একুশে মিডিয়া, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার বোগলাবাজার ইউনিয়নের বোগলাবাজার হতে হকনগর বাজার আলমখালী- ক্যাম্পেরঘাট চিলাই নদীতে ব্রীজ না থাকায় এখানাকার শিক্ষার্থীসহ প্রায় ৩০ টি গ্রামের ৫০ হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। নদীর দু’পারে দুই ইউনিয়ন বোগলাবাজার ও বাংলাবাজার ইউনিয়নের মানুষের পারাপারের একমাত্র ভরসা একটি মাত্র বাঁশের সাঁকো। এই নদীতে এই স্থানে ব্রীজের অভাবে এখানকার মানুষ নিজ উদ্যোগে বাঁশের সাঁকো তৈরী করে স্কুল কলেজগামী ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে অসুস্থ লোকেরা জীবনের ঝুকিঁ নিয়ে এই সাঁকো দিয়ে পারাপার করে বোগলাবাজার ও উপজেলা সদর এবং বাশতলা শহীদ স্মৃতি মিনারে যাতায়াত করতে হয়। আবার বর্ষা মৌসুমে এই অঞ্চলের মানুষের এপার ওপার চলাচলের একমাত্র মাধ্যম হলো ছোট বারকি নৌকা। প্রতিনিয়ত এই পথে যাতায়াতে সাঁকো পারাপারের সময় পথচারীরা সাঁকো ভেঙ্গে নদীতে পড়ে অনেক দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়েছে।
স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪৮ বছরে বিভিন্ন এলাকায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান ও যোগাযোগ ব্যবস্থার পরিবর্তন হলেও এখানে ব্রীজের অভাবে এখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অন্যান্য উন্নয়ন থমকে গেছে। ব্যবসা বাণিজ্যেও তেমন একটা প্রসার ঘটেনি।
এখানে ব্রীজ না থাকায় কৃষকেরা তাঁদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য হাট-বাজারে নিতে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। বর্ষাকালে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে টাকা দিয়ে ছোট নৌকায় এবং বছরের অন্যান্য সময় সাঁকোয় চলাচল করতে হয় হাজার হাজার মানুষের। দুইপাড়ের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে এ ভোগান্তি আরও বেশি। জানা যায়, নদীর পূর্বপারে অবস্থিত বোগলাবাজার ইউনিয়নের আলমখালী, বাংলাবাজার ইউনিয়নের, চিলাইপাড়, পুরান বাশতলা, চৌধুরী পাড়া, বাশতলা, মৌলারপাড়, নতুন বাশতলা, কলোনী, ঝুমগাও, পেকপাড়া, চৌধুরীপাড়া বাজার, হকনগর বাজার, বাশতলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাশতলা চৌধুরীপাড়া শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়, ইসলামপুর ছিদ্দিকিয়া দাখিল মাদ্রাসা ও শহীদস্মৃতি সৌধ এবং পশ্চিম পারে বোগলাবাজার ইউনিয়নের ক্যাম্পেরঘাট, ইদুকোনা, বাগানবাড়ি, পেস্কারগাও, বোগলাবাজার, কৈয়াজুরি,ধর্মপুর,গাছগড়া, রাজাপুর,কাঠালবাড়ি, নোয়াডর, বাঘমারা বোগলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, বগুলা স্কুল এন্ড কলেজ, পেশকারগাও ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা, ইদুকোনা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ক্যাম্প, বোগলাবাজারসহ প্রায় ৩০টি গ্রাম।
স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ জরুরী কোন রোগীকে হাসপাতালে নিতে এবং সাধারণ মানুষকে বর্ষায় নৌকা ও খরা মৌসুমে বাঁশের তৈরি সাঁকো দিয়ে পারাপার করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। একটি ব্রীজের অভাবে এলাকার কৃষকরাও তাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না। এলাকাবাসী জানায়, ধান চাল, সবজি ও গরু বিক্রির ঐতিহ্যবাহী হাট বলেও পরিচিত বোগলাবাজার। এখানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)ক্যাম্প, বগুলা স্কুল এন্ড কলেজ, পেশকারগাঁও আলিম মাদ্রাসা, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, কিন্ডারগার্টেন স্কুল ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) অফিস রয়েছে। তারপরেও চিলাই নদীর ক্যাম্পেরঘাট আলমখালীতে ব্রীজ নির্মাণ হচ্ছে না।
বোগলাবাজারের ব্যবসায়ী আবুল হোসেন বলেন, বোগলাবাজার হতে হকনগরবাজার আলমখালি-ক্যাম্পেরঘাট চিলাই নদীতে দীর্ঘদিন ধরে একটি ব্রীজ নির্মাণের দাবি করে আসছে এলাকাবাসী। তিনি বলেন, এখানে ব্রীজ হলে দুইপারের মানুষের যেমন চলাচলের সুবিধা হতো তেমনি বোগলাবাজারে ঐ এলাকার ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের যাওয়া আসা করতে সুবিধা হতো।এখানে ব্রীজ হওয়া এখন সময়ের দাবি বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এ ব্যাপারে বোগলাবাজার ইউপি চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম জুয়েল জানান, বর্ষা মৌসুমে নদীর দুই পারের ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুল যাতায়াত করতে খুবই সমস্যা। তাছাড়া এলাকার কৃষিপণ্য নিয়ে পারাপারে এলাকাবাসীকে নানা দূর্ভোগ পোহাতে হয়। এলাকাবাসীর স্বার্থে ওই স্থানে একটি ব্রীজ নির্মাণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্রীজ নির্মাণ হলে এলাকার পিছিয়ে পড়া মানুষগুলোর উন্নয়ন হবে বলে তিনি জানান।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment