মোঃ ছায়েদ
হোসেন, রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর)
প্রতিনিধিঃই-একুশে মিডিয়া
চৈত্রের শেষ বৈশাখের প্রথমেই যখন তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন, তখনই ভয়াবহ বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কবলে রামগঞ্জবাসী। গেলো ৪/৫ দিন ধরে এ লোডশেডিংয়ের ব্যাপকতা বেড়েছে। এতে নাভিশ্বাস উঠেছে জনজীবনে। দিনে এবং রাতের বেশির ভাগ সময়ই বিদ্যুৎ না থাকায় নাভিশ্বাস উঠেছে জনজীবনে। রমজানের সেহেরি, ইফতার ও তারাবির নামাজের সময়ও মিলছে না বিদ্যুৎ। তীব্র অসন্তোষ ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও। অব্যাহত এ লোডশেডিংয়ের কারণে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীসহ শিক্ষার্থীদের পড়াশুনা চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।
লোডশেডিংয়ের কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে অফিস-আদালতের কার্যক্রম ও ব্যবসা-বাণিজ্য। এমন পরিস্থিতিতে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে জনমনে। তবে স্থানীয় বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, চাহিদার তুলনায় অর্ধেকও বিদ্যুৎ সরবরাহ না পাওয়ায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
কিন্তু দেখা গেছে, রামগঞ্জ শহরে দিনে-রাত সব সময় বিদ্যুতের বিভ্রাট হচ্ছে। একবার বিদ্যুৎ গেলে এক ঘণ্টার আগে আসছে না। দিনে তো বটেই, রাতেও কয়েকবার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এসব বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটছে কোনরকম পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই। যার কারণে প্রতিটি এলাকায় একাধিকবার লোডশেডিং এর কারণে ক্ষোভ বাড়ছে সাধারণ মানুষের মাঝে।
গ্রাহকরা অভিযোগ করে বলছেন, বিদ্যুতের নাকি ঘাটতি নেই তাহলে কেন এত লোডশেডিং? গরম না পড়তেই বিদ্যুতের এই লোডশেডিং কেন হচ্ছে তা তারা খতিয়ে দেখার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত সপ্তাহের শুরুর দিক থেকে রামগঞ্জ উপজেলার শহরসহ আশেপাশের ইউনিয়নে বেশির ভাগ এলাকাতেই বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিং হচ্ছে। সময়ে অসময়ে ঘন ঘন বিদ্যুতের ভেলকিবাজি। গরম পড়তে না পড়তেই এমন লোডশেডিং হওয়ার কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। গত মঙ্গলবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রামগঞ্জ শহরে প্রায় বেশির ভাগ এলাকাতেই ৭ থেকে ৮ বারেরও বেশি বিদ্যুৎ টেনে নেওয়া হয়। একবার টেনে নেওয়া হলে দীর্ঘ সময় পরে সরবরাহ দেওয়া হচ্ছে।
রামগঞ্জ নন্দনপুর এলাকার নজরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, গত এক সপ্তাহ থেকে বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিং হচ্ছে। এ সময় কেন লোডশেডিং হচ্ছে তা আমার বোধগম্য নয়। তাই তিনি নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানান।
এদিকে, সময়ে অসময়ে বিদ্যুৎ টেনে নেওয়ার কারণে ব্যাপক হয়রানির মধ্যে পড়েছেন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা। শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় জিনিস ফটোকপি করতে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও ফটোকপি করাতে পারছেনা। আবার কম্পিউটারে দোকানেও অনলাইনে কোন কাজ করাতে এসেও একই সমস্যার মধ্যে পড়ছেন তারা। এভাবে তাদের পড়াশোনার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। আর ব্যবসায়ীদের আর্থিক ক্ষতির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির রামগঞ্জ জোনাল অফিসের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম) কাজী মোঃ মহসিন জানান, এই উপজেলায় বিদ্যুতের গ্রাহক সংখ্যা রয়েছেন এক লাখ ৭ হাজার। গ্রাহকের ৬০ মেগাওয়াড বিদ্যুৎ বিপরীতে বর্তমানে ৪০ মেগাওয়ার্ড বিদ্যুতের চাহিদার পাওয়া যাচ্ছে। ২০ মেগাওয়ার্ড বিদুৎ কম থাকায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
No comments:
Post a Comment