একুশে মিডিয়া:
আন্তঃদেশীয় লেনদেন নিষ্পত্তি ব্যবস্থার আওতায় এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) নভেম্বর-ডিসেম্বরের আমদানি বিল বাবদ ১৬৭ কোটি ডলার পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ। এর ফলে দেশের নিট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নেমে এসেছে ২০ বিলিয়ন ডলারে। তবে বৈদেশিক মুদ্রায় গঠিত বিভিন্ন তহবিলসহ গ্রস রিজার্ভ বর্তমানে ২৪ দশমিক ৯০ বিলিয়ন ডলার।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "আকুর আমদানি বিল পরিশোধের ফলে বৈদেশিক মুদ্রার প্রকৃত রিজার্ভে প্রভাব পড়েছে। বর্তমানে গ্রস রিজার্ভ ২৪ দশমিক ৯০ বিলিয়ন ডলার এবং আইএমএফের বিপিএম-৬ পদ্ধতি অনুযায়ী নিট রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারে রয়েছে।"
এর আগে গত সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সময়ের জন্য ১৫০ কোটি ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ নেমে এসেছিল ১৮ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলারে। গত সেপ্টেম্বরে ১৩৭ কোটি ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ ১৮ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলারে নেমেছিল। তবে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে রেমিট্যান্স ও রপ্তানির ইতিবাচক প্রবাহে রিজার্ভ কিছুটা বেড়ে ২১ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়।
রেমিট্যান্স ও রপ্তানির ইতিবাচক প্রভাব:
চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে রেকর্ড ১ হাজার ৩৭৮ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেশি। এ সময়ে রপ্তানি আয় ছিল ২ হাজার ৪৫৩ কোটি ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ১৩ শতাংশ বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংক বর্তমানে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি না করে বিশেষ ব্যবস্থায় আগের দায় পরিশোধ করছে। এছাড়া আমদানি ব্যয় বাড়েনি, মূলত অর্থপাচারে কড়াকড়ির কারণে।
রিজার্ভ হ্রাসের কারণ ও পূর্বের পরিপ্রেক্ষিত:
২০২১ সালের আগস্টে রিজার্ভের রেকর্ড ৪৮ বিলিয়ন ডলার থেকে বর্তমানে রিজার্ভের এই হ্রাসের মূল কারণ বৈদেশিক মুদ্রার বাজার স্থিতিশীল রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৩১ বিলিয়ন ডলার বিক্রি। এছাড়া ৮৪ টাকার ডলার বর্তমানে ১২৩ টাকায় উঠেছে, যার ফলে বিদেশি দেনা বকেয়া ছিল। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর পূর্বের বকেয়া ৩৩০ কোটি ডলারও পরিশোধ করা হয়েছে।
আকু হলো আন্তঃদেশীয় লেনদেন নিষ্পত্তি ব্যবস্থা, যার আওতায় প্রতি দুই মাস পর বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল এবং পাকিস্তানের মধ্যে দায় পরিশোধ হয়। অর্থনৈতিক সংকটের কারণে শ্রীলঙ্কা আকু থেকে বেরিয়ে গেছে।
সরকারের চলমান পদক্ষেপ ও রেমিট্যান্স-রপ্তানির ইতিবাচক প্রবাহ বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
No comments:
Post a Comment