সৈকত আচার্য্য, বিশেষ প্রতিবেদক:
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের ইলশা গ্রামে চাঞ্চল্যকর ২ হাফেজ খুনের বিচারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসীরা। গত ১২ মে রাতে মসজিদ থেকে তারাবি নামাজ শেষে বের হওয়ার সাথে সাথে পূর্ব থেকে ওৎপেতে থাকা দুর্বৃত্তদের গুলিতে নৃশংস ভাবে খুনের শিকার হয় ওই এলাকার দুই হাফেজ খালেদ বিন ওয়ালিদ (২৫) ও মোহাম্মদ ইব্রাহিম (২১)।
স্থানীয়রা জানান, ওই দুই হাফেজ পটিয়া মাদ্রাসার ছাত্র। সম্প্রতি সারাদেশে লকডাউন জারি করার পর তারা মাদ্রাসা থেকে বাড়িতে চলে এসেছিল। তাদের সাথে এলাকার কারো সাথে কোন ঝগড়া বিবাদ ছিল না। কিন্তু এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে দুই ব্রিক ফিল্ডের মালিক নুরুল আবছার ও জয়নাল আবেদীন ঝুন্টুর সাথে বিরোধ চলে আসছিল।
খুনের শিকার ওই দুই হাফেজ জয়নাল আবেদীন ঝুন্টুর নিকটাত্মীয় ও সম্পর্কে চাচাতো ভাই হয়। এরই মধ্যে ১২ মে রাতে রমজানের তারাবি নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে জয়নাল আবেদীন ঝুন্টুকে লক্ষ্য গুঁলি ছুঁড়ে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা দুর্বৃত্তের দল। এ সময় জয়নাল আবেদীন ঝুন্টু কৌশলে আত্মরক্ষা করতে সক্ষম হলেও তার সাথে থাকা তার দুই চাচাতো ভাই হাফেজ খালেদ বিন ওয়ালিদ ও মোহাম্মদ ইব্রাহিমসহ গুলিবিদ্ধ হয় বেশ কয়েকজন।
দুর্বৃত্তদের এলোপাথাড়ি ছোঁড়া গুলিতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে হাফেজ খালেদ বিন ওয়ালিদ। অপরাপর গুলিবিদ্ধ গুরুতর আহতদের হাসপাতালে নেওয়া হলেও পরদিন দুপুরে মারা যায় হাফেজ মোহাম্মদ ইব্রাহিম। এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা বৃদ্ধি পেলে পুলিশ তাৎক্ষনিক ভাবে অভিযান চালায় আসামিদের গ্রেফতারে।
এ ঘটনায় জয়নাল আবেদীন ঝুন্টু বাদী হয়ে ২৪ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট ২ আসামীকে গ্রেফতার করে এবং গ্রেফতারকৃত আসামীদের নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারে গেলে ১৫ মে রাতে পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নুরুল আনছার প্রঃ কালু নিহত হয়। সে মামলার ৩নং আসামী ছিল।
এদিকে মামলার অপরাপর আসামীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন নিহত দুই হাফেজের পরিবারের সদস্যরা। তারা বলেন, এলাকায় কোন ধরনের ঝগড়া বিবাদের সাথে আমাদের সন্তানেরা জড়িত ছিল না। তাদের বিরুদ্ধে একটি ডায়েরীও নেই থানা কিংবা আদালতে। নিষ্পাপ এই দুই হাফেজকে খুন করা হলেও আসামীদের এখনো গ্রেফতার করা হয়নি কেন তা আমাদের বোধগম্য নয়। এদিকে মামলার বাদী জয়নাল আবেদীন ঝুন্টু বলেন, ‘মামলার প্রধান আসামী নুরুল আবছার ও তার ভাইয়েরা আমাকে আত্মীয় স্বজনের মাধ্যমে মামলা তুলে নিতে নানা ভাবে হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে। অথচ পুলিশ এখনো মামলার অভিযুক্ত আসামীদের গ্রেফতারে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেয়নি।
এ ব্যাপারে বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রেজাউল করিম মজুমদার একুশে মিডিয়াকে বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে আসামীদের গ্রেফতারে সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। আসামিরা এলাকা ছাড়া হওয়াতে তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না। তারপরেও ওই এলাকায় নজরদারি রাখা হয়েছে। মামলার কোন আসামীদের কোন প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment