মোঃ জাকির হোসেন, জেলা প্রতিনিধি:
ঢাকার দোহারে তুচ্ছ ঘটনায় মা ও মেয়েকে পিটিয়ে আহত ও সরকারি জমিসহ কয়েকজনের বাড়ি দখল করার অভিযোগ উঠেছে সুমন (৩৮) এর বিরুদ্ধে। সুমন উপজেলার নারিশা ইউনিয়নের মালিকান্দা এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে। এ ঘটনায় দোহার থানায় দুই জনকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতনের একটি অভিযোগ দায়ের করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।
জানা যায় গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭ টায়, শিউলী বেগম (৪০) ও তার অনার্স পরোয়া মেয়ে প্রিয়া আক্তার (২০) এর সাথে অর্থ লেনদেন নিয়ে বাকবিতন্ডা হয় একই এলাকার সুমনের। এক পর্যায়ের সুমন ও তার ছোট ভাই উজ্জল মা ও মেয়েকে পিটিয়ে আহত করে।
ভুক্তভোগী শিউলী ও প্রিয়া জানান, সুমন আমাদের প্রতিবেশী, সে স্মাগলার সংঘের সাথে যুক্ত। তিনি কিছু দিন পর পর বিভিন্ন দেশে টুরিস্ট ভিসা নিয়ে সেই কাজে যায়। তিনি অনেক বার আমাকে ও আমার মেয়েকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য নানা প্রলভন দেখায়। তার কথায় রাজি না হওয়ার কারনে তুচ্ছ একটি বিষয়কে ইসু বানিয়ে আমাদের সাথে ঝগড়া করে। এর পূর্বেও দুই দিন ঝগড়া করতে চাইলে আমরা কথা না বলাতে সুযোগ পায়নি। কিন্তু ঐ দিন কথা বলাতে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে সুমন ও তার ভাই আমাকে এবং আমার মেয়েকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে জখম করে।
স্থানীয়রা আমাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। তিনি আরও বলেন, সুমন সরকারি জমি দখল ও সুদের ব্যবসা করে। তার সাথে অবৈধ অস্ত্র থাকায়, স্থানীয়রা ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পায় না। তার বাবা ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি, ছোট ভাই উজ্জ্বল একজন মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ি। তাদের হংকারে এলাকায় কেউ কথা বলতে সাহস পায়না।
নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক একব্যক্তি একুশে মিডিয়াকে বলেন, নতুন যে আলিশান বাড়িটি নির্মান করছে সে জায়গাটি নোয়াব আলী বেপারীর ছেলে সেলিম বেপারীদের। একলাখ টাকার বিনিময়ে ঐ বাড়িটি বন্ধক রাখে সুমনের কাছে। সময়মত টাকা ফেরত না দিতে পারায় তারা পেশী শক্তি, লোকবল ও টাকার জোরে ঐ বাড়িটি লিখে নেয়। পরে এক লক্ষ টাকার বদলে তিন লক্ষ টাকা দিতে চাইলেও জায়গাটি তাদের ফেরত দেয়নি। এছাড়া সেলিমের ভাইয়ের বাড়িও ঐ একই কৌশলে দখল করে নিয়েছে তিনি। এছাড়া মালিকান্দার (শ্মশান ঘাট) এলাকায় সরকারি খাসজমি দখল করে দোকানঘর নির্মানের অভিযোগ ও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
এবিষয়ে সুমনের কাছে জানতে চাইলে তিনি একুশে মিডিয়াকে বলেন, আমি টাকা পাবো সেই টাকা চাইলে তার সাথে আমার ঝগড়া হয়। এক পর্যায় তিনি আমাকে লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করে। পরে আমার স্ত্রী শিউলী আপাকে মোবাইল ফোন দিয়ে মাথায় আঘাত করে। এতে তিনি আঘাত প্রাপ্ত হয় এবং আমাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করে।
স্মাগলিং ও জমিদখল সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি একুশে মিডিয়াকে অস্বীকার করে বলেন, আমি বিদেশে ড্রাই ফিস, কসমেটিকস, মোবাইল ফোন ইত্যাদি হ্যান্ডক্যারি ব্যবসা করি। সরকারি জমি দখল বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা সমাজে ভাল অবস্থানে রয়েছি। তাই অনেকের ভাল লাগে না। আমার সম্পর্কে যা শুনেছেন তা সব মিথ্যা।
এবিষয়ে দোহার থানা পুলিশের এস. আই নাসিরের কাছে জানতে চাইলে তিনি একুশে মিডিয়াকে বলেন, হ্যা সুমন (৩৮) ও উজ্জ্বল (৩৬) উভয় পিতা মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করতে আমি দুই দিন গিয়েছি কিন্তু তাদের বাড়িতে পাওয়া যায়নি।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment