মোঃ ছায়েদ হোসেন, রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি:ই-একুশে মিডিয়া
হেমন্তের সকালে ভোরের কুয়াশা ভেদ করে উঁকি দেয় সূর্য। যার আলোর সঙ্গে মিতালি গোলাপ, গাঁদা, জারবেরা আর চন্দ্রমল্লিকার। মন জুড়ানো এ দৃশ্য সাভারের বিরুলিয়ার গোলাপ গ্রামের। বাগানের ফুটন্ত ফুলের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করতো চাষিরা। কেউ পরিষ্কার করতো আগাছা, কেউ আবার ফুল সংগ্রহ করছেন বিক্রির উদ্দেশ্যে। জমিতে যেসব ফুলের চাষ হয় তার মধ্যে লাল গোলাপ, সাদা গোলাপ, হলুদ গোলাপ, মিক্স চায়না। চন্দ মল্লিকা, রজনিগন্ধা, গাঁদা, কাশি গাঁদা, লিলিপুল, মানফুল, স্বর্ণফুটি, বেবিফুল, ভুট্টা, গাজারা, বাসন্তী গান্ধা ইত্যাদি।
রামগঞ্জে বাজারে স্থায়ীভাবে ১০টি ফুলের দোকান রয়েছে। বিশেষ দিবস এলে দোকানগুলোতে মানুষের উপচেপড়া ভিড় থাকে। বসন্ত বরণ আর ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে সকাল থেকেই ক্রেতাদের ভিড় থাকে চোখে পড়ার মতো। আর সন্ধ্যায় সেই ভিড় বেড়ে যায় কয়েকগুণ। এসব দোকান ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন প্রজাতির তাজা ফুলের পাশাপাশি প্লাস্টিকের ফুল ও ক্রাউন সাজিয়ে রাখা হয়েছে। দীর্ঘমেয়াদী উপযোগিতা আর চাকচিক্যের কারণে তাজা ফুলের বাজার দখল করে নিচ্ছে প্লাস্টিক পণ্য। এমনকি তাজা ফুলের চেয়ে বেশি দামে বিক্রিও হচ্ছে এইসব ফুল, চাহিদাও বেশি।
২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা, ১৬ ডিসেম্বরসহ বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে সর্বাধিক বিক্রি হয় শ্রদ্ধাঞ্জলি ও ফুলের তোড়া। এ লক্ষ্যে রামগঞ্জে বিভিন্ন সাইজের শ্রদ্ধাঞ্জলি ও ফুলের তোড়ার পাশাপাশি মাথার রিং, রজনীগান্ধার মালা, রক্তজবা এবং চন্দ্রমল্লিকার সমন্বয়ে মালা তৈরি করা হচ্ছে। এর মধ্যে শ্রদ্ধাঞ্জলি তৈরিতেই বেশি ব্যস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মীরা।
কয়েকজন ফুল বিক্রতার মালিকরা জানান, অন্যান্য বছর চাষিদের কাছ থেকে কম দামে ফুল কেনা যেত। যে কারণে খুচরা বাজারে ক্রেতাদের কাছে ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে ফুল বিক্রি করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এ বছর চাষিরা দাম বেশি নিচ্ছে। তাই বেশি দামে ফুল বিক্রি করতে হচ্ছে। এর সঙ্গে পরিবহন, শ্রমিকের খরচ যুক্ত হচ্ছে।
তারা আরো জানান, তাজা ফুলের দাম বাড়ায় ক্রেতারা প্লাস্টিক ফুল ও ক্রাউনের দিকে ঝুঁকছে। গত বছরও এমন চাহিদা ছিল না। কিন্তু এ বছর অনেক ক্রেতা এসে প্লাস্টিক ক্রাউন খুঁজছে। তাজা ফুলের ক্রাউন ১৫০ টাকায় বিক্রি হলেও প্লাস্টিকের ক্রাউন বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়। তাছাড়া অনেকেই বিয়ের অনুষ্ঠানে তাজা ফুলের চেয়ে প্লাস্টিকের ফুল নিচ্ছে। বিয়েসহ অন্যান্য অনুষ্ঠান এখন কৃত্রিম ফুল দিয়েই সাজানো হয়। এছাড়া রজনীগন্ধার স্টিক ৫-৬ টাকা, গাঁদাফুলের মালা ২০-২৫, অর্কিড ৫০-৭০, লিলি ২৫০-৩০০, জারবেলা ১৫-২০, কেলোনজরা ৫, ফুলের তোড়া ১০০-২০০ এবং মাথার রিং ১০০-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ফুল কুটিরের কারিগর সবুজ বলেন, মাঝারি সাইজের একটি শ্রদ্ধাঞ্জলি তৈরি করতে ২৫০-৩০০ টাকা খরচ হয়। ২১ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ব্যবসায়ীরা এ শ্রদ্ধাঞ্জলি বিক্রি করেন ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকায়। অন্য সময় এর দাম থাকে ৭০০-৮০০ টাকা। এছাড়া এদিন ছোট আকারের শ্রদ্ধাঞ্জলিও তৈরি করা হয়, যা বিক্রি হয় ৪০০-৫০০ টাকায়। একুশে ডিডিয়া’র সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
No comments:
Post a Comment