এইচ এম শহীদ, পেকুয়া (কক্সবাজার) থেকে:
কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার পেকুয়া সদর ইউনিয়নে- জন্নাতুল ফেরদৌস নামে (২২) এক প্রবাসীর স্ত্রীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার মা নুরুন্নাহারের দাবী শ্বাশুর বাড়ির লোকজন তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।
নিহত গৃহবধু সদর ইউনিয়নের উত্তর মেহেরনামা আবদুল হামিদ সিকদার পাড়ার লিবিয়া প্রবাসী বাদশার স্ত্রী ও বারবাকিয়া ইউনিয়নের ভারুয়াখালী এলাকার জাফর আলমের মেয়ে।
সোমবার দুপুর ১২টার দিকে স্বামী বাদশার বাড়ি থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পেকুয়া থানা পুলিশ। শ্বাশুর বাড়ির লোকজন পালিয়ে যাওয়ায় পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি।
মা নুরুন্নাহার বলেন, বিগত দুই বছর আগে উত্তর মেহেরনামার হাছিম আলীর ছেলে বাদশার সাথে আমার মেয়ের বিয়ে হয়। বিগত ১বছর আগে আমার মেয়ে ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। এরপর স্বামী লিবিয়া চলে যায়। স্বামী লিবিয়া চলে যাওয়ার পর থেকে তার স্বামীর মা আনোয়ারা বেগম, তার জাঁ ও দুই ননদ মিলে বেশ কয়েকবার মারধর করে।
তার শ্বাশুর বাড়ি এলাকার ইউপি সদস্য ইসমাঈল সিকদার ও আমাদের ইউপি সদস্য মোঃ ইউনুছ বেশ কয়েকবার মেয়েকে মারধর আর নির্যাতনের বিষয়ে মিমাংসার করে দেন। বিগত কয়েকদিন আগেও তাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিলে ইউপি সদস্য ইসমাঈলের মধ্যস্ততায় তাকে শ্বাশুর বাড়িতে রেখে যায়।
সোমবার সকালে তার বোন ফরিদাকে ফোন দেন নিহত জন্নাতুল ফেরদৌস। ফোনে শ্বাশুর বাড়ির লোকজন তাকে মারধর করতেছে বলে জানান। এর কিছুক্ষণ পর জানতে পারি তাকে মেরে ফেলা হয়েছে।
নিহতের বোন ফরিদা বেগম বলেন, আমার বোনকে বেশ কয়েকবার নির্যাতন করেছে তারা। তার প্রতিবেশি হিসাবে স্থানীয় একজন আমাকে জানায় বোন গলায় ফাঁস লাগিয়ে মারা গেছে। আমরা গিয়ে দেখি তার লাশ মাটিতে শুয়া অবস্থায়। তাকে গলাটিপে হত্যা করে ফাঁস লাগানোর কথা প্রচার করেন শ্বাশুর বাড়ির লোকজন।
ইউপি সদস্য মোঃ ইসমাঈল সিকদার বলেন- বাদশার-একটি ১৪ মাসের ছেলে সন্তান রয়েছে ।এর আগে পারিবারিক ঝগড়া নিয়ে আমরা স্থানীয়ভাবে শালিষ করেছি ঠিক। তবে আজকের ঘটনা কি হয়েছে সেই বিষয়ে আমি অবগত নয়। একই কথা বলেন, ইউপি সদস্য মোঃ ইউনুছ।
নিহত গৃহবধুর শ্বাশুর বাড়ির লোকজন পালিয়ে যাওয়ায় বক্তব্য পাওয়া না গেলেও নিহতের চাচা শ্বশুর আলী আহমদ বলেন, সকালের দিকে আমার ভাই হাছিম আলী একুশে মিডিয়াকে জানিয়েছেন তাদের পুত্রবধু জন্নাতুল ফেরদৌস গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পুলিশ লাশ নিয়ে গেছে এর বেশি কিছু বলতে পারবোনা।
লাশ উদ্ধার করা পেকুয়া থানার এসআই সঞ্জিত একুশে মিডিয়াকে বলেন, আমরা যাওয়ার পর লাশটি মাটিতে শুয়া অবস্থায় দেখেছি। আত্মহত্যা করেছে কিনা নাকি মারধরে মারা গেছে তা ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ছাড়া বলতে পারবোনা।
পেকুয়া থানার ওসি কামরুল আজম একুশে মিডিয়াকে বলেন, গৃহবধুর লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment