সবুজ সরকার বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:ই-একুশে মিডিয়া
দীর্ঘ দিন ধরে দলের অন্তকোন্দল অভ্যান্তরে থাকলেও এবার প্রকাশে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দল। সম্প্রতি সময়ে বেলকুচি আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মন্ডলের সাথে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের দূরত্ব স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের অভিযোগ এমপির নিজ বলায় তৈরী করতে দলে জামায়তায় বিএনপির নেতাকর্মীরা স্থান পাচ্ছে। তার একক সেচ্ছাচারীতায় কমটি গঠন, দলীয় চেয়ারম্যানের ও নেতাকর্মীদের সাথে সমন্বয়হীনতায় দলকে দূর্বল করে চলছে। উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি হবার পর থেকে দলের সাধারন সম্পাদক কে দূরে রেখে হঠাৎ করে ঢাকা থেকে এসে হটকারী সিদ্ধান্ত নিয়ে দলকে গতিহীন করছে। অভিযোগ রয়েছে ইউনিয়ন কমিটি পুর্নাঙ্গ করতে ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের সাথেই সমন্বয় না করে একক সিদ্ধান্তে কমিটি দিচ্ছে। আর এসকল বিষয়ে দলের নেতাকর্মীরা এরই মধ্যে জেলা আওয়ামীলীগ বরাবর অভিযোগও দায়ের করেছেন।
এমপির এমন অসাংগঠিন কর্মকান্ডে প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকালে বেলকুচি দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আশানুর বিশ্বাস। এসময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, বেলকুচির ৬ টি ইউনিয়নের ৫ টি ইউনিয়নের কমিটি গঠন করা হয়েছ। সকল বাধা বিপত্তির মধ্যে দিয়ে কমিটি গঠন করা হলেও এখন এমপি মহাদয় এখন সেখানে একক ভাবে তার মনোনিত ইউনিয়নের সভাপতি বা সাধারন সম্পাদক এক জনকে নিয়ে পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করছে। এরই মধ্যে বেলকুচি সদর ইউনিয়নের সাধারণত সম্পাদক মির্জা মরিয়মকে বাদ রেখেই সভাপতিকে নিয়ে পুর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করে পরিচিতি সভা করেছে। এছাড়াও দৌলতপুর ও বড়ধুল একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন দলে এমপির বলায় বাড়াতে তিনি কমিটিতে স্তান দিচ্ছে বিএনপি জামায়াতের কর্মীদের। এই আসনের এনায়েতপুরে তিনি সরকার উৎক্ষেত মামলার ৫ নং আসামী মোঃ আলামীন কে থানা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে এনেছেন। তিনি জানান, দলের কোন কর্মকান্ডে এমপি উপস্থিত থাকেন না। হঠাৎ করে কয়েকদিন পর পর এসে তার কিছু ভাড়াটিয়া লোক নিয়ে চলাফেরা করেন।
এদিকে এমপির এমন কর্মকান্ডে বিষয়ে মুখ খুলেছেন চেয়ারম্যানগন। বেলকুচি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মির্জা সোলাইমান জানান, বর্তমান এমপি আমাদের কোন প্রকার সুযোগ সুবিধা এমনকি সরকারী উন্নয়নের কোন বাজেট আামাকে দেয় না। তার মনোনিত লোক দিয়ে তিনি তার কাজ চালায়। সরকারে উন্নয়নের বড় একটি অংশ আমরা বাস্তবায়ন করি। বড়ধুলের চেয়ারম্যান আসির উদ্দিন মোল্লা বলেন, আমরা দলের মনোনীত চেয়ারম্যান অথচ এমপি আমাদের বাদ রেখে সকল কাজ করছে। আমরা কিছু বলতে গেলেও তিনি তা শোনেন না।
এদিকে দলের একক সিদ্ধান্তের বিষয়ে বেলকুচি সদর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মির্জা মরিয়ম বলেন, আমি দলের সাধারন সম্পাদক অথচ আমাকে বাদ দিয়ে আমার কমিটি পূর্নাঙ্গ করে পরিচিতি সভা করেছে। এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদকও জানেন না। বড়ধুল ইউনিয়নের সাধারণত সম্পাদক হাফিজুর রহমান বলেন, আমরা দীর্ঘ দিন ধরে দলের জন্য কাজ করছি। হামলা মামলার আসামী হয়েছি। আর আজ এমপি আমাদের বাদ দিয়ে বিএনপির লোকদের দিয়ে আজ আওয়ামীলীগকে পরিচালনা করে। বেলকুচি পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি মির্জা শরিফুল ইসলাম বলেন, এমপি ও দলের সাধারন সম্পাদকের মধ্যে সমন্বয় না হলে দল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা এর অবসান চাই। উপজেলা শ্রমীকলীগের সভাপতি সাহেব আলী জানান, দলের অঙ্গ সংগঠন ও সহোযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে এমপি কোন প্রকার সম্পর্ক নেই। এমপি নিজের মত করে দল চালায়। আমরা নিরুপায়।
এদিকে এ বিষয়ে একাঠিক লিখিত অভিযোগ এসেছে বলে জানান সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ্যাড. কে এম হোসেন আলী হাসান। তিনি বলেন, দলের যেকোন সিদ্ধান্ত সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক সহ সকলকে নিয়ে নিতে হবে। দলের এমন বিভাজনের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা এরই মধ্যে দলের কোন্দল মিটানোর জন্য কাজ করছি। আশা করছি বেলকুচির বিষয়টি অচিরেই বসে ঠিক করা হবে। আগামী মাসের মধ্যেই এর অবসান করা হবে। অন্যথায় কেন্দ্রীয় আওয়ামিলীগের সহযোগীতা নেওয়া হবে দন্দ নিরসন করতে। এরই মধ্যে এবিষয়ে আমরা তাদের লিখিত চিঠি দিয়েছে।
এবিষয়ে কথা বলার জন্য সংসদ সদস্য আলহাজ আব্দুল মমিন মন্ডলের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। তবে এমপির ব্যাক্তিগত সহকারী সেলিম সরকার বলেন, এমপি মহদয় উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদকের সাথে বার বার বৈঠক করে ৫টি ইউনিয়নের কমিটি অনুমোদন করেছে। এখানে তাদের কোন কথা থাকলে এমপি মহদয়ের সাথে আবার বৈঠক করতে পারে অথবা দলের উদ্ধতন নেতাদের বলতে পারে। তবে এমপির বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্য নয়। একুশে মিডিয়া’র সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
No comments:
Post a Comment