একুশে মিডিয়া, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের ছাতকে খুরমা উত্তর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল আলিম দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে সরকারী বাসায় বসবাস করে আসছেন।
উপজেলা ভূমি অফিসের পূর্বের বাসাটি তার নামে বরাদ্ধ দেওয়া হয়। সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারিদের জন্যে বরাদ্ধকৃত বাসায় সাধারন মানুষ থাকার নিয়ম না থাকলেও ২০১৪ সালের পর স্থানীয় ভাবে ত্রাশ সৃষ্টি করে আব্দুল আলিম সরকারী বাসা বরাদ্ধ নিয়ে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে বহাল তবিয়তে রয়েছেন অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, আব্দল আলিম ২০১৬ সালে অনুষ্টিত ইউপি নির্বাচনে খুরমা উত্তর ইউনিয়নে বিএনপি দলীয় ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে প্রতিদন্ধিতা করেন। ঐ নির্বাচনে মাত্র ৬০ টি ভোট পেয়ে সমালোচিত হন তিনি।
নির্বাচনে পরাজয়ের পর লোকলজ্জায় বেশ কিছু দিন আত্মগোপন করে ছিলেন। এ ছাড়াও আব্দুল আব্দুল আলিম এলাকায় পরচর্চাকারী হিসাবে বেশ পরিচিত। গিবতকারী, দরিদ্রদের নিন্দুক ও একের কথা গুপ্তচর হিসাবে অন্যের কাছে তুলে ধরা (চোগলখুরি) তার কাছে পেশা হিসাবে পরিণত হয়েছে। কোন চাকরি বা ব্যবসা-বানিজ্য ছাড়াই শহরে দাপটের সঙ্গে বসবাস করে আসছেন। ছেলে-মেয়ের লেখা-পড়াসহ পরিবারের বরণপোষন যোগান উৎস নিয়ে সর্বমহলে চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝর।
এক সুত্র জানায়, ছাতক উপজেলা পরিষদ থেকে ইতোমধ্যে সরকারী বাসা খালি করে দেওয়ার জন্য কয়েকবার নোটিশ করা হয়েছে। কিন্ত এসব কিছুর তোয়াক্কা-ই করছেন না আব্দুল আলিম। স্থানীয়দের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে আব্দুল আলিমের কুঠির জোর কোথায় ? আরো জানা যায়, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল সাংবাদিক পরিবারের ভিকটিম এক শিক্ষিকার নাম দিয়ে তাহার অজ্ঞাতসারে ভূয়া ফেইসবুক একাউন্ট চালু করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অশালীন শব্দ বাক্য ব্যবহার এবং আপত্তিকর ছবিসহ মানহানীকর তথ্য প্রকাশ করা হয়।
ভিকটিমের অজ্ঞাতসারে তাহার স্থিরচিত্র (ফটো) সংযুক্ত ও জাল কাগজপত্র সৃজন সংগ্রহ ও সরবরাহের মাধ্যমে পর্ণোগ্রাফি উৎপাদন করত ভিকটিমকে অন্যায়ভাবে উত্যোক্ত করে ব্লাকমেইল করার চেষ্টা করেন আব্দুল আলিম। এ ঘটনায় ৫ মে ২০১৪ ইং তারিখে সুনামগঞ্জের আমল গ্রহণকারী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ছাতক জোনে ১৪ নং মামলা দায়ের করেন ভূক্তভোগী ঐ শিক্ষিকা। আদালতের নির্দেশে পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ এর ৮ (১),(২),(৩),(৪) ও (৫ক) ধারায় ছাতক থানায় মামলাটি এফআইআর হয়।
সাংবাদিক পরিবারের ভিকটিম শিক্ষিকার বিরুদ্ধে প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়াসহ ফেইসবুকে অপপ্রচার এবং উদ্দেশ্যমূলকভাবে ব্লাকমেইল এর অভিযোগে আব্দুল আলিম সহ ৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জসীট নং ১৫১ তাং ২৭/৮/২০১৪ইং (অভিযোগপত্র) দেন ছাতক থানা পুলিশ।
অভিযোগপত্রে ছাতক উপজেলার খুরমা উত্তর ইউনিয়নের গদারমহল গ্রামের মৃত. মছব্বির আলীর পুত্র আব্দুল আলিম সহ ৪ জনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমানিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। এর পর পরচর্চাকারী থেকে তিনি পর্ণোগ্রাফি আব্দুল আলিম হিসাবে পরিচিতি লাভ করেন। পর্ণোগ্রাফি আব্দুল আলিমের বিরুদ্ধে অন্তহীন অভিযোগ রয়েছে। করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতেও ব্লাকমেইল করার অপকর্ম অব্যাহত রেখেছেন তিনি।
গত মার্চ মাসের শেষের দিকে জাতীয় দৈনিক ”ঢাকা প্রতিদিন” এর সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি, দেশের শীর্ষ স্থানীয় অনলাইন সংবাদ মাধ্যম “ সংবাদ প্রতিক্ষন”, এসটিভি নিউজ বিডি এর সিলেট বিভাগীয় প্রধান ও বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ) ছাতক শাখার সভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগ ছাতক উপজেলা শাখার প্রতিষ্টাতা আহবায়ক ও সুনামগঞ্জ জেলা শাখার তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক শামীম আহমদ তালুকদার এর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে নামে বেনামে আইডি থেকে অপপ্রচার করে ব্লাকমেইল করার অপচেষ্টা করে ব্যর্থ হন পর্ণোগ্রাফি আব্দুল আলিম।
জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে গড়া সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগ ও সাংবাদিকদের জাতীয় নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ)’কে নিয়ে কুটুক্তি করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। উর্দ্ধতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী/কার্য ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে ছাতক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শিক্ষাগত যোগ্যতা ৫ম শ্রেণী পাশ আব্দুল নূরের বিরুদ্ধে ভোলাগঞ্জ-ছাতক রোপওয়ের ট্রেসেল সুরক্ষা বোল্ডার-পাথর উত্তোলন করে বিক্রি, বাসা বাড়ি, দোকান, বিভিন্ন স্থাপনা, নদীর পারের ড্রাম্পিং সাইট বহিরাগতদের কাছে ভাড়া দিয়ে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাত করার অভিযোগ উঠেছে। আব্দুল নূরের অনিয়ম ও দূর্নীতি বিষয়ে জাতীয় দৈনিক “ঢাকা প্রতিদিন” ও একাধিক অনলাইন পোর্টালে প্রতিবেদন করেন সাংবাদিক শামীম আহমদ তালুকদার।
এর পর থেকে ৫ম শ্রেনী পাশ উর্দ্ধতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল নুরকে রক্ষায় মরিয়া হয়ে উঠেন আব্দুল আলিম। অভিযোগ উঠেছে ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে ছাতক সরকারী কোটি কোটি টাকার সম্পদ লুট-পাটে কর্মহীন বেকার পর্ণোগ্রাফি আব্দুল আলিম জড়িত রয়েছেন। এ জন্যই সরকারী সম্পদ রক্ষা ও উদ্ধারের পক্ষে কথা না বলে আব্দুল নূরের পক্ষে সাফাই দিচ্ছেন।
স্থানীয়দের দাবী সরকারী সম্পাদ লুট-পাটে আব্দুল নূরের সঙ্গে আব্দুল আলিম জড়িত রয়েছেন কিনা সঠিক তদন্তে বেরিয়ে আসবে থলের বিড়াল। এ বিষয়ে শামীম আহমদ তালুকদার বলেন, আমি বিষয়টি থানা পুলিশকে মৌখিক ভাবে অবগত করেছি। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরেই আব্দুল আলিমের বিরুদ্ধে. ৫০ লাখ টাকার মানহানী মামলা করবেন বলে জানান তিনি।
উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) ও সরকারি বাসা বরাদ্ধ কমিটির সেক্রেটারী আবুল মুনসুর বলেন, আব্দুল আলিম সরকারী বাসায় থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি আরো বলেন আব্দুল আলিম অনেক দিন ধরে এই বাসায় থাকছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকারী বাসায় সাধারন মানুষ থাকার কোন নিয়ম নেই। সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবেন বলে জানান তিনি।
ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো. গোলাম কবির এর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যস্ত থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। ছাতক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফজলুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি রিসিব করেননি।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment