এম এ বাশার, কুমিল্লা:
টাকা ছাড়া মিলছে না কোন প্রকার ভাতা ও উপকরণ। ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ খান ও মেম্বার কামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে গরীব, অসহায় ও দুস্থদের ভাতা ও উপকরণ দেওয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে। ওই চেয়ারম্যান বাবার অবর্তমানে বিভিন্ন বিষয় দেখভাল করেন তার ছেলে আবুল বাশার খান।
চেয়ারম্যান পরিবারটি প্রভাবশালী হওয়ায় প্রকাশ্যে তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ না খুললেও গতকাল এলাকায় সাংবাদিক আসছে এমন খবরে ভূক্তভোগিরা জড়ো হয়ে তাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়াসহ বিভিন্ন ভোগান্তির কথা বলেন। এ চিত্র কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ৯নং কামাল্লা ইউনিয়নে।
সরেজমিনে গেলে কমপক্ষে ৫৫ জন ভুক্তভোগি জড়ো হয়ে জানায়, প্রতিবন্ধী, বয়স্ক, বিধবা, মাতৃত্বকালিন ভাতা, ভিজিডি ও ভিজিএফ কার্ড এবং বিভিন্ন সহায়তা পেতে ইউনিয়ন পরিষদের নামে ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে ক্ষেত্র বিশেষ ১ হাজার থেকে শুরু করে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত দিয়েছেন। কিন্তু টাকা দেওয়ার পরও ওই ইউনিয়নে অর্ধশতাধিক গরীব, অসহায় লোক তাদের কাঙ্খিত সুবিধা না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে চেয়ারম্যান ফিরোজ খান ও মেম্বার কামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই ইউনিয়নের কমপক্ষে ২০ জন ব্যক্তি বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ খানের বয়স ৮৫’র উপরে। বার্ধক্যজনীত কারণসহ নানাবিধ অসুখে মাসের মধ্যে ২৫ দিনই অসুস্থ্য থাকেন তিনি। তার অবর্তমানে ছেলে আবুল বাশার খান অঘোষিত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এ ইউনিয়নে কোন ঘটনা ঘটা ও নিস্পত্তি হওয়া সবকিছুই হচ্ছে তার ইশারায়। পরিবারটি প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলেনা। তার সাথে যোগসাজস রয়েছে কামাল উদ্দিন মেম্বার।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কামাল উদ্দিন বলেন, ভূক্তভোগিদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে এ অভিযোগ সঠিক, তবে এই টাকা আমি ধরি নাই। ইউপি সচিব আবু সাইম ও সমাজ সেবা অফিসের ইউনিয়ন সমাজকর্মী সাবিনা ইয়াছমিনকে নির্দিষ্ট হারে টাকা দিতে হয়। দীর্ঘদিন যাবত এ অবস্থা চলে আসছে। চেয়ারম্যানের অবর্তমানে তার ছেলে আবুল বাশার খান ইউনিয়ন পরিষদের সবকিছু দেখেন তিনি। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রতিহিংসামূলক।
উক্ত বিষয়ে ইউপি সচিব আবু সাইম ও সমাজ সেবা অফিসের ইউনিয়ন সমাজ কর্মী সাবিনা ইয়াছমিনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে টাকা তারা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন বলে জানিয়েছে।
কামাল্লা ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ খান বলেন, অসুস্থতার কারণে আমি দীঘীদন ঘর থেকে বের হইনা। বিশেষ কোন স্বাক্ষরের প্রয়োজন হলে আমার কাছে নিয়ে আসলে আমি স্বাক্ষর দিয়ে দেই। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমার অবর্তমানে মেম্বার কামাল উদ্দিন বিভিন্ন বিষয়গুলো দেখেম। কারো কাছ থেকে টাকা নিয়ে ভাতার কার্ড দেওয়া হয় নাই, তবে টাকা নেয় এমন ঘটনা আমাকে কেউ জানায়নি।
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিষেক দাশ বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। সহসাই তদন্ত সাপেক্ষে দোষী ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment