পেকুয়ায় সন্ত্রাসী হামলায় সমাজ কমিটির সভাপতি ও স্বজন গুরুতর আহত, থানায় অভিযোগ দায়ের

এইচ. এম. শহীদুল ইসলাম, পেকুয়া প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলায় চাঞ্চল্যকর সন্ত্রাসী হামলায় পেকুয়া সদর ৬ নম্বর ওয়ার্ড সমাজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কাঠ ব্যবসায়ী মো. ফজল করিম এবং তার নিকটাত্মীয় মো. শাহেদ গুরুতর আহত হয়েছেন। স্থানীয়দের মতে, এটি পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পরিকল্পিত একটি হামলা।

বৃহস্পতিবার (৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পেকুয়া ইউনিয়নের সরকারি ঘোনা স্টেশন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

হামলার বিবরণ ও স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য:

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সমাজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. ফজল করিম সাবেক গুলদি স্টেশনের সামনে পৌঁছালে পূর্ব থেকে ওত পেতে থাকা একদল সন্ত্রাসী তার কাছে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা লোহার রড, হাতুড়ি এবং লাঠি দিয়ে ফজল করিম ও তার নিকটাত্মীয় মো. শাহেদের ওপর নির্মমভাবে হামলা চালায়।

হামলায় গুরুতর আহত ফজল করিম ও শাহেদ মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। আহতদের অবস্থার অবনতি হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হতে পারে বলে জানা গেছে।

অভিযোগ ও হামলার পেছনের কারণ:

আহত ফজল করিমের ছেলে ছাত্রনেতা আমজাদ হোসেন বলেন, “ঘটনার সময় আমি ব্যক্তিগত কাজে গ্রামের বাইরে ছিলাম। পূর্ব শত্রুতার জেরে স্থানীয় কুখ্যাত সন্ত্রাসী জসিম উদ্দিন (ডাকাত জসিম) ও তার ছোট ভাই শাহাব উদ্দিন এই নৃশংস হামলার পরিকল্পনা করে। তারা দীর্ঘদিন ধরে আমাদের পরিবারের ওপর হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল। আমাকে না পেয়ে তারা আমার পিতার কাছে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে হামলা চালায়।"

আমজাদ আরও জানান, জসিম উদ্দিন একজন কুখ্যাত ডাকাত, মাদক ব্যবসায়ী এবং জাল টাকার কারবারি হিসেবে এলাকায় পরিচিত। তার বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা ও ডাকাতির মামলা রয়েছে। শাহাব উদ্দিনও মাদক ও জুয়ার গডফাদার হিসেবে এলাকায় কুখ্যাত।

থানায় অভিযোগ ও পুলিশের পদক্ষেপ:

এ ঘটনায় পেকুয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পেকুয়া থানার তদন্ত কর্মকর্তা দুর্জয় বিশ্বাস বলেন, “ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা তদন্ত শুরু করেছি। অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।”

এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ:

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পেকুয়া এলাকায় এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সাধারণ মানুষ চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। সমাজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও তার স্বজনের ওপর এই নৃশংস হামলার ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা দ্রুত অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।

এ হামলার ঘটনায় পেকুয়ায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন বলে মনে করছেন স্থানীয় বিশ্লেষকরা।