্যচার-নির্যাতন চালিয়ে আসছে।
এ নিয়ে একাধিকবার গ্রাম্য সালিশ-বিচারে এর সুরাহা করে দিলেও মোশারফ হোসেন তামানতে রাজি নয়। কয়েক দিন পর পর সে এতিম শিশু সন্তানদের মারধরসহ ওপর অকথ্য নির্যাতন চালায়।
সম্প্রতি বাড়ির পানি নিষ্কাশনের ড্রেন কে কেন্দ্র করে তাদেরকে বেদড়ক মারপিট করে রক্তাক্ত জখমী করে। পরে স্থানীয়রা এসে তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করেন। গ্রামের লোকজন এতে বাধা দেয়ায় এবং তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করায় প্রভাবশালী মোশারফ হোসেন পাশবর্তী বাড়ির লোকজনকে জড়িয়ে মামলায় জড়িয়ে হয়রানী করছে বলেও অভিযোগ করেছেন গ্রামের লোকজন। আপন চাচা কর্তৃক নির্যাতনের শিকার মো. শুকুর আলী (১৬) জানায়, তার বাবা মারা গেছে ৭ বছর গত হয়েছে। ৩/৪ মাস পূর্বে তার মা মারা যাওয়ার পর তার চাচা মোশারফ হোসেন তাদের পৈতৃক ভিটা দখল করতে নানাভাবে অত্যচার নির্যাতন করে আসছেন। তার পরিবারে রোজগারী বলতে কেউ নেই। তার ছোট এক ভাই ও এক বোনকে নিয়ে শুকুর আলীৗ ওই বাড়িতে থাকে। তার দুই বড়ো বোনের বিয়ে হয়ে মা থাকতেই। তারা দু’জন স্বামী সহ ঢাকায় গার্মেন্টসে শ্রমিকের কাজ করেন। তাদের দেখাশোনাও বড়ো দুই বোনকেই করতে হয়। সম্প্রতি দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে এক বোন বাড়িতে আসলে মোশারফ হোসেন তাদের ওপর চড়াও হন এবং ঘরবন্দি করে বেদড়ক মারধর করে আহত করে।
বসত ভিটার পানি নিষ্কাশনের ড্রেন কে কেন্দ্র করে চাচা এভাবে মারধর করতে থাকলে পাশর্বর্তী বাড়ির আনোয়ার হোসেন, দেলোয়ার হোসেন ও গ্রামের লোকজন এগিয়ে আসলে তাদের ওপরও চড়ায় হন তার চাচা। স্থানীয় ইউপি সদস্য গোলাম মস্তফা জানান, মোশারফ হোসেন দীর্ঘ দিন ধরেই এই নিঃশ পরিবারকে নানাভাবে অত্যচার নির্যাতন করে আসছে। সে গ্রাম পঞ্চায়েতবাসীর সিদ্ধান্তও উপেক্ষা করেছে।
এতিম শিশু সন্তানদের আশ্রয় দেয়ায় এখন তাদেরকেও মামলা মোকদ্দমায় জড়িয়ে হয়রানী করছে। গ্রামের মুরব্বী শফিকুল ইসলাম রতন বলেছেন, মোশারফ হোসেন ও তার ছেলে মেয়েরা জোরপূর্বক এতিম সন্তানদের বসত বাড়ি ও তাদের মায়ের সম্পত্তি দখল
করতে চায়। মারধরের ঘটনায় আমরা গ্রামের পক্ষ থেকে এগিয়ে আসলে সে আমাদের সাথেও খারাপ আচরণ করে। পরে ইউপি চেয়ারম্যান লোক পাঠিয়ে নির্যাতনের শিকার অসহায় সন্তানদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মোশারফ হোসেন টাকা পয়সার জোরে এখন মামলা মোকদ্দমা করে গ্রামের মানুষকে হয়রানী করার হুমকি দিচ্ছে। জানতে চাইলে লক্ষীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমীরুল হক জানান, বাড়ির পানি নিষ্কাশনের ড্রেনকে কেন্দ্র করে তার ভাতিজা-ভাতিজিদের মারধর করে ঘরে আটকে
রাখার ঘটনায় গ্রামের লোকজনের কথা শোনে আমি লোক পাঠিয়ে তাদের উদ্ধার করি। বিষয়টি আপোষ মীমাংসায় সমাধানের জন্য উদ্যোগ নিতে গ্রাম-পঞ্চায়েতবাসীকে দায়িত্ব দিয়েছি।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment