মোঃ ছায়েদ হোসেন, রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি:ই-একুশে মিডিয়া
জনকল্যাণে কাজ করার শপথ নিয়ে জনদূর্ভোগ সৃষ্টি করছেন এ জনপ্রতিনিধি। মেয়রের এমন কাণ্ডজ্ঞানহীন কর্মকান্ডে নিয়মিত ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে পৌরবাসী। ময়লা অনত্র সরিয়ে নিতে রামগঞ্জ বাজারের কয়েকজন ব্যাবসায়ি আবেদন করলে এতে কোন কর্নপাত করেনি মেয়র। লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে পৌরসভার বাসা বাড়ি ও হাসপাতালের ময়লা আবর্জনা পেলে সড়ক ও জনপদ বিভাগের খাল ভরাট করছে পৌর মেয়র আবুল খায়ের পাটওয়ারী। ময়লা আবর্জনার পচা দ্গূন্ধে পৌর এলাকার পরিবেশ হুমকির মুখে পড়েছে। এতে রোগ বালাই ছড়িয়ে পড়ছে পৌর এলাকার সর্বত্র।
এসময় স্থানীয় কয়েকজন বলেন, খালের পশ্চিম পার্শ্বে জমির মালিকদের বিশেষ সুবিধা দিতে গত কয়েক মাস আগে পুলিশ বক্সের পাশে বালি দিয়ে খাল ভরাট কাজ শুরু করে পৌর কর্তৃপক্ষ। পরে প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করার লক্ষ্যে বালি না পেলে কৌশলে বাসা বাড়ির পচা ময়লা আবর্জনা পেলে পৌরমেয়র খালটি ভরাট করছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
গতকাল সকালে রামগঞ্জ- হাজীগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের রামগঞ্জ পৌরশহরস্থ পুলিশ বক্সের উত্তরে সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, বিভিন্ন বাসা বাড়ির পচা ময়লা আবর্জনা হাইড্রোলিক ড্রাম ট্রাকে এনে এ খালে ফেলছে পৌরসভার কয়েকজন কর্মচারী। ২০২১-২২ অর্থবছরে গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ এর আওতায় রামগঞ্জ বাজার রিক্সা ষ্ট্যান্ড সম্প্রসারন নামে প্রকল্পের একটি নেমপ্লেট দেখা যায়। তবে নেমপ্লেটে প্রকল্পের বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমান উল্লেখ নেই।
স্থানীয় ব্যাবসায়ি এমরান হোসেন রাছেল, বাচ্ছু, লোকমান, আল- আমিন, জাকির হোসেনসহ কয়েকজন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ময়লা আবর্জনা পেলে খালটি ভরাটে চেষ্টা করছে মেয়র। ময়লা আবর্জনা আর দূর্গন্ধের মধ্যে আমাদের ব্যাবসা করা অসম্ভব হয়ে পড়ছে। দিনের পর দিন মশা- মাছির উপদ্রব বেড়েই চলেছে। এসমস্যা দূর করতে কয়েকজন ব্যাবসায়ি গত জুন মাসে মেয়র বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করলে এক সপ্তাহের মধ্যে এ দূর্ভোগ দূর করার আশ্বাস দিয়েও কথা রাখেনি মেয়র।
ব্যাংক কর্মকর্তা মোঃ ছায়েদ হোসেন বলেন, পৌরসভার দ্বায়িত্বশীলদের এমন কান্ডকজ্ঞানহীন কর্মকান্ড দূঃখজনক। পৌর মেয়র,কাউন্সিলরদের নির্বাচিত করা হয়েছে জনকল্যাণে কাজ করার জন্য, জনদূর্ভোগ সৃষ্টি করার জন্য নয়। জনসাধারণের দূর্ভোগ দূর করতে পৌর কর্তৃপক্ষকে আরো দ্বায়িত্বশীল হতে হবে।
রামগঞ্জ সরকারি কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, আমাদের কলেজে আসার একমাত্র সড়ক এটি। কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধের মধ্যেই আমাদের যাতায়াত করতে হয়। এসময় নাক- মুখ বন্ধ করলেও আমাদের বমিসহ নানান সমস্যায় পড়তে হয়।
প্রকল্পের সভাপতি নারী কাউন্সিলর ফাতেমা বেগম বলেন, আমি নামেই সভাপতি সবকিছু মেয়র দেখেন। পর্যায়ক্রমে পুরো খালটি ভরাট করা হবে। অর্থ না থাকায় কোন বরাদ্দ দেয়া হয়নি। অর্থ আসলে বরাদ্দ দেয়া হবে।
স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর দেলোয়ার হোসেন বলেন, এখানে ট্রাক ষ্ট্যান্ড করার উদ্যোগ নিয়েছে মেয়র। অর্থ না থাকায় ময়লা আবর্জনা পেলে খালটি ভরাট করা হচ্ছে।
এব্যাপারে জানতে চাইলে পৌর মেয়র আবুল খায়ের পাটওয়ারী বলেন, সড়ক ও জনপদ বিভাগ থেকে মৌখিক অনুমতি নেয়া হয়েছে। বরাদ্দ না থাকায় ময়লা পেলে খালটি ভরাট করা হচ্ছে। কয়েকদিন পরেই ময়লার উপর বালু পেলে ভরাট করা হবে।
রামগঞ্জ সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মোজাম্মেল হক বলেন, মাসিক উন্নয়ন সভায় পৌর কর্তৃপক্ষকে খালটি প্রয়োজনে ব্যাবহার করতে মৌখিক অনুমতি দেয়া হয়েছে। কিন্তু বালু না পেলে ময়লা আবর্জনা পেলে এভাবে খাল ভরাট করতে পারে না তারা। এব্যাপারে মেয়রের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের লক্ষ্মীপুর জেলার সহকারী পরিচালক হারুন অর রশিদ পাঠান বলেন, খালে ময়লা আবর্জনা পেলার বিধান নেই। বর্জ্য পেলে খাল ভরাটের চেষ্টা করে পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করেছে পৌর কর্তৃপক্ষ। সরেজমিনে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও উম্মে হাবীবা মীরা বলেন, পৌর মেয়রের সাথে কথা বলে এব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। একুশে মিডিয়া’র সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
No comments:
Post a Comment