সর্বত্র চলছে মহামারি করোনার তাণ্ডব। এর মধ্যে সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজারে দেখা দিয়েছে আরেক ‘মহামারি’র উৎপাত। এই ‘মহামারি’র নাম গরুচুরি! মহামারি যেমন সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে, তেমনি গরুচুরিও দোয়ারাবাজারের সর্বত্র এক আতঙ্কের নাম হয়ে ওঠেছে।
জানা গেছে, আসন্ন ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারের পল্লীতে সক্রিয় উঠেছে গরুচোর সিন্ডিকেট। কৃষকরা রাতভর গোয়ালঘর পাহারা দিলেও থামেনি গরুচুরি। গত একমাসে অন্তত অর্ধশতাধিক গরু চুরি হয়েছে। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতেও উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের দ্বীনেরটুক গ্রামের আব্দুল মছব্বির ও কবির মিয়ার আড়াই লক্ষ টাকা মূল্যের ২টি বলদ ও একটি ষাড় চুরি হয়েছে।
এর আগে একই গ্রামের মৃত ফজল মকদ্দুছের ছেলেসহ বিভিন্ন কৃষকের কয়েক লাখ টাকার গরু চুরি হয়।
গত রমজান মাসের শেষ দিকে একই ইউনিয়নের বীরেন্দ্রনগর গ্রামের আব্দুন নুরের ছেলে দিলোয়ার হোসেন ও মৃত অজি উল্লাহর ছেলে মুক্তিযোদ্ধা মদরিছ আলীর ৬টি গরু হয়।
একই গ্রামের জুবেদ আলীর একটি দুগ্ধজাত গাভী দিনের বেলা মাঠ থেকে চুরি হয়ে যায়। এ নিয়ে গত এক মাসে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অন্তত অর্ধশতাধিক গরু চুরি হয়েছে বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন।
এলাকার ভুক্তভোগী কৃষকরা জানান, আগামী আমন ফসলের বীজতলা তৈরির এখনই সময়। কিন্তু হালের বলদ চুরি হওয়ায় বীজ বপন করা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। একদিকে করোনার থাবা, অপরদিকে উপার্জনের পথ বন্ধ থাকায় হালের বলদ ক্রয় করে ধান ফলানো দূরের কথা, পরিবার পরিজন নিয়ে খেয়েপরে বেঁচে থাকাটাই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই বছরের প্রধান ফসল আমনের উৎপাদন অনিশ্চিত ভেবে কৃষকরা দিশেহারা বোধ করছেন।
অহরহ গরু চুরির ব্যাপারে দোয়ারাবাজার থানার ওসি আবুল হাশেম একুশে মিডিয়াকে বলেন, উপজেলার প্রতিটি এলাকায় রয়েছে আমাদের পুলিশিং কমিটির সদস্য। তাদেরকে নিয়ে প্রতিটি ইউনিয়নে আইনশৃঙ্খলার উন্নয়নে মিটিংও হয়ে থাকে। তা স্বত্ত্বেও গরুচুরি অব্যাহত রয়েছে।
পুলিশিং কমিটির সদস্যসহ স্থানীয়দের সহযোগিতা পেলে শুধু গরুচুরিই নয়, সব ধরনের অপরাধই দমন করা সম্ভব বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, স্থানীয় মাধ্যমের সহযোগিতা ছাড়া কোনো চুরি বা অপরাধ সংঘটিত হতে পারে না। তাই সঠিকভাবে এদের চিহ্নিত করে আমাদেরকে জানান।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment