একুশে মিডিয়া, রিপোর্ট:
সুদের টাকা দিতে না পারায় গাছে বেঁধে নির্যাতনের শিখার গৃহবধূ, বক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলায় সুদি শওকত ওসমান নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার (১৬ মার্চ ২০২১) চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের মোরাপাড়ায় এমন ঘটনাটি ঘটেছে।
নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূর নাম নুর আয়শা। তিনি ওই পাড়ার আলী আহমদের স্ত্রী। আলী আহমদ একজন দিনমজুর বলে জানা গেছে। নূর আয়েশাকে পুলিশি নিরাপত্তায় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
বুধবার (১৭ মার্চ) বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে পুলিশ শওকত ওসমানের বাবা জহির আহমদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়।ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, শওকত ওসমান একটি গাছের সঙ্গে শাড়ির আঁচল দিয়ে বেঁধে রাখেন নুর আয়শাকে।
এ সময় নুর আয়শা তার বাঁধন খুলে দিতে বলেন। কিন্তু নুর আয়শার আহবানে সাড়া না দিয়ে শওকত ওসমান তাকে কিল-ঘুষি মারতে থাকে। একপর্যায়ে নুর আয়শাকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে এবং চুলের মুটি ধরে টানতে থাকে। পরে স্থানীয় কয়েকজন নারী নুর আয়শাকে উদ্ধার করতে গেলে তাদেরকেও ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় শওকত।
বরইতলী ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার নিয়াজুল ইসলাম বাদল বলেন, ‘কয়েক মাস আগে নুর আয়শা স্বামীর চিকিৎসার জন্য শওকতের কাছ থেকে চার হাজার টাকা সুদের ওপর ধার নেয়। তিনি সুদ ও আসলসহ আট হাজার টাকা পরিশোধও করেন।
মঙ্গলবার দুপুরে শওকত আরো দুই হাজার টাকা দাবি করেন। কিন্তু নুর আয়শা ওই টাকা বৃহস্পতিবার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে তা মানতে নারাজ শওকত। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে শওকত ওসমান নুর আয়শাকে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর ও নির্যাতন করে।
বরইতলী ইউপি চেয়ারম্যান জালাল আহমদ সিকদার বলেন, ‘ঘটনাটি জানার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হওয়া গেছে। বিষয়টি ইউএনও ও ওসিকে জানানো হয়েছে।
হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মাহাতাবুর রহমান বলেন, ‘কয়েকমাস আগে শওকত ওসমানের কাছ থেকে সুদের ওপর চার হাজার টাকা ধার নেন ওই গৃহবধূ। এরই মধ্যে আট হাজার টাকা পরিশোধও করেন। আরো দুই হাজার টাকা দাবি করে শওকত ওই গৃহবধূকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করে।’চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকের মো. যুবায়ের বলেন, ‘ঘটনাটি ফেসবুকে দেখার পরপরই ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই।
অভিযুক্ত শওকতকে না পাওয়ায় তার বাবা জহির আহমদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। বিকাল ৫টা পর্যন্ত ঘটনার ব্যাপারে এজাহার দেয়া হয়নি। ভিকটিম পুলিশি সহায়তায় থানায় এসেছে। এজাহার পাওয়ামাত্রই মামলা করা হবে। শওকতকে ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এ ব্যাপারে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ বলেন, ‘আজ সকাল ১১ টায় ফেসবুকের মাধ্যমে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি আমার নজরে আসে। সাথে সাথে ফোনে ওসিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment