রবিউল ইসলাম, ঝিনাইদহ:
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কালিচরণপুর ইউনিয়নের জয়রামপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠানটিতে আছেন ৫ জন শিক্ষক। তাঁরা মাসে বেতন তোলেন প্রায় দেড় লাখ টাকা। কিন্তু এখানে পড়াশোনা করে মাত্র কয়েক জন শিক্ষার্থী। এই অবস্থায় স্কুলটিতে অনিয়ম করে পালাক্রমে ছুটির কথা বলে স্কুলে না যেয়েও বেতন তুলছে বলে অভিযোগ উঠেছে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার কালিচরণপুর ইউনিয়নের জয়রামপুর এলাকায় ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বিদ্যালয়টি। শুরুতেই শিক্ষার্থীদের উপস্থিতে মুখরিত থাকতো স্কুলটি। কিন্তু গত দুই-তিন বছর ধরে স্কুলটিতে প্রায় শিক্ষার্থীশূন্য হয়ে পড়ে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, শিক্ষকরা ঠিক-ঠাক বিদ্যালয়ে আসেন না। শিক্ষকগণ মাঝেমধ্যে এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে চলে যান এবং স্থানীয় শিক্ষক হওয়ার কারণে তারা ব্যাক্তিগত কাজে ব্যস্ত থাকেন। কাগজে-কলমে শিক্ষার্থী থাকলেও তা বাস্তবে নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই জানান, এই স্কুল নিয়ে অনেক বৈষম্য আছে, আগের প্রধান শিক্ষক চলে যাওয়ার কারণে তার সকল ছাত্র-ছাত্রী অন্য স্কুলে পাঠিয়ে দিয়েছেন। এবং স্কুলের ঠিকমতো লেখাপড়া হয় না তাই বাধ্য হয়ে এখানকার বাচ্চারা অন্য স্কুল, মাদ্রাসায় চলে গেছে।
৯ নভেম্বর সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিৎ দত্ত ও সহকারী শিক্ষক আলতাফ হোসেন স্কুলের বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছেন। শ্রেণিকক্ষগুলো ফাঁকা। এক কক্ষে চতুর্থ শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী বার্ষিক পরীক্ষা দিচ্ছে। এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জানান, এই অবস্থার জন্য পূর্বের প্রধান শিক্ষক দায়ী। তিনি বলেন, ‘যেখানে শিক্ষার্থী নেই, সেখানে আমার কী কথা থাকতে পারে।’ স্কুলের মোট শিক্ষক পাঁচজন কিন্তু উপস্থিত দুইজন কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, একজন ছুটিতে আছেন,অন্য একজন বেতন তুলতে গেছে এবং অন্য আরেক জন বাসায় খেতে গেছে।
সহকারী শিক্ষক আলতাফ হোসেন বলেন, স্কুলের এই অবস্থা দেখে আমার নিজেরই ভাল লাগেনা, যদি পারেন আপনারা স্কুলটি বন্ধ করে দেন। এর আগেও অনেক সাংবাদিক এসেছে এখানে।
এ বিষয়ে কথা বলতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনন্দ কিশোর সাহা'র অফিসে গেলে তিনি ক্যামেরার সামনে কথা বলতে নারাজ।, তিনি জানান‘ একাডেমিক সুপারভাইজারকে ওই বিদ্যালয়ে পাঠিয়েছিলাম। খোঁজখবর নিয়ে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিয়া আক্তার চৌধুরী বলেন, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে সাবেক প্রধান শিক্ষকের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
No comments:
Post a Comment