সদর উপজেলার ১০ নং ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের শিয়ালিয়া গ্রামে জমিজমা
নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ! অনেক বার শালিশি ব্যাবস্থার মাধ্যমেও কোন আপোষ
মিমাংসা করতে পারেনি হযরত আলীকে। এই বিষয়কে কেন্দ্র করে কবির খান এর ছেলে
রাব্বীকে খালের ভিতর পানিতে ফেলে হত্যার করেছে বলে অভিযোগ মা-বাবা, চাচা,
দাদি, সহ পরিবার,ও স্বজনদের।
শনিবার
সকাল ১১ টায়।
বাবুগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় কবির খান
কে। সেটা নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে এরমধ্যে ছেলে রাব্বি নিখোঁজ হয়। অনেক
খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না।
ঘটনাস্থলে
গিয়ে জানা গেছে, হযরত আলী পিতা চান খান, লুৎফুর পিতা হযরত আলী,মতি পিতা
নূর মোহাম্মদ, আবুকাশেম পিতা হোসেন আলী, এদের সাথে বিগত দিন থেকে জমিজমা
নিয়ে কবির খান এর সাথে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। একমাত্র ছেলে রাব্বীকে হারিয়ে
শোকের মাতনে ভাসছে পুরো বাড়ি।
প্রত্যেকেই কানতেছে কেউ নাটি বলে কেউ ভাই
বলে কেউ কাকা বলে সবাই দুঃখে কাতর হয়ে আছে শুধু রাব্বি রাব্বি বলে। এমনটা
দেখে এলাকাবাসিও কান্নায় ভেঙ্গে পরছে!
ঘটনার
দিন, মোঃ হযরত আলী, মতি, ও আবু কাশেম বাবুগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে
কবিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়। এবং এস আই রফিক, মোঃ কবির কে ফোন দিয়ে ফারিতে
ডেকে নিয়ে যায়। কবির খান সেখানে থাকাকালীন ফোন আসে তার ছেলে রাব্বি
অসুস্থ কিন্তু এসআই রফিক তাকে কোনমতেই যেতে দিচ্ছিল না। ছেলের অসুস্থতার
কথা শুনে বাবা কবির পুলিশের বাধা না মেনেই দৌরে চলে আসে। পাগলের মতো এসে
দেখে তার ছেলেকে নিয়ে বরগুনা সদর হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা করেছে তার
বোনের ছেলে বসির।
বরগুনা
সদর হাসপাতালে নিয়ে আসার পর কর্তব্যরত ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করে।
ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয় ময়নাতদন্ত শেষে লাশ তার স্বজনদের
কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এলাকাবাসির নামে বলেন, আমার
সব কিছু দেখে-শুনে মনে হয় যে রাব্বিকে হত্যা করা হয়েছে! তবে আইনের সঠিক
তদন্তের মাধ্যমেই হয়তো সত্যটা বের হয়ে আসবে আসা করি দুই বোন ও দাদি বলেন,
রাব্বি আমাদের খুব আদরের ছিলো, অনেক আদর করতাম! আমাদের একটা মাত্র ভাই তাকে
যারা পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করছে! আমরা তাদের বিচার চাই স্থানীয় মেম্বার
বলেন, আমি ফোনে খবর পায়ে রাব্বিকে দেখে আসছি! এবং অনেক আগ থেকেই হযরত আলি,
লুৎফুর ও কবির দের মধ্যে জমিজমা নিয়ে বিরোধ! শালিশি করা হলেও হযরত আলি
কখনোই আপোষ-মিমাংসায় আনা সম্ভব হয়নি।
রাব্বির চাচা
বলেন, রাব্বিকে অনেক খোজাখুজির পরে লুৎফুরের বাড়ির সামনে খালে ভাসতে দেখে
ওখান থেকে উঠিয়ে নিয়ে এসে দেখি কোন শারাশব্দ নেই! পরে হাসপাতাল পাঠিয়ে দেই।
রাব্বির
মা কান্নায় কাতেঁর হয়ে অসুস্থ অবস্থায় বলেন, আমার আদরের বাবাকে যারা হত্যা
করেছে আমিতাদের বিচার চাই কবির খান বলেন, পরিকল্পিত ভাবে আমাকে পুলিশ
ফাঁড়িতে ডেকে নেওয়া হয়েছে। আমি বার বার আমার ছেলের অসুস্থতার কথা শুনে
আসতে চাইলেও আসতে দেয়নি এস আই রফিক, আমার কাছে টাকা চাইছে আমি টাকাও
দিয়েছি দারোগার কাছে,তারপরও আমাকে আটকে রাখছে কেন? এবং এদিকে আমার ছেলেকে
পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমার ছেলেকে ওরা হত্যা করেছে, আমি আমার
ছেলে হত্যার বিচার চাই। আমি থানায় মামলার জন্য গেছিলাম কিন্তু মামলা
নেয়নায়! বলছে পরে মামলা নিবে! আমি আবারো মামলার জন্য যাবো! আমার একটা মাত্র
ছেলে ছিলো! যারা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে আমি ওদের বিচার চাই।ফাঁড়ির
অফিসার ইনচার্জ রনজিত কুমার সরকার বলেন,জমিজমা নিয়ে অনেক আগ থেকেই হযরত
আলী ও কবির খানের ভিতরে ঝামেলা চলে আসছে। এই জামেলা মেটাতে দুই পক্ষকে
ফাঁড়িতে ডাকা হয়েছিল। কোবির খান যে অভিযোগ দিয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
বরগুনা
সদর থানার অফিসার ইনচার্জ তারিকুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে আমি যতটুকু জানি
জমিজমা নিয়ে দু'পক্ষের সাথে অনেক আগ থেকেই দ্বন্দ্ব চলে আসছে, এই বিষয়
নিয়ে তাদের সাথে সবসময় ঝগড়াঝাটি হয়। পানিতে ফেলে হত্যা করার বিষয়টি
জানতে চাইলে বলেন, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি অভিযোগ পেলে সঠিক তদন্তের
মাধ্যমে বিষয়টি দেখা হবে।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment