রবিউল ইসলাম, ঝিনাইদহ:ই-একুশে মিডিয়া
কবরে জোটেনি কোন ফুল কিম্বা শ্রদ্ধাঞ্জলি, অত্যন্ত ঘরোয়া পরিবেশে আলতামতির পরিবারে পালিত হয়েছে ২৭তম মৃত্যু বার্ষিকী। ১৫ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬সালের এইদিনে বিএনপি’র গণ বিরোধী একদলীয় ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হরিণাকু-ুর ভাতুড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগের বাঁধার মুখে পুলিশের এলোপাথাড়ি গুলিতে নিতহ হন ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকু-ু উপজেলার গুড়পাড়া ভাতুড়িয়া গ্রামের আলতামতি। তিনি একই গ্রামের আব্দুর রহমান বিশ্বাসের মেয়ে এবং আব্দুল খালেকের স্ত্রী। মৃত্যুকালে তিনি রেখে যান তার ৪বছরের ছেলে রিপন এবং ৪ মাসের শিশু পুত্র শিপনকে। আলতামতির ভাই সাংবাদিক মোঃ আশারাফুল ইসলাম সেদিন অনেক চেষ্টা করেও বিএনপি আর পুলিশের বাঁধার মুখে কারও বিরুদ্ধে মামলা করতে সাহস পায়নি। এমনকি হুমকী ধমকীর শিকার হয়ে বাড়ি ছাড়তে হয়েছে তাকে। একই বছর ১২জুন সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে তারপর পরিবারের পক্ষথেকে দাবি করা হয় আলতামতিকে রাষ্ট্রীয় ভাবে শহীদ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে তার অসহায় শিশু সন্তানদের ভোরণ পোষনের ব্যবস্থা করা হোক। অনেক চেষ্টার পর তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আইয়ুব হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাই এমপি ও রেহানা আক্তার হিরা মহিলা এমপির সহযোগীতায় ১৯৯৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলতামতির অসহায় শিশু পুত্রদের ভোরণ পোষণের জন্য এক লক্ষ টাকার একটি পরিবার সঞ্চয়পত্রের ব্যবস্থা করে দেন। কিন্তু বাবা আব্দুল খালেক দ্বিতীয় বিয়ে করার কারণে পারিবারিক অভাব অনটনে সেই টাকা আস্তে আস্তে তুলে পরিবারের পিছনে ব্যয় করতে থাকে। আর রিপন শিপন মা-বাবাহীন বাউন্ডলে জীবন নিয়ে বড় হতে থাকে। শিক্ষাদিক্ষা কিছুটা গ্রহন করলেও কারও কপালে জোটেনি একটি পিয়নের চাকরীও, চাকুরীতে বড় অঙ্কের ঘুষ দিয়ে ঢোকার সামর্থও তাদের নেই। এই সরকার অনেক অসহায় পরিবারকে চাকুরীর ব্যবস্থা করেছেন, কিন্তু তাদের কপালে চাকুরীতো দুরের কথা একটু সাহায্যও জোটেনি। কোন নেতাও এখন তাদের আর সেভাবে খোজ খবর রাখেন না। মৃত্যু বরণ করার প্রথমদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মশিউর রহমান জোয়ার্দ্দার কিছুটা খোজ খবর রাখতেন এখন তাও রাখেন না। এখন কিছুটা হলেও খোজ-খবর রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু, কিন্তু সেভাবে এখনো কিছু করার সুযোগ পায়নি। এ প্রসঙ্গে আলতামতির বড় ছেলে নিঝুম রেজা রিপন বলেন মা হারানোর সাথে সাথে আমরা সবকিছুই হারিয়ে ফেলেছি, লেখাপড়া তেমন শিখতে পারেনি, ছোট ভাই শিপন এইচএসসি পাশ করেছে কিন্তু কপালে চাকুরী জোটেনি। কেউ আর এখন খোঁজ খবরও রাখেন না। এখন আমাদের একটায় দাবি ১৫ই ফেব্রুয়ারী খালেদা জিয়ার অবৈধ গণ বিরোধী একদলীয় নির্বাচনের কারণে আমার মা সহ যারা সেদিন নিহত হয়েছিল তাদের সকলকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরমত রাষ্ট্রীয় ভাবে শহীদের স্বীকৃতি প্রদান করা হোক। একুশে মিডিয়া’র সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
No comments:
Post a Comment