মেহেরুন্নেছা মুনমুন, পটিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামের পটিয়ায় সরকারিভাবে দেয়া ছাত্র-ছাত্রীদের কিট এলাউন্স ও উপবৃত্তির টাকা সুকৌশলে আত্মসাৎ করার অভিযোগে মোহাম্মদ মহিউদ্দিন (২১) নামে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক কর্মচারীকে জেলে পাঠিয়েছে আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) দুপুরে আটক হওয়া স্কুল কর্মচারী মহিউদ্দিনকে পুলিশ আদালতে পাঠালে আদালত তাকে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেন। মহিউদ্দিন উপজেলার ছনহরা ইউনিয়নের চাটারা বরিয়া শরৎ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাস্টার রুলে দপ্তরি কাম প্রহরী হিসেবে কর্মরত।
সে একই ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের আবুল বশর সওদাগরের বাড়ির আবুল বশরের ছেলে। এর আগে বুধবার রাতে মহিউদ্দিনকে আটকের পর স্কুল কর্তৃপক্ষ পটিয়া থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করে। ওইদিন রাতেই বিশ্বাসভঙ্গ করে আত্মসাৎ করার অপরাধে বিদ্যালয়ের ওই দপ্তরির বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুন নাহার বাদী হয়ে পটিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহার ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ শে জুন সকাল ১১ টার দিকে বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণির ছাত্র অরিক বড়ুয়ার অভিভাবক অলকা বড়ুয়া স্কুলে এসে দপ্তরি মহিউদ্দিনের নিকট গুগল মিট এ্যাপস সম্পর্কে জানতে চান।
মহিউদ্দিন উক্ত অভিভাবককে এ্যাপস খুলে দেয়ার ব্যাপারে আশ্বস্ত করার পর তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে কৌশলে গোপন পিন কোড নিয়ে নেয় এবং উক্ত পিন কোড ব্যবহার করে তাঁর মোবাইল থেকে সরকারের দেয়া কিট এলাউন্স হিসেবে প্রাপ্ত ১ হাজার টাকা ‘নগদ’ এ্যাপসের এজেন্ট স্থানীয় মোহাম্মদ ফরমানের মোবাইলে পাঠিয়ে দেয়।
একইদিন আরো কয়েকজন অভিভাবকের টাকা পাঠিয়ে দিয়ে পরে দপ্তরি মহিউদ্দিন নগদ এ্যাপের এজেন্ট মোহাম্মদ ফরমানের নিকট থেকে মোট ৭ হাজার ৭শত টাকা নিয়ে নেয়। পরবর্তীতে উক্ত অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের কিট এলাউন্স ও উপবৃত্তির টাকা উত্তোলনের জন্য নগদ এজেন্টের দোকানে গিয়ে জানতে পারেন টাকা উত্তোলন করা হয়ে গেছে। পরে ক্ষতিগ্রস্ত অভিভাবকরা ঘটনার বিষয়টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে অবহিত করলে তিনি স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে অবহিত করেন।
পরবর্তীতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ম্যানেজিং কমিটিসহ স্কুল শিক্ষকদের নিয়ে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার জিসা চাকমাকে বিষয়টি জানান। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু আহমেদ বিষয়টি জানতে পেরে স্কুল পরিদর্শনে এসে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক ও দপ্তরি মহিউদ্দিনের সাথে কথা বলেন। পরে তিনি দপ্তরি মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করেন। স্কুলের শিক্ষক ও অভিভাবকরা মহিউদ্দিনকে পুলিশে সোপর্দ করেন।
পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম মজুমদার বলেন, ‘অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ ও প্রতারণা করে সরকারের দেয়া ছাত্র-ছাত্রীদের কিট এলাউন্স ও উপবৃত্তির টাকা কৌশলে আত্মসাৎ করার অভিযোগে স্কুলের দপ্তরির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। আসামিকে আদালতে প্রেরণ করলে আদালত তাকে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেন’।
শুক্রবার ৯ জুলাই ২০২১ ইং# সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক প্রকাশিত একুশে মিডিয়ার সংবাদ।
একুশে মিডিয়া.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
নিউজটিতে আপনার মতামত কমেন্ট করুন ও শেয়ার করুন।
No comments:
Post a Comment