তপস কুমার নন্দী (
Tapash Kumar Nandy):ই-একুশে মিডিয়া
মধুর বসন্ত এসেছে মধুর মিলন ঘটাতে। মধুর মলয়-সমীরে মধুর মিলন রটাতে। কুহক লেখনী ছুটায়ে কুসুম তুলিছে ফুটায়ে, লিখিছে প্রণয়-কাহিনী বিবিধ বরন-ছটাতে (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) হোক, তবু বসন্তের প্রতি কেন এই তব তীব্র বিমুখতা?” কহিলাম “উপেক্ষায় ঋতুরাজে কেন কবি দাও তুমি ব্যথা?” কহিল সে কাছে সরি আসি- “কুহেলী উত্তরী তলে মাঘের সন্ন্যাসী- গিয়াছে চলিয়া ধীরে পুষ্পশূন্য দিগন্তের পথে রিক্ত হস্তে। তাহারেই পড়ে মনে, ভুলিতে পারি না কোন মতে(বেগম সুফিয়া কামাল) ফাল্গুনে শুরু হয় গুনগুনানী, ভোমরাটা গায় গান ঘুম ভাঙানি (ফররুখ আহমেদ) আসে বসন্ত ফুল বনে সাজে বনভূমি সুন্দরী; চরণে পায়েলা রুমুঝুমু মধুপ উঠিছে গুঞ্জরি (কাজী নজরুল ইসলাম) বসন্ত এলো এলো এলো রে পঞ্চম স্বরে কোকিল কুহরে মুহু মুহু কুহু কুহু তানে (কাজী নজরুল ইসলাম) ফাগুন, হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দানঃ তোমার হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দানঃ আমার আপনহারা প্রাণ; আমার বাঁধন ছেঁড়া প্রাণ (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) ফাগুনের নবীন আনন্দে গানখানি গাঁথিলাম ছন্দে; দিল তারে বনবীথি কোকিলের কলগীতি, ভরি দিল বকুলের গন্ধে (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) “ কারও কারও জীবনে বসন্ত নিভৃতে আসে বাইরে প্রকাশ পায় না । তার আমেজে সে নিজেই পুলকিত হয়। (জন ফ্রেচার) কখনো বা চাঁদের আলোতে কখনো বসন্তসমীরণে সেই ত্রিভুবনজয়ী, অপাররহস্যময়ী আনন্দ-মুরতিখানি জেগে ওঠে মনে(রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) আছে দুঃখ, আছে মৃত্যু, বিরহদহন লাগে। তবুও শান্তি, তবু আনন্দ, তবু অনন্ত জাগে। তবু প্রাণ নিত্যধারা, হাসে সূর্য চন্দ্র তারা, বসন্ত নিকুঞ্জে আসে বিচিত্র রাগে।(রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) ফাল্গুনে বিকশিত কাঞ্চন ফুল , ডালে ডালে পুঞ্জিত আম্রমুকুল । চঞ্চল মৌমাছি গুঞ্জরি গায় , বেণুবনে মর্মরে দক্ষিণবায়(রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) স্পন্দিত নদীজল ঝিলিমিলি করে, জ্যোৎস্নার ঝিকিমিকি বালুকার চরে । নৌকা ডাঙায় বাঁধা, কাণ্ডারী জাগে, পূর্ণিমারাত্রির মত্ততা লাগে (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) খেয়াঘাটে ওঠে গান অশ্বথতলে , পান্থ বাজায়ে বাঁশি আন্মনে চলে । ধায় সে বংশীরব বহুদূর গাঁয় , জনহীন প্রান্তর পার হয়ে যায়(রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) পুনশ্বঃ আজ বসন্ত,ভালোবাসার দিন৷ ফুল, কার্ড, চকোলেট আর নানা উপহারে মনের মানুষকে ভরিয়ে দেওয়ার দিন। এই ভালোবাসার দিন নিয়েই রয়েছে বেশ কিছু মজার অজানা তথ্য- চলুন জেনে নিই সে সম্পর্কে.. ১) খাতায় কলমে কাজের দিন। কিন্তু বাস্তবে ভ্যালেন্টাইন ডে-তেই বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ ছুটি কাটান। মার্কিন মুলুকে প্রায় ৯০ লাখ মানুষ তাদের পোষ্যের জন্য ভ্যালেন্টাইন উপহার কেনেন। ২) ভিক্টোরিয়ান টাইমসে এটা মনে করা হত যে, ভ্যালেন্টাইনস ডে কার্ড দুর্ভাগ্য বয়ে আনে৷ ৩) পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে ৩ শতাংশ পশুপ্রেমী তাঁদের পোষ্যকে ভ্যালেন্টাইনস ডে-র উপহার দিয়ে থাকেন। ৪) রিচার্ড ক্যাডবেরি ১৮০০ সালে ভ্যালেন্টাইনস ডে-র দিনে প্রথম চকোলেট তৈরি করেছিলেন। ৫) সারা পৃথিবীতে এই দিনে ৩৫ মিলিয়নেরও বেশি হার্ট শেপ চকোলেট বিক্রি হয়। ৬) ৭৩ শতাংশ পুরুষ ভ্যালেন্টাইনস ডে-র দিন ফুল কেনেন, তাঁর প্রেমিকার জন্য৷ সেখানে মেয়েদের সংখ্যাটা ২৭ শতাংশ। ৭) প্রত্যেক বছর এই দিনে গড়ে ২,২০,০০০ মানুষ বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে থাকেন। ৮) এখনও প্রত্যেক বছর ভ্যালেন্টাইনস ডে-র দিনে ইতালির শহর ভেরোনায় জুলিয়েটের নামে হাজারেরও বেশি চিঠি আসে। ৯) ১৫৩৭ সালে ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় হেনরি সরকারিভাবে আজকের দিনে ছুটি ঘোষণা করেছিলেন। ১০) আগে, মানুষের ধারণা ছিল যদি কোনো নারী এই দিনে উড়ন্ত রবিন পাখি যদি দেখেন তাহলে তার বিয়ে হবে একজন নাবিকের সাথে। যদি চড়ুই পাখি দেখেন তাহলে একজন গরীব ব্যক্তির সাথে বিয়ে হবে কিন্তু তিনি সুখী হবেন। ১১) ষোড়শ শতাব্দীতে সর্বপ্রথম ভ্যালেন্টাইন’স ডে এর জন্য হাতে বানানো কার্ড তৈরি হয়। এরপর ১৮০০ সালে ফ্যাক্টরিতে কার্ড বানানো চালু হয় যদিও কার্ডে রঙ করানো হতো ফ্যাক্টরি শ্রমিকদের দিয়ে। ১২) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১৫% মহিলা যে চকলেট এবং ফুল উপহার পান ভ্যালেন্টাইন’স ডে তে, তারা নিজেদেরকেই নিজেরা পাঠান৷ ১৩) ফিনল্যান্ডে ভ্যালেন্টাইন’স ডে পালিত হয় না। সেখানে পালিত হয় ফ্রেন্ড’স ডে। বন্ধুবান্ধবের জন্য ভালোবাসা। ১৪) প্রতিবছর ভ্যালেন্টাইন’স ডে তে শুধুমাত্র আমেরিকাতেই ১ বিলিয়নের চকলেট বিক্রি হয়৷ সবাইকে শুভেচ্ছা।
শুভেচ্ছান্তে
তপস কুমার নন্দী
No comments:
Post a Comment