একুশে মিডিয়া, ষ্টাফ রিপোর্টার:
বাঁশখালীতে মাত্র দুইশ ফুটের দূরত্বে দুই সেচ প্রকল্পের গভীর নলকূপ বসানোর বিষয়কে কেন্দ্র করে বিরোধের অভিযোগ উঠেছে,এই বিরোধের বিষয়ের মূল নেপথ্যে মুলহোতা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলে দাবি করছে অভিযোগকারী মোহাম্মদ শাহেদুল হক চৌধুরী।
এই নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর গত ২ জানুয়ারী ২২ ইং তারিখে একটি অভিযোগ দায়ের করেন খানখানাবাদ ইউপির পূর্ব রায়ছটা ৯নং ওয়ার্ডের প্রবাসী জাকেরুল হক চৌধুরীর ছেলে শাহেদুল হক চৌধুরী।
অভিযোগের সুত্রে জানা যায়,পূর্ব রায়ছটার ৯ নং ওয়ার্ডের জাকেরুল হক চৌধুরীর ছেলে শাহেদুল হক চৌধুরী তাঁর বসতভিটা সংলগ্ন কৃষি চাষাবাদে পানি সেচ-এর জন্যে পানি সেচ-প্ল্যানে বিগত ২০২০ সালে বৈদ্যুতিক মিটার সংযোগের আবেদন করেন।
একই সালে আরো একটি পানি সেচ-প্ল্যানের কথা উল্লেখ পূর্বক বৈদ্যুতিক মিটার সংযোগের আবেদন করেন ওই এলাকার বাদশাহ মিয়ার ছেলে বিবাদী শহিদুল হক।একই এলাকায় ও পাশাপাশি দুইশ ফুটের দূরত্বে দুইটি আবেদন হওয়াতে বিষয়টি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মহোদয় তদন্ত করেন, তদন্তকালে মাত্র দুইশ ফুটের দূরত্বে দুইটি সেচ-প্ল্যানের আবেদন হওয়াতে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক ৮শ ফুটের দূরত্ব না থাকায় উক্ত বাদশাহ মিয়ার ছেলে শহিদুল হকের আবরদনটি খারিজ করেন কৃষি কর্মকর্তা এবং একই সাথে সার্বিক দিক বিবেচনা করে জাকেরুল হক চৌধুরীর ছেলে অভিযোগকারী শাহেদুল হক চৌধুরী নামের আবেদনটিকে বৈধতা ঘোষণা করে প্রতিবেদন প্রদান করেন কৃষি কর্মকর্তা।এরই প্রেক্ষিতে পল্লী বিদ্যুৎ বাঁশখালী জোন-এর ডিজিএম ওই প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে বাদী শাহেদুল হক চৌধুরীর নামে বৈদ্যুতিক মিটার সংযোগ প্রদান করেন।
তারই ধারাবাহিকতায় এই যাবত শাহেদুল হক চৌধুরী ওই সেচ-প্ল্যান (গভীর নলকূপ)এর সহযোগিতায় স্থানীয় অসহায় কৃষি পরিবারসহ নিজে চাষাবাদ কার্যক্রম পারিচালনা করে আসলেও বিগত ২০২০ সালে বিবাদী শহিদুল হকের করা আবেদনটি ৮শ ফুট দূরত্ব না থাকা ও মাত্র দুইশ ফুটের দূরত্বে দুইটি আবেদনের বিষয় তদন্ত পূর্বক কৃষি কর্মকর্তা অবৈধ ঘোষণা করলেও এরই মধ্যে বিবাদী শহিদুল হকের সাথে কৃষি কর্মকর্তা যোগসাজশ করে সাম্প্রতিক ২০২০ সালে বাতিল করা সেই কৃষি সেচ-প্ল্যানটি পূনরায় নতুন ভাবে ২শ ফুটের দূরত্বে বিবাদী শহিদুল হকের পক্ষে প্রতিবেদন প্রদান করে আরো সেচ- প্ল্যান(গভীর নলকূপ) অনুমোদন দেয়াতে এই বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ ও অভিযোগকারী সুত্রে জানা গেছে।এই নিয়ে চলছে উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারি হানাহানি।মামলা-হামলাও লেগে আছে উভয় পক্ষের মধ্যে এমন অভিযোগ করেন বাদী শাহেদুল হক চৌধুরী,
অভিযোগকারী শাহেদুল হক চৌধুরী বলেন,কৃষি কর্মকর্তা নিজেই সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক ৮শ ফুট দূরত্বে না থাকা এবং দুইশ ফুটের দূরত্বে দুইটি আবেদন হওয়ার ফলে বাদশাহ মিয়ার ছেলে শহিদুল হকের বিগত ২০২০ সালের আবেদনটি অবৈধ ঘোষণা করলেও ২০২২ সালের শেষের দিকে পূনরায় কিভাবে বিবাদী শহিদুল হকের নামে গভীর( নলকূপ) পানি সেচ-প্ল্যানের অনুমতি দিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তা তা জানিনা।আর একই ভাবে ওই প্ল্যানে বৈদ্যুতিক মিটার সংযোগ প্রদান করা মানে আমার সেচ-প্ল্যানে বিঘ্ন সৃষ্টি করার শ্যামিল।এছাড়াও মাত্র দুইশ ফুটের দূরত্বে দুইটি সেচ-প্ল্যান স্থাপন করা হলে শুষ্ক মৌসুমে আশাপাশের গভীর ও অগভীর নলকূপ গুলোতে পানি সংকটের আশংকা করছে স্থানীয় সচেতন মহল।
এসময় স্থানীয় বেশ কিছু লোক বলেন,আমরা গরীব মানুষ,কয়েক বছর যাবত শাহেদুল হক চৌধুরীর ডিপ থেকে পানি দিয়ে চাষাবাদ করতেছি,কিন্তু এরই মধ্যে নতুন ভাবে একই জায়গায় আরো একটি নলকূপ বসানোর অনুমোদন দিয়ে একদিক দিয়ে কৃষকদের ক্ষতি সাধন করছে,অন্যদিকে স্থানীয়দের পাড়ালিয়া নলকূপ গুলো বন্ধ হয়ে গেলে তীব্র পানির সংকটে পড়বে অসংখ্য পরিবার।
উল্লেখ্য,জাকেরুল হক চৌধুরীর ছেলে শাহেদুল হক চৌধুরীর নামে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক হিসাব নং-১১-৩১৭-২২৮০ বৈদ্যুতিক মিটার সংযোগ প্রদান করার পর থেকে ওই সেচ-প্ল্যান(নলকূপ) এর সহযোগিতায় সেচ-প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় অসহায় কৃষকদের চাষাবাদে পানি সহায়তা দিয়ে থাকেন।এই এমতবস্থায় পূনরায় মাত্র দুইশ ফুটের দূরত্বে আরো একটি নলকূপ বসানো ও বৈদ্যুতিক মিটার সংযোগ প্রদান বন্ধ করার জন্যে কতৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন অভিযোগকারী শহীদুল হক চৌধুরী।
এব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু ছালেক জানান পূর্ব রায়ছাটার মছিনারা বেগম ও বাদশাহ আলমের ছেলে শহিদুল দুই জনেই সেচ-প্ল্যানের আবেদন করেছিল,আবেদনকারী শহিদুল পূর্ব থেকেই ডিজেলের সহযোগিতায় সেচ-কার্যক্রম চালিয়ে আসলেও কৃষি আইনের মহিলাদের অগ্রাধিকার বিষয়ে উল্লেখ থাকায় তাদের দুইজনের পরস্পরের মতামতসহ মছিনারা বেগমকে অনুমোদন দিয়েছি,আর ওইসময় মছিনারা বেগম এবং মৃত্যু বাদশার মিয়ার ছেলে শহিদুল দুইজনে মিলেমিশে সেচ-প্ল্যান করবে বলে লিখিত চুক্তিও করেছিল মছিনারা,কিন্তু এখন তাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে বলে শুনেছি,বাদশাহ মিয়া ছেলে শহিদুল হক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি আবেদন করেছিল সেটা আমাকে তদন্তভার দেওয়া হয়, তাই তদন্তপূর্বক গত ২১ ডিসেম্বর ২২ ইং একটি প্রতিবেদন দেয়া হয়,যদি এই বিষয়ে ইউনও স্যার আমাকে জিজ্ঞেস করে তাহলে তিনি সেখানে গিয়ে সব কিছু বলবেন বলে জানান কৃষি কর্মকর্তা আবু ছালেক।
অপরদিকে জাকেরুল হক চৌধুরীর ছেলে শাহেদুল হক চৌধুরী বলেন,অভিযোগ করেছিলাম আমি,যেহেতু ওই মিটার মছিনারা বেগম এবং বাদশাহ মিয়ার ছেলে শহিদুল হকের নামে নয়,কিন্তু কৃষি কর্মকর্তা গত ২১ ডিসেম্বর যে প্রতিবেদন দিয়েছেন তাতে শহিদুল হক এবং মছিনারা বেগম দুইজনকে আপন ভাই বোন হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি,মুলত তারা আপন ভাই বোন নহে,আর আমার আবেদনের সাথে মছিনারা বেগম এর কোন সম্পর্ক নেই।এইসব বিষয় বিস্তারিত উল্লেখ করে কৃষি কর্মকর্তার দেয়ার প্রতিবেদন এর বিরুদ্ধে ৪ জানুয়ারি বুধবার নারাজি দিয়েছে বলে জানান জাকেরুল হক চৌধুরী ছেলে শাহেদুল হক চৌধুরী।
No comments:
Post a Comment