একুশে মিডিয়া, মুক্তমত:
লেখক-সাংবাদিক হাফিজুর রহমান:
সাংবাদিকতা নিঃসন্দেহে একটা প্রশংসনীয় ও মর্যাদার পেশা। একজন প্রকৃত সাংবাদিক সর্বদা সত্য ও ন্যায় এর পক্ষে থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আজ আমাদের অর্থাৎ সাংবাদিকদের সত্য ও ন্যায়ের পথে চলার জন্য বিনামূল্যে কিনছি হাজারো শত্রু। শুধু যে শত্রুর সংখ্যা বাড়াচ্ছি ঠিক তা নয়। আমরা যে সকল সুবিধা বঞ্চিত মানুষের জন্য কাজ করি, তারা আবার আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষী ও বন্ধু হয়ে যাচ্ছে। তবে শত্রুর সংখ্যাই বেশি।
আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি যে, সাংবাদিকদের বড় শত্রু হচ্ছে এক শ্রেনীর স্বার্থান্বেষী সাংবাদিক। যারা কিনা নিজেদের স্বার্থে কাজ করে আর মূলধারার সাংবাদিকদের নিয়ে কানাকানি করে। তারা সর্বদা নিজের পকেট ভারী করতেই ব্যস্ত থাকে। মাত্র সাড়ে তিন বছরের সাংবাদিকতার বদৌলতে অনেক কিছুই দেখেছি। একজন প্রকৃত সাংবাদিকের ক্যামেরা যা দেখে তাই তো তার লিখনিতে তুলে ধরবেন এটাই তো হওয়া উচিৎ। কিন্তু সেটা করতে গেলে পড়তে হয় বিপাকে। আজ সাংবাদিকের অভাব নেই। ঘরে ঘরে সাংবাদিক। নামীবেনামী পত্র-পত্রিকার সাংবাদিক দিয়ে ভরে গেছে এলাকা। চারিদিকে শুধু সাংবাদিক আর সাংবাদিক।
তবে এই সাংবাদিকের ভিড়ে...
প্রকৃত সাংবাদিক কে বা কারা?
আমার ছোট্ট মস্তিষ্ক টা বলে, যে বা যাহারা সমাজের ন্যায়-অন্যায়, ভালো-মন্দ যা দেখে তা হুবহু সবার কাছে পৌছে দেয় তাকে বা তাদের সাংবাদিক বলে।
অথবা, যার বা যাদের কলম ও ক্যামেরার ভয়ে অন্যায় অনিয়ম করতে দুর্নীতিবাজ, অত্যাচারী, জুলুমবাজ সন্ত্রাসী সব সময় ভয়ে থাকে তাকে বা তাদের সাংবাদিক বলে।
এই পেশাকে যে মনে প্রাণে ভালোবাসে সেই প্রকৃত সাংবাদিক।
আজকাল তো দেখা যায় যে, একজন মাদক সেবনকারী মাদক কিনতে নিয়ে যায় প্রেস আই ডি কার্ড। অনেকে মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস এমনকি সাইকেলে পত্র-পত্রিকা বা অনলাইন টেলিভিশন এর স্টিকার লাগায় পুলিশের চেকপোস্ট থেকে বাঁচতে।
বর্তমানে
সাংবাদিক এর নাম ভাঙ্গিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন কিছু অসাধু লোক। যার কারনে প্রকৃত সাংবাদিকরা হারাচ্ছে তাদের সম্মান। সাধারণ লোকেরা আজ সাংবাদিকদের অন্য চোঁখে দেখতে শুরু করেছে।
এমন নামধারী সাংবাদিকরাই আবার অন্যদের নিয়ে কটাক্ষ করে। কোনো কোনো অভিজ্ঞ ও যোগ্যতা সম্পন্ন সাংবাদিক নবাগত সাংবাদিকদের কাছে টেনে নেন। তাদের ভুল সংশোধন করে দেন। ভালো পরামর্শ দেন। আবার অনেকেই তার উল্টো টা করেন।
কিন্তু কেন..? কেন এমন করা হয়..??
আপনারা কি সবসময় আপনাদের যায়গা ধরে রাখতে পারবেন? আপনারা কি ভুলে গেছেন কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য সেই বিখ্যাত কবিতা ‘ছাড়পত্রে’র ঐ লাইন্টা— এসেছে নতুন শিশু, তাকে ছেড়ে দিতে হবে স্থান।
আপনারা তো আর সবসময় থাকবেন না এই পৃথিবীতে। আপনার বা আপনাদের অবর্তমানে কে নিবে আপনার দায়িত্ব??
আজ সাংবাদিক মার খায় সাংবাদিকদের কারনে। তাদের মাঝে আজ হয়েছে দলাদলি। একদল আরেকদলকে হিংসা করে নেই কারোর একতা।
কিন্তু কেন? কেন এমন করেন??
"আপনার সাইজ বড়! তাই বলে আপনার চাইতে বড় সাইজের কাউকে খুঁজবেন? এটা কেমন কথা। আগে এটা বিচার করুন সে কতোটা প্রেমি পেশার উপর। আর সাংবাদিক কখনোই বড় ছোট দিয়ে বিচার করা যায়না। যার কলমের কালি সত্য ও ন্যায়ের জন্য বের হয় সেই প্রকৃত সাংবাদিক। সাংবাদিক এর কাজ তো ছোট বড় হয়না।" একজনের সাইজ ছোট হতেই পারে তাই বলে তাকে অবজ্ঞা করবেন এটা কেমন কথা, আপনি কি জানেন না “ছোট ছোট বালুকণা, বিন্দু বিন্দু জল,
গড়ে তোলে মহাদেশ, সাগর অতল।”
আমি সাংবাদিকতা পেশার প্রেমে এমন ভাবে পরেছি যে, আমার মৃত্যু ব্যতীত আমি এই ভালোবাসা ছাড়তে পারবোনা। কাজেই আমাকে এই পৃথিবীতে থাকতে দিন। একজন প্রেমিক/প্রেমিকা তার ভালোবাসাকে হারালে যেমন জীবন শেষ করে দেয়। ঠিক তেমনি আমার কাছ থেকে যদি কখনো এই মহান পেশা কেরে নেওয়া হয় দেখবেন আমি আর এই পৃথিবীতে নেই।
তাই সকল সিনিয়র সাংবাদিক ভাইদের কাছে আমার অনুরোধ, আপনারা নবাগত সাংবাদিকদের অবজ্ঞা না করে এটা যাচাই করুন যে, সে কি পেশাকে ভালোবেসে দেশ ও দেশের মানুষের স্বার্থে মাঠে থাকতে চায়। নাকি পকেট ভারী করাই তার উদ্যেশ্য। যদি দেখেন সে আসলেই প্রকৃত প্রেমিক তাহলে তাকে কাছে টেনে নিয়ে পথ দেখিয়ে দিন। এই পেশায় কিভাবে কোন পথে চলতে হয়। যাতে করে আপনার অবর্তমানে আপনার দায়িত্ব নিতে পারে। আপনার ও দেশের মুখ উজ্জ্বল করতে পারে।
লেখক
এম ডি হাফিজুর রহমান (হাফিজ)
তরুণ সাংবাদিক, কলামিস্ট ও কবি।
মোবাইলঃ +৮৮০১৮৭৯৯৪৯৬৬৯;
ই-মেইলঃ- hafiz321242@gmail.com;
সোমবার ৩১ মে ২০২১ ইং# প্রধান সম্পাদক শাহ্ মুহাম্মদ শফিউল্লাহ এবং সম্পাদক ও প্রকাশক মোহাম্মদ ছৈয়দুল আলম কর্তৃক প্রকাশিত একুশে মিডিয়া’র সংবাদ।
একুশে মিডিয়া.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
No comments:
Post a Comment