রবিউল ইসলাম, ঝিনাইদহ:
ঝিনাইদহ
শহরের ব্যস্ততম সড়কের প্রায় অর্ধেক অংশ জুড়ে গাছের বড় বড় ডাল কেটে ফেলে রেখেছে জেলা পরিষদ। প্রায় দেড় মাস এই অবস্থা থাকা থাকায় সড়কে যান চলাচল ও পথচারীরা ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছেন। অনেক সময় ছোট-বড় দূর্ঘটনাও ঘটছে। শনিবারও এই গাছের ডালের কারনে দূর্ঘটনায় দুইজন আহত হয়ে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
কর্তৃপক্ষ বলছেন গাছের কাটা ডালের মুল্য নিদ্ধারন কাজের জন্য ওই স্থানে ফেলে রাখা হয়েছে। মুল্য নিদ্ধারন শেষে এগুলো সরিয়ে নেওয়া হবে। যতক্ষন মুল্য নিদ্ধারণ কাজ শেষ না হচ্ছে ততক্ষন সরানো যাচ্ছে না। আর এই কাজে একটু বিলম্ব হওয়ায় ডাল সরানো সম্ভব হয়নি।
প্রসঙ্গত, ঝিনাইদহ শহরের সরকারি কবরস্থান এলাকায় হামদহ-পায়রাচত্বর সড়কের উপর একটি বড় কড়াই গাছ রয়েছে। এই গাছের বেশ কিছু ডাল শুকিয়ে এসেছিল। গাছটি জেলা পরিষদের জায়গায় হওয়ায় তারা শুকনা ডালগুলো কেটে ফেলে। কাটা ডালগুলো সড়কের উপর ফেলা রয়েছে। গত নভেম্বর মাসের শুরুর দিকে গাছের ডালগুলো কাটা হয়। কাটার পর ডালগুলো যেভাবে রাস্তার উপর পড়ে, সেভাবেই রাখা রয়েছে। দীর্ঘ দেড় মাসেও সড়কের উপর থেকে ডাল সরানো হয়নি।
সোমবার সরেজমিনে দেখা যায় ঝিনাইদহ আলিয়া মাদ্রাসার সামনে সড়কের উপর গাছের বড় বড় ডাল পড়ে আছে। ওই এলাকা দিয়ে চলাচলকারী ছোট-বড় যানবাহনগুলো ঝুঁকি নিয়ে কষ্ট করে চলাচল করছে। কথা হয় ওই এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মালেকের সঙ্গে। তিনি জনান, শহরের মধ্যকার সবচে ব্যস্ত সড়ক এটি। শহরের বাস ট্রার্মিনাল থেকে শহরের ভেতর দিয়ে পায়রা চত্বর হয়ে হাটের রাস্তা পেরিয়ে হামদহ বাইপাসে মিশেছে সড়কটি। এই সড়কে প্রতি সেকেন্ডেই কোনো না কোনো গাড়ি চলাচল করে। সেই সড়কের উপর এভাবে প্রায় অর্ধেকটা জায়গা জুড়ে মাসের পর মাস ডাল কেটে ফেলে রাখা হয়েছে কিভাবে তা বুঝে উঠতে পারছেন না। ওই সড়কে চলাচলকারী ইজিবাইক চালক নাসির উদ্দিন জানান, এই স্থানে এসে মাঝে মধ্যেই তারা ঝুঁকির মধ্যে পড়েন। পাশ দিয়ে একটা যানবাহন চলে এলে ডাল ফেলে রাখা যায়গাটি পার হওয়ায় দায় হয়ে যায়।
স্থানীয় দোকানদার মোঃ রাসেল আলী জানান, দেড় মাসের অধিক সময় হয়েছে গাছের ডালগুলো কাটা হয়েছে। এই ডালের কারনে সড়কটি দিয়ে সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক চলাচল বিঘ্ন হচ্ছে। তারপরও কর্তৃপক্ষের কোনো পদক্ষেপ নেই। তিনি বলেন, যে স্থানে ডালগুলো ফেলে রাখা হয়েছে সেই স্থানটিতে মেইন সড়ক থেকে আরো দুইটি পাশ্ব সড়ক বেরিয়ে গেছে। স্থানটির পাশে রয়েছে ঝিনাইদহ সরকারি বালক বিদ্যালয়, ঝিনাইদহের সর্ববৃহত আলিয়া মাদ্রাসা, গণপূর্তের অফিস, সরকারি কবরস্থান, দুইটি বে-সরকারি হাসপাতাল ছাড়াও বেশ কিছু ছোট ছোট প্রতিষ্ঠান। যেগুলোতে প্রতিদিন হাজার হাজার শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের আনাগোনা রয়েছে। এই সড়ক দিয়েই তাদের চলাচল করতে হয়। ছোট ছোট শিশুরা তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। রাসেল আলী জানান, তারা প্রতিনিয়ত জেলা পরিষদের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন, কিন্তু তারা কোনো পদক্ষেপ নেন না। তিনি বলেন, এভাবে ব্যস্ত সড়কের উপর গাছের ডাল কেটে ফেলা রাখার ঘটনা সম্ভবত আর কোথাও দেখা যাবে না।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, গাছের ডালগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় তারা কেটেছেন। এগুলো পথচারীদের জীবনের ঝুঁিক হয়ে পড়েছিল। কাটার পর মুল্য নিদ্ধারনের কাজ চলছে। মুল্য নিদ্ধারণ হয়ে গেলেই ডালগুলো সরিয়ে নেওয়া হবে। এই জন্য একটু সময় লাগছে। তবে ২ থেকে ৪ দিনের মধ্যে সরিয়ে ফেলার ব্যবস্থা করবেন বলে জানান।
No comments:
Post a Comment