মোঃ মনিরুল ইসলাম, কুতুবদিয়া (কক্সবাজার):
সাগর
কন্যা দ্বীপ কুতুবদিয়ায় প্রিয় বিদ্যালয়কে বন্ধের দিনেও নিজের ঘরের মত করে
পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা রাখেন ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিজেই। উপজেলায়
ছোট-বড় সরকারি-বেসকারি অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। তাদের মধ্যে হঠাৎ একটি
বিদ্যালয়ে সকাল ১১টায় এক ভদ্রলোককে বিদ্যালয়ের সিড়ি, আঙ্গিনাসহ বিভিন্ন
স্থান পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করতে দেখাযায়। পরিস্কারের সময় তার হাতে
একটি ঝাড়ু ও বেলচা রয়েছে। আমি তাকে বেশ কিছুক্ষণ দূর থেকে লক্ষ করি। খুবই
মনোজোগ সহকারে বিদ্যালয়টি পরিস্কারের কাজ করছেন তিনি । কিছুক্ষণ তার দৃশ্য
দেখার পর পাশে গিয়ে ওই ভদ্রলোকের পরিচয় জানতে চাইলে তিনি অত্র বিদ্যালয়ের
প্রধান শিক্ষক বলে জানান। মহামারি করোনা’র কারণে সারাদেশে সরকারের
নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এই বন্ধের মাঝেও নিয়মিত
একাএকা বিদ্যালয়কে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করে রাখেন প্রধান শিক্ষক নিজেই।
শিক্ষার একটি আদর্শ স্থান বিদ্যালয়। যেখানে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা গ্রহণ করে ভবিষ্যতের জন্য নিজেদের উত্তমরূপে গড়ে তোলে। শিক্ষা প্রতিটি মানুষের জীবনের পাথেয়। একটি বিদ্যালয়ের পরিবেশ শ্রেণী কক্ষ, আঙ্গিনা যদি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকে, তবে সেটা সকলের কাছেই দৃষ্টি নন্দন হয়।
একজন আদর্শ শিক্ষকের গুণাগুণ বিচারের ক্ষেত্রে তাঁর দায়িত্ববাধে ও কর্তব্যনিষ্ঠা বিশেষভাবে বিবেচ্য। তিনি সঠিক সময়ে স্কুলে আসেন এবং কোমলমতি শিশুদের ক্লাস নেন। তিনি কোমলমতি শিশু ছাত্রছাত্রীদের পারিবারিক খোঁজ-খবরও রাখেন। শৃঙ্খলাকে তিনি সর্বাধিক গুরুত্ব দান করেন। সদাচরণকে তিনি সভ্যতা-সংস্কৃতির প্রকাশ হিসেবে বিবেচনা করেন। সততা ও আন্তরিকতাকে তিনি জীবনের সাফল্যের উপায় ভাবেন। শ্রেণিকক্ষে তিনি প্রায় সবাইকে নাম ধরে ডাকেন। তার এ ধরনের দায়িত্ব ও কর্তব্যপরায়ণতা তাঁকে এলাকার জনসাধরণের মাঝে অধিকতর প্রিয় করে তুলেছে এলাকার শিক্ষার্থী ও ব্যক্তিবর্গ সুত্রে জানায়।
প্রিয় বিদ্যালয়কে প্রাণের চেয়েও বেশি ভালবাসার সেই ভদ্রলোকটি হচ্ছেন, কুতুবদিয়া উপজেলার চৌমুহনী বাজার সংলগ্ন “লেমশীখালী সেন্ট্রাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম।
প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন- অত্র বিদ্যালয়ে ১ম শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের সুনামের সহিত পাঠদান দিয়ে আসছে। তিনি ১৯৯০ সাল থেকে অদ্যবধি পর্যন্ত বিদ্যালয়ে কর্মরত আছেন। বর্তমানে উক্ত বিদ্যালয়ে তিনিসহ তিনজন শিক্ষক রয়েছেন। তিনটি শিক্ষক পদ এবং ১টি দপ্তরীর পদ শুন্য আছে। শিক্ষক সংকটের কারণে অনেক সময় তাদের ক্লাস চালিয়ে নিতে সমস্যা হয়। শুন্য পদগুলো পূরণ হলে সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পরবে বলেও জানান। উক্ত প্রতিষ্ঠানে কোন দপ্তরী বা পিয়ন না থাকায় তাদের কাজগুলো শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ তাকেই করতে হয়।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment