সাইদ সাজু, তানোর থেকে:
রাজশাহীর তানোরে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ, হামলা, এবং ভাঙচুরের ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। শনিবার বিকেলে তানোর উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের ভবানীপুর মাদ্রাসা মাঠ ও মাদারীপুর বাজারে দফায় দফায় এ ঘটনা ঘটে। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলা এ সংঘর্ষে দুইটি দোকান ও দুইটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়।
আহতদের পরিচয় ও চিকিৎসা:
আহতদের মধ্যে আব্দুস সামাদ (৪৫), মতিউর রহমান (৪৮), ওবায়দুর রহমান (৫০), ফিরোজ মাহমুদ (৪৫), মাহাবুর রহমান (৩৮), এবং এখলাছুর রহমান (৫৩)-এর নাম জানা গেছে। অন্যদের পরিচয় এখনও নিশ্চিত করা যায়নি। আহতদের মধ্যে দুইজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে একজনকে এবং তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
সংঘর্ষের কারণ ও প্রেক্ষাপট:
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী সুলতানুল ইসলাম তারেক ভবানীপুর মাদ্রাসা মাঠে শীতার্তদের মধ্যে কম্বল বিতরণ এবং বিএনপির ৩১ দফা কর্মসূচির লিফলেট বিতরণের আয়োজন করেন। দুপুরে মাদ্রাসা মাঠে স্টেজ তৈরি করা হলে মেজর জেনারেল শরিফ উদ্দিন গ্রুপের নেতাকর্মীরা লাঠি ও পাইপ নিয়ে স্টেজের চেয়ার ও ব্যানার ভাঙচুর করে।
পরে মেজর জেনারেল শরিফ উদ্দিন গ্রুপ মাদারীপুর বাজারে অবস্থান নিলে সেখানে তারেক গ্রুপের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় তারেক গ্রুপের সদস্যরা খলিলের দোকান ও দুইটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে এবং তাকে লাঞ্ছিত করে।
অভিযোগ ও পুলিশের ভূমিকা:
সংঘর্ষের বিষয়ে সুলতানুল ইসলাম তারেক তানোর থানায় গিয়ে মৌখিকভাবে অভিযোগ জানালেও কোনো লিখিত অভিযোগ করেননি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংঘর্ষের সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও তারা রহস্যজনকভাবে নিরব ছিল।
তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান মিজান জানান, ভবানীপুর মাদ্রাসা মাঠে কম্বল বিতরণের বিষয়ে পুলিশ অবহিত ছিল এবং সেখানেও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। তবে এ ঘটনায় এখনও কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
পরিস্থিতির অবনতি:
সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের কারণে পুরো মাদারীপুর বাজার এলাকা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে এবং একসময় রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে তারেক গ্রুপের পক্ষ থেকে ভবানীপুর মাদ্রাসা মাঠে কম্বল বিতরণ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়।
No comments:
Post a Comment