একুশে মিডিয়া, ডেস্ক:
চাকরিতে অতিরিক্ত পরিশ্রম ও মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে শুক্লা দে টিকলি (৩৮) নামে এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী আত্মহত্যা করেছেন। শনিবার (৪ জানুয়ারি) রাতে চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের খরণদ্বীপ পাল পাড়ার নিজ বাড়ি থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। শুক্লা দে স্থানীয় সিদুল পালের স্ত্রী। তাদের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তিনি রুপসা সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেডে ফিল্ড অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
অভিযোগ:
পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, শুক্লাকে গত দুই মাস ধরে লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রচণ্ড চাপ দিচ্ছিলেন। তার বেতন কেটে নেওয়া এবং অফিসে ডেকে হেনস্তা করা হচ্ছিল।
শুক্লার স্বামী সিদুল পাল জানান, ২০২৩ সালের মে মাসে সংস্থাটির কানুনগোপাড়া শাখায় যোগ দেন শুক্লা। তিনি এলাকার মানুষের কাছ থেকে ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তি আদায়ের দায়িত্বে ছিলেন। তবে গত আগস্টের পর থেকে ঋণ গ্রহীতারা কিস্তি পরিশোধ না করায় শুক্লাকে সংস্থার ম্যানেজার কাঞ্চন দেবনাথ চাপ দিতে থাকেন।
পরবর্তীতে সংস্থা শুক্লার বেতন থেকে অনাদায়ী কিস্তির টাকা কেটে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সিদুল পাল আরও জানান, গত নভেম্বর মাসে শুক্লার ১৫ হাজার টাকা বেতনের মধ্যে ৭ হাজার টাকা দেওয়া হয় এবং ৬ হাজার টাকা কেটে রাখা হয়। পাশাপাশি শুক্লাকে পটিয়ার ধলঘাট এলাকায় বদলি করা হয়। নতুন কর্মস্থল সম্পর্কে কোনো ধারণা না থাকায় শুক্লা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।
ঘটনার বিবরণ:
শুক্লার স্বামী জানান, গত শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) রাতে শুক্লা তাকে জানায়, নতুন কর্মস্থলে যেতে তার মন সায় দিচ্ছে না। পরদিন সকাল পর্যন্ত তিনি কাজে যাননি এবং ঘরে থাকেন। রাতে রান্নাঘরে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন শুক্লা।
পুলিশের ভূমিকা:
খবর পেয়ে বোয়ালখালী থানা পুলিশ শুক্লার মরদেহ উদ্ধার করে। রোববার (৫ জানুয়ারি) সকালে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়।
বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সরোয়ার জানান, পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা নেওয়া হয়েছে এবং বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
No comments:
Post a Comment