ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার দুটি ইউনিয়নে চলছে এখন শোকের মাতম। স্বজন হারানো কান্নায় ভারি হয়ে উঠছে সীমান্তের কয়েকটি গ্রাম। ডুকরে ডুকরে কান্নার আওয়াজ আসছে ঘর থেকে। সে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য।
রোববার সকালে ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার মাঝকান্দি এলাকায় সালতা নামক স্থানে মর্মান্তিক এক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন একই পরিবারের ৬জনসহ মোট ৯জন। সবার বাড়ি মহেশপুর উপজেলার বাশবাড়িয়া ও কাজিরবেড় ইউনিয়নে।
নিহতরা হলেন ঝিনাইদহ জেলা আইনজীবী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক ও বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বাগানমাঠ গ্রামের এড আব্বাস আলী, তার ভাগিনা মাইক্রো চালক আল আমিন, ভৈরবা গ্রামের বৃদ্ধ মিয়াজান বিবি (৬৬), মেয়ে আমেনা খাতুন, পুত্রবধু কুটি বিবি, পোতা জামাই জুয়েল হোসেন, পুতনি মরিয়ম নেছা ও তার ৫ বছরের শিশু এবং নিকটাত্মীয় সামন্তা গ্রামের নজরুল ইসলাম।
খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক মন্ডল জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মিয়াজান বিবির ছেলে মোহর আলী ২০১৪ সালে স্ত্রী, ছেলে মেয়ে রেখে ঢাকার সাভারে বসবাস করতেন। সেখানে তিনি হিজড়াদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে তাদের মতোই জীবন যাপন শুরু করেন।
হিজড়াদের দলে থেকে বিপুল সম্পদের মালিক হন মোহর আলী। ব্যাংকে এই টাকা গচ্ছিত আছে। ২০২০ সালে মোহর আলী মারা যান। ছেলের এই টাকার মালিকানা দাবী করেন বৃদ্ধা মিয়াজান বিবি। আইনগত পক্রিয়া শেষ করে দুইজন আইনজীবী নিয়ে রোববার মিয়াজন বিবির পরিবার ঢাকার সাভারে যাচ্ছিলেন।
সকাল ৭টার দিকে তাদের বহনকৃত মাইক্রোবাসটি মধুখালী উপজেলার মাঝকান্দি এলাকায় দুর্ঘটনায় পতিত হয়। একটি ট্রাকের সঙ্গে মাইক্রোবাসটির সংঘর্ষে দুমড়ে মুচড়ে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়।
এতে ঘটনাস্থলেই ৫ জন ও হাসপাতালে নেয়ার পর আরো ৩ জনের মৃত্যু হয়। এই মৃত্যুর খবর মহেশপুরের বাগানমাঠ, সামন্তা ও ভৈরবা গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে শোকের ছায়া নেমে আসে। দুর্ঘটনাস্থলে উপস্থিত মহেশপুর উপজেলা বিএনপির নেতা আনিছুর রহমান রিপন রোববার সন্ধ্যায় গনমাধ্যম কর্মীদের জানান, তারা লাশ নিয়ে মহেশপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। লাশের সঙ্গে নিহতদের আত্মীয়সজনও রয়েছেন।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment