কবির মাহমুদ কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ):ই-একুশে মিডিয়া
নির্মাণের দুই বছরের মাথায় ভেঙে পড়েছে নাটুয়ারপাড়া নদী রক্ষা বাঁধ। সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর উপজেলাধীন নাটুয়ারপাড়া নদী রক্ষা বাঁধটি নির্মাণের পরে প্রত্যক্ষ সুবিধা ভোগ করে উপকৃত হয়েছিল হাজার হাজার সাধারণ কৃষক, রক্ষা পেয়েছিলো শত শত বিঘা আবাদি জমি। কিন্তু গত বছরের প্রবল বন্যা ও বৃষ্টিপাতে নাটুয়ারপাড়া বাসীর স্বপ্নের এ বাঁধে ব্যাপক ভাঙন ও ধ্বস শুরু হয়।ভাঙনের ভয়াবহতা এতোই বেড়ে যায় যে কয়েকদিনের মধ্যে বাঁধের মাথার অংশ থেকে ২ কিলোমিটার অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।এতে করে নতিন করে হুমকির মুখে পড়ে যায় বাঁধের চারপাশে থাকা আবাদি জমি, বসতবাড়ি, বৈদ্যুতিক খুঁটিসহ বিভিন্ন স্থাপনা।
ক্ষয়ক্ষতি ও ঝুঁকি এড়াতেই চলতি বছরের শুষ্ক মৌসুমে বাঁধটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী। এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে সম্প্রীতি বাঁধটি পরিদর্শন করেছেন সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী।
জানা যায়, গত ২০১৭সালে নাটুয়ারপাড়া এলাকায় বাঁধটি নির্মাণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। বাঁধটি নির্মাণের ফলে বাঁধের দুপাশে থাকা হাজার হাজার ধূ-ধূ বালুচরে পলি পড়ে আবাদযোগ্য জমিতে পরিণত হয়। এসব জমিতে আবাদবশত করে সাবলম্বী হতে থাকে দূর্গম চরের কৃষক।কিন্তু বাঁধটি নির্মাণের কয়েক বছরের মাথায় বাঁধটির একটি অংশ ভেঙে যায়,সে সময় স্হানীয় সংসদ সদস্য প্রকৌশলী তানভীর শাকিল জয়ের নিজস্ব অর্থায়নে ৪০লক্ষ টাকা ব্যয়ে সংস্কার করা হয়। সংস্কার করা হলেও শেষ রক্ষা পায়নি বাঁধটি,বাঁধের মাথার অংশ থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এতে করে আবার শুরু হয় জমিজমা আর স্হাপনা হারানোর আতঙ্ক । বাঁধটি চলমান শুষ্ক মৌসুমে সংস্কার করা না গেলে নদীগর্ভে বিলীন হতে পারে নাটুয়ারপাড়ায় নির্মিত নির্মিতব্য বহুতল ভবন, ব্যাংক,হাসপাতাল, পুলিশ ফাঁড়ি,কলেজ সহ অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ স্হাপনা।
স্থানীয় কৃষক মতিয়ার রহমান বলেন,' বাঁধ নির্মাণের ফলে আমার ৮০ বিঘা জমি আবাদযোগ্য জমিতে পরিণত হয়েছে, এসব জমিতে ধান, ভুট্টা লাগিয়ে আমি এখন সাবলম্বী হয়েছি,'।
আরেক কৃষক রমজান আলী বলেন, ' বাঁধ নির্মাণের আগে শত শত বিঘা জমি পানিতে তলিয়ে থাকতো,এতো জমি থাকলেও না খেয়ে থাকতে হতো।এখন এসব অভাব অনটন দূর হয়েছে।
নাটুয়ারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান চাঁন বলেন, 'নাটুয়ারপাড়া নদী রক্ষা বাঁধ নাটুয়ারপাড়া বাসীর জন্য আল্লাহর রহমত। বাঁধটি না থাকলে জমিজমা সব নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে,মানুষের দুঃখদুর্দশা শুরু হবে'।
কাজিপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান সিরাজী জানান, ' ইতোমধ্যেই আমরা মাননীয় সংসদ সদস্য প্রকৌশলী তানভীর শাকিল জয় মহোদয়ের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলেছি,পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে সাথে নিয়ে বাঁধটি পরিদর্শন করেছি। চরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বরাদ্দ না থাকায় একটু বিলম্ব হচ্ছে তবে এমপি সাহেবের বরাদ্দেই যতদ্রুত সম্ভব কাজটি শুরু হবে'।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, ' চরাঞ্চলে আমরা সাধারণত কোন কাজ করি না,এখানে আমাদের বরাদ্দ নেই। স্হানীয় সংসদ সদস্য প্রকৌশলী তানভীর শাকিল জয় মহোদয় অর্থ বরাদ্দ দিলেই আমরা কারিগরি সহায়তা করবো। আমরা ইতোমধ্যেই বাঁধটি পরিদর্শন করেছি, এখন স্হানীয় সংসদ সদস্যকে বিষয়টি জানানো হবে তিনি সিদ্ধান্ত দিলেই কাজ শুরু হবে। একুশে মিডিয়া’র সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
No comments:
Post a Comment