মোহাম্মদ ছৈয়দুল আলম:সংগ্রহিত ছবি: একুশে মিডিয়া
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষে ৫ জন নিহতের ঘটনায় জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে আলাদা ২ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার রাতে বাঁশখালী থানায় কর্মরত এসআই রাশেদ ও এস আলম গ্রুপের মালিকানায় নির্মাণাধীন ‘এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টে’র প্রধান সমন্বয়ক ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে বাঁশখালী থানায় পৃথক দুটি মামলাঅজ্ঞাতপরিচয় ৩ হাজার ৫শ ৬২ জনকে আসামি করা হয়েছে। কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কর্মরত শ্রমিকেরা জানান, তাদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি ও রমজান মাসে কর্মঘণ্টা কমানোসহ বেশকিছু দাবি নিয়ে তারা কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র ‘এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের’ মালিকপক্ষের সঙ্গে দেখা করতে গেলে দায়িত্বরত পুলিশ বাধা দেয়। এক পর্যায়ে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ গুলি চালায়। এতে পাঁচ শ্রমিক নিহত হন। আহত হন বেশ কয়েকজন। আহতদের প্রায় সবাই গুলিবিদ্ধ। স্থানীয়রা জানায়, ইফতার, নামাজ সূচি নির্ধারণ, বেতন ভাতা নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন স্থানীয় শ্রমিকরা। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে চায় কর্তৃপক্ষ। পুলিশকে খবর দেয়া হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। এরপর তুমুল সংঘর্ষ শুরু হয়, এই সংঘর্ষের ৫জন শ্রমিক নিহত ও অন্তত ৩০ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন।
শনিবার (১৭ এপ্রিল) বিকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমান ও চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে এ তথ্য সাংবাদিকদের জানান। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুমনী আক্তারকে প্রধান করে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কবির হোসেন, বিদ্যুৎ বিভাগের একজন প্রতিনিধি এবং শ্রম বিভাগের আরও এক প্রতিনিধি সদস্য হিসেবে আছেন। চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, ৫ জন নিহতের ঘটনায় চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে অতিরিক্ত ডিআইজি জাকির হোসেনকে। এছাড়া অন্য দুই সদস্য পুলিশ সুপার নেছার আহমেদ এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কবির হোসেন। কমিটিকে আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
এস আলম পাওয়ার প্ল্যান্টের সমন্বয়কারী আদিল বিল্লাহ আদিল বলেন, শ্রমিকদের বেতন ভাতা, শ্রম ঘণ্টা কমানো সহ ১২ দফা দাবি নিয়ে সমাবেশে সংঘর্ষে নিহত পরিবারকে ৩ লক্ষ টাকা ও আহত প্রতিজনকে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এর আগে শনিবার (১৭ এপ্রিল) সকালে বাঁশখালীর গণ্ডামারা ইউনিয়নের পশ্চিম বড়ঘোনায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষে ৫ জন নিহত হয়। আহত হয় অন্তত ৩০ জন।
এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাঁশখালী থানায় শনিবার রাতে উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাশেদ বাদী হয়ে আড়াই হাজার অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন এবং বিভিন্ন গাড়ীতে অগ্নিসংযোগের অভিযোগে এস আলম গ্রুপের মালিকানায় নির্মাণাধীন ‘এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টে’র প্রধান সমন্বয়ক ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে ২২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় ১ হাজার ৪০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। তবে এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিউল কবির বলেন, দুটির মামলার ব্যাপারে সতত্যা নিশ্চিত করে বলেন, আমরা আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য চেষ্টা করছি।
১৮এপ্রিল ২০২১ ইং# মোহাম্মদ ছৈয়দুল আলম সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক প্রকাশিত একুশে মিডিয়া’র সংবাদ।
No comments:
Post a Comment