রবিউল ইসলাম ,ঝিনাইদহ:ই-একুশে মিডিয়া
বিয়ের আসর থেকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল ও রাজনৈতিক সহকর্মীর মুক্তি দাবী করে গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছেন ঝিনাইদহের নব দম্পতি মাহমুদুল ও সুমাইয়া। তাদের এই অভিনব প্রতিবাদ এখন ‘টক অব দি’ কান্ট্রিতে পরিণত হয়েছে। হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে মাহমুদুল হাসান ও সুমাইয়া আফরিন এ দাবি জানান। এ সময় নবদম্পতির অন্য সহপাঠিরাও একই দাবিতে স্লোগান দেন।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নারিকেল বাড়িয়া আমেনা খাতুন কলেজের ক্রিড়া শিক্ষক রেজাউল ইসলামের ছেলে মাহমুদুল হাসান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী এবং ছাত্র ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক। সুমাইয়া একই উপজেলার গান্না ইউনিয়নের চন্ডীপুর গ্রামের খলিলুর রহমানের মেয়ে ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার ঝিনাইদহ শহরের পাগলাকানাই এলাকার প্রফেসর কমিউনিটি সেন্টারে তারা বিয়ের পিড়িতে বসেন। বুধবার বরের বাড়ি নারিকেল বাড়িয়া গ্রামে হয় বউভাত। এই বিয়ের আসরে মাহমুদুলের হাতে ‘ফ্রি খাদিজা’ ও সুমাইয়ার হাতে ‘এ্যবলিশ ডিএসএ’ লেখা প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
মাহমুদুল হাসান বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কারাগারে আছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্র ইউনিয়নের কর্মী খাদিজাতুল কুবরা। ‘আট মাসের বেশি কারাবন্দি আমার রাজনৈতিক সহকর্মী খাদিজা। তিনি কিডনি সমস্যায় ভুগছেন। অনেক চেষ্টা করেও তার জামিন হয়নি। কারণ এই আইনটি জামিন অযোগ্য।’ তিনি বলেন, বিভিন্ন পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, এই আইনে মামলা রাজনৈতিক কারণে ব্যবহার ও ভিন্নমত দমনের হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে।
মাহমুদুল আরও বলেন, আমরা নতুন জীবন শুরু করতে যাচ্ছি। এই নতুন জীবন শুরুটা করতে চেয়েছি এই নিবর্তনমূলক আইন বাতিল ও খাদিজার মুক্তির দাবি জানিয়ে। সব জুলুমের অবসানের মাধ্যমে গণমানুষের মুক্তির সংগ্রামে বিবেকবান মানুষদের অংশগ্রহণের আহ্বান জানানোর প্রত্যয়েই আমরা বিয়ের অনুষ্ঠানে এই প্রতিবাদ জানিয়েছি।
মাহমুদুলের মা পাকা গ্রামের সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিলরুবা খাতুন বলেন, ‘রাজনৈতিক সহকর্মীর মুক্তির দাবিতে ছেলে ও তার বন্ধুরা এ প্রতিবাদের আয়োজন করে। আমরা এতে মৌন সমর্থন দিয়েছি।’ কনে সুমাইয়ার বাবা খলিলুর রহমান বলেন, ‘ মেয়ে এবং জামাই বিয়ের আসরে কী করেছে, তা আমরা জানি না।’
জেলা প্রশাসক এস এম রফিকুল ইসলাম জানান, বিয়ের আসরে নবদম্পতির ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের প্রতিবাদের বিষয়টি তাঁর জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানান তিনি।
No comments:
Post a Comment