সাইদ সাজু, তানোর থেকে:
রাজশাহীর তানোরে ভুয়া আলু বীজ সরবরাহের মাধ্যমে প্রতারণার শিকার হয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছেন ১০ জন প্রান্তিক আলু চাষি। প্রতারিত কৃষকরা অভিযোগ করতে গেলে রহস্যজনক কারণে তানোর থানা পুলিশ তাদের অভিযোগ গ্রহণ করেনি।
অসহায় এসব কৃষক গত ১ জানুয়ারি তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে প্রতিকার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে এখনো পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
প্রতারণার বিবরণ:
ভুক্তভোগী কৃষকরা জানান, চলতি মৌসুমে বীজ সংকট দেখা দিলে রাজশাহীর তানোর উপজেলার সরনজাই ইউনিয়নের মণ্ডলপাড়া ও ইটক্যালপাড়া গ্রামের সহজ-সরল কৃষকদের টার্গেট করে খাঁপাড়া গ্রামের শরিফুল ইসলাম মিঠু ও মৃত মুন্তাজ আলীর ছেলে মাইনুল ইসলাম। তারা দিনাজপুরের উন্নতমানের আলু বীজ বলে প্রতারণার মাধ্যমে ৯০ টাকা কেজি দামে ২৭ বিঘা জমির জন্য মোট ৭ হাজার ৫৬০ কেজি বীজ বিক্রি করেন। যার মূল্য ৬ লাখ ৮০ হাজার ৪০০ টাকা।
কৃষকরা জানান, ৩৯ দিন আগে রোপণ করা এই বীজ থেকে কোনো গাছ বের হয়নি। যেখানে কয়েকটি গাছ বের হয়েছে, সেখানেও ফলনের সম্ভাবনা নেই। একই সময় পার্শ্ববর্তী জমিতে রোপণ করা বীজ থেকে ভালো গাছের ফলন হয়েছে। এতে করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের স্বপ্ন ভেঙে গেছে।
অসহায় অবস্থায় কৃষকরা:
ভুক্তভোগী কৃষকরা জানান, তারা ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে জমিতে আলু চাষে বিনিয়োগ করেছিলেন। প্রতি বিঘায় ৭০-৮০ হাজার টাকা খরচ হলেও গাছ না হওয়ায় তাদের ঋণ পরিশোধ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তারা প্রতারকদের শাস্তি ও ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।
বীজ বিক্রেতার বক্তব্য:
বীজ বিক্রেতা শরিফুল ইসলাম মিঠু বলেন, “আমি নিজে দিনাজপুরে আলুর বীজ কিনতে গিয়েছিলাম। কৃষকরা আমাকে মোবাইলে যোগাযোগ করে নিজেরা দাম মিটিয়ে বীজ নিয়েছে। গাছ বের হয়নি, এতে আমার কিছু করার নেই।”
প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি:
তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসার খাইরুল ইসলাম জানান, “কৃষকদের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এ ঘটনায় এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
No comments:
Post a Comment