একুশে মিডিয়া, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জের কৃতীসন্তান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যু সংবাদ সিরাজগঞ্জে পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গে সিরাজগঞ্জ শহর পুরোদমে স্তব্ধ হয়ে যায়।’
আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মাঝে নেমে আসে গভীর শোকের ছায়া। বেলা সাড়ে ১১টা থেকে প্রচণ্ড বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে একে একে দলের নেতাকর্মীরা আসতে থাকেন জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে। এ সময় অনেকেই তাদের চোখের পানি সম্বরণ করতে পারেননি। শত বছরের আর এমন নেতা সৃষ্টি হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন তারা’।
এ সময় জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ বিন আহাম্মেদ বলেন, আলহাজ মোহাম্মদ নাসিম শুধু জাতীয় নেতাই ছিলেন না, তিনি ছিলেন সিরাজগঞ্জ জেলার অভিভাবক। আজ আমরা সিরাজগঞ্জবাসী অভিভাবকহীন হয়ে গেলাম। জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জিহাদ আল ইসলাম বলেন, মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে গেল।’
মোহাম্মদ নাসিম তার সাংগঠনিক যোগ্যতা, দক্ষতা ও কারিশমা দিয়ে ১৪ দলকে সুসংগঠিত রেখেছিলেন। মাঝে মধ্যে দলে কিছু ভুল বোঝাবুঝি হলে তিনি তার দক্ষতায় সমাধান করেছেন। তার চলে যাওয়া মেনে নেয়া অতিকষ্টের। সাবেক যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুর উফ পান্না বলেন, আলহাজ মোহাম্মদ নাসিম আমাদের রাজনৈতিক শিক্ষাগুরু। ছাত্র, যুব ও আওয়ামী লীগের রাজনীতি আমরা তার কাছ থেকেই শিখেছি। মোহাম্মদ নাসিমের বাবা জাতীয় নেতা শহীদ ক্যাপ্টেন এম. মনসুর আলীর যেমন বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বেঈমানী করেননি, তেমনি তিনিও আওয়ামী লীগ তথা শেখ হাসিনার সঙ্গে বেঈমানী করেননি। তার মৃত্যুতে শুধু সিরাজগঞ্জবাসী নয়, সারা উত্তরবঙ্গের মানুষ অশ্রুভেজা কণ্ঠে তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছেন’।
পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দানিউল হক মোল্লা বলেন, আলহাজ মোহাম্মদ নাসিম সিরাজগঞ্জের জন্য যে উন্নয়ন করে গেছেন তা আর কোনো নেতা পারবেন বলে সিরাজগঞ্জবাসী মনে করে না। তিনি সিরাজগঞ্জে হাজার হাজার কর্মী সৃষ্টি করেছেন। তিনি আমাদের অভিভাবক ছিলেন। তার মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। আল্লাহ তাকে বেহেস্ত নসিব করুন। জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বাবু বিমল কুমার দাস বলেন, আলহাজ মোহাম্মদ নাসিম আওয়ামী লীগের একজন পরীক্ষিত নেতা। তার মৃত্যুতে সিরাজগঞ্জবাসীর সঙ্গে উত্তরবঙ্গ তথা সারা বাংলাদেশ শোকাহত।’
তার মৃত্যুতে আমরা অভিভাবকহীন হয়ে পড়লাম। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ আব্দুল লতিফ বিশ্বাস বলেন, আলহাজ মোহাম্মদ নাসিম রাজনৈতিক জীবনে রাজপথে সব সময়ই সক্রিয় ছিলেন। রাজনৈতিক আন্দোলনের কারণে বিভিন্ন সময় নির্যাতন সইতে হয়েছে তাকে। রোষানলের শিকার হয়েছিলেন ১/১১ সরকারেরও। কিন্তু আওয়ামী লীগ ও জাতির জনকের রাজনীতির প্রশ্নে তিনি ছিলেন সব সময়ই আপোষহীন। রাজনৈতিক দুরদর্শিতা ও প্রজ্ঞার কারণে তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার আস্থাভাজন। তিনি ছিলেন আমাদের অভিভাবক। তার অভাব কোনোদিনও পূরণ হবে না’।
তিনি নেতার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে তার শোকসন্তপ্ত পরিবার যেন এ শোক সইতে পারে সে জন্য মহান রাব্বুল আলামীনের কাছে প্রার্থনা করেন। এ সময় তিনি জানান, আলহাজ মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে জেলা আওয়ামী লীগ ৭ দিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- জেলার ১২টি সাংগঠনিক থানায় ৭ দিনব্যাপী কালো পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাজ ধারণ ও জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ৩ দিনব্যাপী কুরআন খতম।’
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment