একুশে মিডিয়া, ডেস্ক:
চট্টগ্রামের বাঁশখালীর বাসিন্দা আবদুর রহিম বাবুল (৪৫) পেশায় একজন টেইলার্স ব্যবসায়ী। তার স্ত্রী সাবিনা আক্তার বাসার কাছে গলির মুখে অবস্থিত "সাবিনা টেইলার্স" দোকানটি দেখভাল করেন। সংসার বেশ ভালোই চলছিল তাদের। বাবুলের একমাত্র সন্তান স্থানীয় মাদ্রাসার শিক্ষার্থী।
তিন মাস আগে শখের বসে একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা কিনেছিলেন বাবুল। যদিও তিনি রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন না, মাঝে মাঝে শখের বসে রিকশা নিয়ে বের হতেন। কিন্তু এই শখই তার জীবনে কাল হয়ে দাঁড়ায়।
গত শনিবার (১১ জানুয়ারি) রাতে রিকশা নিয়ে বের হওয়ার পর থেকে আর বাসায় ফেরেননি বাবুল। রবিবার সকালে চট্টগ্রাম নগরের খুলশী ঝাউতলা সেগুন বাগান এলাকায় তার হাত-পা বাঁধা এবং চোখে-মুখে টেপ মোড়ানো মরদেহ দেখতে পান পথচারীরা। খবর পেয়ে খুলশী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
স্ত্রীর বর্ণনায় বাবুলের শেষ সময়:
বাবুলের স্ত্রী সাবিনা জানান, শনিবার দুপুরে রিকশা নিয়ে বের হন বাবুল। বিকেলে বাসায় ফিরে এসেছিলেন। রাত ১২টার দিকে আবার রিকশা নিয়ে বের হন। এরপর রাতে আর বাসায় ফেরেননি। সকালে তার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজির পর চমেক মর্গে তার লাশের সন্ধান পাওয়া যায়।
প্রাথমিক তদন্ত:
খুলশী থানার উপপরিদর্শক মো. বেলাল খান জানান, "লাশ উদ্ধারের সময় মরদেহের হাত এবং গলা প্লাস্টিকের রশি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় ছিল। চোখ এবং মুখ টেপ মোড়ানো ছিল। তার ডান হাতে একটি লাল রঙের হাতমোজা ছিল, তবে বাঁ হাত খালি ছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, রিকশা ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে তাকে হত্যা করা হয়েছে।"
পুলিশ আরও জানায়, বাবুলের রিকশা এবং মুঠোফোন এখনো পাওয়া যায়নি। খুনিদের শনাক্ত করতে তদন্ত চলছে।
প্রতিবেশীর বক্তব্য:
বাবুলের প্রতিবেশী মোহাম্মদ দুলাল চৌধুরী বলেন, "চকবাজার থানার দেবপাহাড় ছয় নম্বর গলিতে বাবুল পরিবারসহ প্রায় ২৫ বছর ধরে বসবাস করছেন। গলির মুখে তাদের 'সাবিনা টেইলার্স' নামে একটি দোকান রয়েছে, যা মূলত তাদের পরিবারের জীবিকার প্রধান উৎস।"
এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বাবুলের মতো একজন সহজ-সরল মানুষ এমন নৃশংসতার শিকার হবেন, তা মেনে নিতে পারছেন না এলাকাবাসী। সূত্র- দৈনিক পূর্বকোণ অনলাইন।
No comments:
Post a Comment